শাহীন মাহমুদ রাসেল:
কক্সবাজার সদর উপজেলার অন্তর্গত পিএমখালী ইউনিয়নের ডিকপাড়া এলাকার ইয়াবা ডন নবিউল হক প্রকাশ ইয়াবা শেখ ও তার ছেলে ফরহাদ অধরা। নবিউল হক উত্তর ডিকপাড়ার সুলতান আহমদের পুত্র। শুধু ইয়াবা শেখ নবী ও তার ছেলে ফরহাদ নই ইয়াবা ব্যবসায় জড়িত রয়েছে তার স্ত্রী শাহিনা আকতারও। বর্তমান সরকারের মাদকের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স ঘোষনা ও প্রশাসনের জোর প্রচেষ্টা চলা সত্যেও এদের পুরা পরিবার নির্ভিঘ্নে এখনো ইয়াবা ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় সচেতন ব্যক্তিরা জানান , স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের তালিকা ভুক্ত আসামী হোয়াইক্যং এর খোরশেদ আলম আত্মগোপনে কয়েক বছর ধরে শেখ নবীর বাড়িতে রয়েছে। সেই সুবাধে ইয়াবার চালান খোরশেদ আলমের মাধ্যমে ডিকপাড়া পৌছলে শেখ নবী ও তার পুত্র ফরহাদ মা শাহিনা আক্তার মিলে বিভিন্ন যায়গায় সাপ্লাই দেই। এমনকি ছেলে ফরহাদ নিয়মিত ঢাকা বিমান যোগে যাতায়াত করে। ইয়াবা চালান সফল হওয়াই হোয়াইক্যংয়ের খোরশেদ আলম ফরহাদ কে ৩লাখ টাকা দামের বাইক ও উপহার দিয়েছে যা মোটর সাইকেল শো-রুমের চিত্র উপরোক্ত।
গত কোরবানী ঈদের পরে কক্সবাজার মডেল থানার এসআই কালাম আজাদ ডিকপাড়ায় অভিযান চালালে শেখ নবী তার মুদির দোকান হতে পালিয়ে যায়। এবং তার বাড়ির চতুর্পাশে সিসিটিভি ক্যামেরা থাকায় ফরহাদ ও শাহিনা আক্তার পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়েছিল। সদ্য জেল ফেরত একই এলাকার ইয়াবা ডন মমতাজ আহমদ ধলু তাদের ইয়াবা নিয়ে অনেকবার পুলিশ ও ডিবির হাতে ধরা ও খেয়েছেন। গত ১মাস আগে সে জেল থেকে বের হয়ে আবারো ইয়াবা ব্যবসা ও তার নির্মাণাধীন রাজ প্রাসাদের কাজ শুরু করেছে। কক্সবাজার সদর উপজেলার তালিকাভুক্ত ইয়াবা ব্যবসায়িদের তালিকায় মমতাজ আহমদ ধলু ও শেখ নবীর নাম থাকলেও নাম নেই তার পুত্র ফরহাদ ও তার মা শাহিনা আক্তারের। ইয়াবা শেখ নবীর ছেলে ফরহাদের বন্ধু সদ্য বহিষ্কার হওয়া পিএমখালী ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাধারন সম্পাদক নুরুল আবছার গত ২২ই এপ্রিল প্রেমিক যুগল ও ইয়াবা সহ পুলিশের হাতে গ্রেফতার হন চট্রগ্রাম। যা কালেরকন্ঠ পত্রিকার মারফত সারাদেশে ভাইরাল হয়েছিল। পরে জানা যায়, নুরুল আবছার ফরহাদের ইয়াবা ব্যবসার প্রধান