গড ফাদার-গ্র্যান্ড ফাদার বলে কিছু নেই, আমরা অপরাধী চিনি

ডেস্ক রিপোর্ট • গড ফাদার-গ্র্যান্ড ফাদার বা রাঘব বোয়াল বলে আমাদের কাছে কিছু নেই’ জানিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, আমরা অপরাধী চিনি। অপরাধী যেই হোক, তাকে আমরা আইনের আওতায় নিয়ে আসবো।

মাদক ও ক্যাসিনোসহ অপকর্মের বিরুদ্ধে চলমান অভিযান নিয়ে সোমবার (২৩ সেপ্টেম্বর) সচিবালয়ে নিজ দপ্তরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি একথা বলেন।

অভিযানে রাজধানীসহ সারাদেশে আওয়ামী লীগ দলীয় নেতাসহ কয়েকজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এর পেছনে রাঘব বোয়ালেরাও রয়েছে বলে গণমাধ্যমের খবরে এসেছে।

এদের পেছনে বড় শক্তি আছে তাদের ধরবেন কিনা-এমন প্রশ্নের উত্তরে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান কামাল বলেন, অপকর্মের ধরণটির পেছনে অনেকে রাঘব বোয়াল আছে বলে সন্দেহ প্রকাশ করছেন, আমরা বলছি যেই অপকর্ম করছে তাকেই আইনের আওতায় নিয়ে আসছি। 

‘এখানে চুনোপুঁটি বা রাঘব বোয়াল বলে আমাদের কাছে কিছু নাই। রাঘব বোয়ালও যদি অপরাধ করে থাকে আমরা তাকেও ধরছি। আমাদের সংসদ সদস্যরাও বাদ যাচ্ছেন না, নির্বাচিত সংসদ সদস্যরাও সেই আইনের আওতায় চলে আসছেন। কাজেই রাঘব বোয়াল বলে আমাদের কাছে কিছু নেই।’

তিনি বলেন, অপরাধ যে-ই করবে আইনের চোখে সে অপরাধী, তাকে আমরা আইনের আওতায় নিয়ে আসবো। গড ফাদার-গ্র্যান্ড ফাদার- এগুলো আমাদের কাছে কিছু নেই। আমরা চিনি অপরাধী। অপরাধী যে-ই হোক তাকে আমরা আইনের আওতায় নিয়ে আসবো।

‘আমাদের এই অভিযানে কিছু টেন্ডারবাজের কথা আমাদের কানে আসছে। সেগুলো যারা করে তাদের তথ্য এসেছে সে অনুযায়ী আমাদের আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী কাজ শুরু করেছে। কে কোথায় আছেন সেটার চেয়ে বড় কথা হলো কে কতখানি অপরাধ করেছেন। যারাই অপরাধ করেছেন সে রাজনীতিবিদই হোক কিংবা যেই হোক তাকে আমরা চিহ্নিত করে আইনের আওতায় নিয়ে এসেছি এটাই সবচেয়ে বড় কথা। নাম ছাড়াও যারা আছেন তাদেরও আমরা নিয়ে আসছি।’

অনেকেই পালানোর চেষ্টা করছে, তাদের ধরতে রেড অ্যালার্ট জারি করেছেন কিনা-এমন প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, কেন আমরা রেড অ্যালার্ট জারি করব? এমন তো কিছু হয়নি যে রেড অ্যালার্ট জারি করতে হবে। 

‘বিমানবন্দর দিয়ে অপরাধীরা কখনই যেতে পারে না, আমাদের একটা তালিকা সেখানে থাকে। এটা চলমান প্রক্রিয়া, এটা সব সময়ই থাকে এবং সব সময়ই আছে।’

এই মুহূর্তে কোনো বিশেষ সতর্কতা আছে কিনা- জানতে চাইলে তিনি বলেন, এই মুহূর্তকে কেন্দ্র করে কোনো বিশেষ সতর্কতা নেই।

ক্যাসিনো মেশিন কীভাবে এলো- এ প্রসঙ্গে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী কামাল বলেন, ক্যাসিনো এখানে খেলছে কেন, সেটার জন্য অভিযান চলছে। কীভাবে, কী ডিক্লারেশন দিয়ে নিয়ে এসেছে এগুলো আমরা এখন দেখবো, তদন্তকারীরা দেখবে।

খেলাধুলার ক্ষেত্রে অস্থিরতা নেমে আসবে- এ নিয়ে তিনি বলেন, অবৈধ ব্যবসা ছাড়া কোনো বৈধগুলোতে অভিযান চলছে না। ক্যাসিনো-জুয়া খেলা অবৈধ খেলা; বৈধ খেলায় কেউ হানা দিবে না, আমার জানামতে দিচ্ছেও না।  

সরকারের জনপ্রিয়তার চেষ্টায় অভিযান পরিচালনা হচ্ছে বলে বিবিসি বাংলার এক প্রতিবেদনে বলা হয়। এ নিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আপনাদের কী মনে হয় যে, আমাদের প্রধানমন্ত্রীর জনপ্রিয়তার কোনো ঘাটতি ঘটেছে? আমি তো দেখি পাড়ায়-মহল্লায় থেকে শুরু করে প্রত্যন্ত অঞ্চলগুলোতেও মানুষ বিশ্বাস করেন- প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনাই কেবলমাত্র পারবেন আমরা যে হৃদয়ের বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখি সেই জায়গায় পৌঁছে দিতে।

প্রধানমন্ত্রীর জনপ্রিয়তার কোনো ঘাটতি নেই দাবি করে তিনি বলেন, উনি জনপ্রিয়তার জন্য নয়, সুশাসন প্রতিষ্ঠা করার জন্য আমাদের নির্দেশনা দিচ্ছেন। সুশাসন প্রতিষ্ঠা করা হলে আমরা মনে করি এ সমস্ত অবৈধ ব্যবসা বা কিংবা যারা অবৈধভাবে অন্যায় কিছু করতে চায় সেগুলোকে আমাদের দমন করতে হবে, সেজন্যই আমাদের এ প্রচেষ্টা চলছে। 

‘বিবিসি বাংলা যেটা বলেছে সেটা তাদের নিজস্ব ব্যাপার। আমরা মনে করি এর সত্যতা বলে কিছু নেই।’

অবৈধ ব্যবসা-চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে এতদিন পরে কেন অভিযান- এ প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, যখনই আমাদের নজরে আসছে তখনই আমরা ধরছি। দু’একদিনের মধ্যে হয়তো একজন-দু’জন উল্লেখযোগ্য আপনাদের চেখের সম্মুখে আসছে। এর আগে কিন্তু যাদের নামই এসেছে তাদের আমরা আইনের আওতায় নিয়ে এসেছি। আমরা কাউকে ছাড় দিচ্ছি না।

জেলা পর্যায়ে চলবে কিনা- এ বিষয়ে তিনি বলেন, কোনো জায়গায় সীমাবদ্ধ নেই। আমরা যেখানেই অপরাধী দেখবো তাকে ধরে নিয়ে আসবো।

আরও খবর