চকরিয়া সংবাদদাতা:
চকরিয়ায় ভাই বেরাদারের সাথে সম্পত্তির বিরোধে মা’কে মারধর করে দন্ত হানি করেছে আপন সন্তান। ভেঙে দেওয়া হয়েছে মা ঘুমানোর টিনের ঘেরাও দেয়া ঘরটি। আহত মা দিলুয়ারা বেগম (৬৫)কে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
শুক্রবার দিবাগত রাত ১২টার দিকে উপজেলার ডুলাহাজারা ইউনিয়নে ঘটেছে এ হৃদয়স্পর্শী ঘটনা।ঘটনা সুত্রে জানাগেছে, ডুলাহাজারা ৪নং ওয়ার্ড উলুবনিয়া গ্রামের মৃত নাগু মিয়ার পুত্র নুরুল আবছার তার ভাই বেরাদারের সাথে ভিটেমাটির বিষয় নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছিল। নুরুল আবছার চট্টগ্রাম শহরে চাকরি করেন। ইতিপূর্বে সেখান থেকে বাড়ি এসে নুরুল আবছার প্রায়সময় মা ও ভাইদের হুমকিধামকিসহ তাদের মামলায় জড়িয়ে জেলে ঢুকার হুমকি দিয়ে আসতো।
ঘটনারদিন দিবাগত-রাত বারটার দিকে নুরুল আবছারের নেতৃত্বে একদল অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী নিয়ে বাড়িতে আসেন। এসময় বাড়ির অন্যান্য সদস্যদের জিম্মি করে লম্বা দা দিয়ে বাড়ীতে মা থাকার টিনের বেড়াযুক্ত ঘরটি কেটে ছিন্নভিন্ন করে দেয়। উপুর্যুপরি হামলা চালিয়ে বাড়ির আসবাবপত্র ভাঙচুর করে। এসময় বড়ভাই রুবেলের আলমারি ভেঙ্গে সমস্ত প্রয়োজনীয় কাগজপত্র নিয়ে যায়। মা দিলুয়ারা বেগম তাদের বাধা প্রদান করতে গেলে তাকেও লাথি-ঘুষি মেরে শরীরে গুরুতর আহত করে।ছেলে নুরুল আবছার ও তার সাথে আসা সন্ত্রাসীদের আঘাতে মা দিলুআরা বেগমের মুখের উপরের চোয়ালের ডান পাশের একটি দাঁত ভেঙে যায়। পরে মধ্য রাতে ভাঙচুরের শব্দ শুনে আশেপাশের লোকজন এগিয়ে আসলে নুরুল আবছার ও সন্ত্রাসীরা পালিয়ে যায়।
হামলাকারীদের মধ্যে নুরুল আবছার ছাড়া কয়েকজনকে চকরিয়া উপজেলার পালাকাটা এলাকার বলে সনাক্ত করলেও অন্যান্যদের চিহ্নিত করা সম্ভব হয়নি বলে পরিবারের লোকজন জানান।
স্বজনরা রক্তাক্ত আহতাবস্থায় আহত দিলুয়ারাকে উদ্ধার করে চকরিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। সেখানে অবস্থা গুরুতর দেখে তাকে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে রেফার করেন কর্তব্যরত চিকিৎসক।
এ ঘটনার ব্যাপারে জানতে আহত দিলুয়ারা বেগমের সাথে মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে তিনি আহাজারি কন্ঠে জানান, ধারকর্জ করে বাড়ির বারান্দায় টিনের ঘেরাবেড়া দিয়ে থাকার একটি ঘর তৈরি করছিলেন। ঘটনার দিন গভীর রাতে তাকে ছেলে নুরুল আবছার ও তার সাথে আসা লোকজন উপর্যুপরি লাথি ঘুষি মারতে থাকে। একপর্যায়ে মুখের একটি দাঁত ভেঙ্গে গিয়ে মাটিতে পড়ে যায় এবং অপর দুটি দাঁতে গুরুতর আঘাতপ্রাপ্ত হয়। এ নিয়ে তিনি দেশবাসী ও প্রশাসনের কাছে বিচার দাবী করেন।
অভিযুক্ত ছেলে নুরুল আবছারের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, ভাঙচুর করা ঘরটি তার নিজের। এখানে মারধরের কোন ঘটনা ঘটেনি।
স্থানীয় মেম্বার জয়নাল আবেদীন সোনামিয়া জানান, ঘটনার সময় পুলিশের সাথে আসা লোকজন বাড়িতে ভাংচুর চালিয়েছে বলে শুনেছেন। এঘটনায় তাদের মাকে গুরুতর আঘাত করায় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে তা জানতে পারেন। তবে এ ব্যাপারে তাকে কেউ অভিযোগ করেননি।
প্রতিদিনের খবরগুলো আপনার ফেসবুক টাইমলাইনে পেতে নিচের লাইক অপশনে ক্লিক করুন-