সাপ্লাইয়ার। নুরুল আবছারের ছাত্রলীগ কমিটির কর্মী হিসেবে বিভিন্ন যায়গায় ফরহাদ পরিচয় দিয়ে বেড়ায়। অথচ উক্ত কমিটি হতে সদর উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সেক্রেটারীগন নুরুল আবছারকে অপরাধের দ্বায়ে বহিষ্কার করে দিয়েছেন। নুরুল আবছার গ্রেফতার হওয়ার পর কিছুদিন শেখ নবীর পুরা পরিবার আত্মগোপনে থাকলেও এখন ফের সক্রিয়। তাছাড়া ফরহাদের একি এলাকায় রয়েছে কিশোর গ্যাং। যাদের ভয়ে এলাকায় সম্মানিত ব্যক্তিরা প্রতিবাদ করতে পারেনা। কেউ প্রতিবাদ করলে ফেসবুকে ভুয়া আইডি খুলে ও ফরহাদের আইডি হতে সম্মানহানিকর মন্তব্য লিখে স্টাটাস দেই। সেই ভয়ে স্থানীয়রা প্রতিবাদ করতে নারাজ।
সদর উপজেলা ছাত্রলীগের সিনিয়র এক নেতা জানান, আকাশ যেমন পরিষ্কার তারা ইয়াবা ব্যবসা করে টিক তেমনটা পরিষ্কার। আমার কোন ছাত্রলীগের কমিটিতে ফরহাদ নেই। ইয়াবা ব্যবসার সাথে সংশ্লিষ্ট কেউ আমার কমিটিতে নাই।
হোয়াইক্যং এলাকার বেশ কয়েকজন সচেতন ব্যক্তির সাথে কথা বলে জানা যায়, খোরশেদ আলম ইয়াবা তালিকায় নাম থাকার কারনে এলাকা ছাড়া হয়েছে দীর্ঘ ৩ বছর।মাঝে মধ্যে গ্রামে আসলে আমরা জিজ্ঞেস করলে বলে ঢাকা চাকরী করে। সত্যিকার অর্থে খোরশেদ আলম পিএমখালীর ডিকপাড়ায় শেখ নবীর বাড়িতে শাহিনা আক্তারকে বোন পরিচয় দিয়ে আত্মগোপনে রয়েছে। ডিকপাড়া এলাকায় বিভিন্ন অনুষ্ঠানে প্রথম সারিতে দেখা যাচ্ছে অনেকদিন ধরে খোরশেদ আলমকে।
এই ব্যাপারে পিএমখালী ইউনিয়নের ৫ নং ওয়ার্ডের নির্বাচিত মেম্বার নুরুল হুদা জানান, আমার বাড়ি ডিকপাড়া হতে ৫ কিলোমিটার দূরত্বে হওয়াই আমি এ বিষয়ে জানিনা। তবে এদের বিরুদ্ধে অভিযোগ শুনে আসতেছি অনেক দিন ধরে। সুষ্টু প্রমানের ভিত্তিতে অপরাধী যে হউক তাকে আইনের আওতায় আনা হউক এবং আমার ইউনিয়ন ইয়াবা মুক্ত হউক।
এ ব্যাপারে জানতে নবিউল হককে তার ব্যবহত বেশ কয়েকটি নাম্বারে যোগাযোগ করা হয়েছে কিন্তু একটাতেও ফোন রিসিভ করেনা। শেষমেষ আরেকটি নাম্বারে তাকে পাওয়া গেছে এবং ইয়াবা ব্যবসার ব্যাপারে জনাতে চাইলে তিনি অস্বীকার করেন। এবং হায়াইক্যংয়ের খোরশেদ আলম তাদের বাড়িতে লজিং আছে বলে দাবি করেন। তার ছেলের বিমান যোগে আসা যাওয়া ও ৩লাখ টাকা দামের মোটরসাইকেল ব্যবহারের বিষয়ে জিজ্ঞেস করলে তিনি ফোন কেটে দেন।
প্রতিদিনের খবরগুলো আপনার ফেসবুক টাইমলাইনে পেতে নিচের লাইক অপশনে ক্লিক করুন-