নিজস্ব প্রতিবেদক :
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগ কক্সবাজার জেলা শাখার সম্মেলনের তারিখ ঘোষণা হয়েছে। আগামী ২০ সেপ্টেম্বর সামনে রেখে সংগঠনটির সম্মেলনের প্রস্তুতি চলছে। এ নিয়ে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের মধ্যেও উত্তাপ বিরাজ করছে। শুরু হয়েছে পদ প্রত্যাশীদের অনেকের দৌড়ঝাপ। সেই সঙ্গে বহু আন্দোলন সংগ্রামের নেতৃত্বে থাকা সংগঠনটির শীর্ষ পদে কারা আসতে পারেন- তা নিয়েও চলছে নানা আলোচনা। ইতিমধ্যে নেতৃত্বে তারুণ্য বিবেচনায় মুক্তিযোদ্ধা পরিবার থেকে আলোচনায় এসেছেন সদর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পদক- মুন্না চৌধুরীর নাম শোনা যাচ্ছে।
ছাত্রলীগের বিভিন্ন সূত্র থেকে জানা যায়, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ একটি ঐতিহ্যবাহী ছাত্রসংগঠন। স্বাধীনতার পর বিগত চার দশকে সংগঠনটি সেই ভাবমূর্তি হারিয়েছে। অন্তর্কোন্দল আর ব্যক্তিত্বের সংঘাতে অনেকবার পথহারা হয়েছে। নিজেদের মধ্যেই সংঘর্ষে লিপ্ত। আবার অভ্যন্তরীণ ভিন্নমতের ওপর খড়গহস্ত হয়ে রক্ষণশীলতা ও সঙ্কীর্ণতার পরিচয় দিয়েছে। গণতান্ত্রিক চেতনাকে উপেক্ষা করেছে। এসব কিছুর পরও গঠনতন্ত্র অনুসারে নেতৃত্ব নির্বাচনে নিয়মিত কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ দু’জন নেতা নির্বাচন করে দায়িত্ব হস্তান্তরের ধারাবাহিকতা বজায় রাখে। যদিও সে ধারাবাহিকতা প্রায়িই ব্যাহত হয়েছে। তাই এবার কক্সবাজার জেলা ছাত্রলীগের নতুন নেতৃত্ব ক্লিন ইমেজের এবং ব্যতিক্রম হবে বলে ইঙ্গিত দিয়েছে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ।
ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, সাধারণ সম্পাদক হওয়ার দৌঁড়ে অন্যান্যদের চাইতে মুন্না চৌধুরী এগিয়ে আছেন বলেও জানান সংগঠনটির বেশ কয়েকজন নেতা কর্মী। তারা জানান, যেহেতু মাঠের কর্মীদেরকেই মূল্যায়ন করার বিষয়টি বারবার আলোচনায় আসছে, সে হিসেবে মুন্নার অবস্থান অন্যদের চাইতে ভালো। গত কয়েক বছর ধরে ছাত্রলীগের সব আন্দোলন সংগ্রামে মুন্নার সরব উপস্থিতি যেমন ছিলো, তেমনি সাংগঠনিক যোগ্যতার দিক থেকেই তিনি সবার চাইতে এগিয়ে আছেন।
এদিকে অন্য একটি সূত্র থেকে জানা যায়, কক্সবাজারের ইতিহাসে ছাত্রলীগের শীর্ষ নেতৃত্বে মুক্তিযোদ্ধা পরিবার থেকে কেউ আসেনি। অথচ কক্সবাজারসহ সারাদেশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ও অবস্থান তূলনামূলক শক্তিশালী। তাছাড়া কেন্দ্রীয় নেতা নির্বাচনেও মুক্তিযোদ্ধা পরিবারকে প্রধান্য দিয়েছে শেখ হাসিনা। সেই দিক বিবেচনা করে মুক্তিযোদ্ধা পরিবার থেকে এবার শীর্ষ নেতৃত্ব পাওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি। আর মুক্তিযোদ্ধা পরিবার প্রসঙ্গ এলে মুন্না চৌধুরীর চাইতে সক্রিয় কেউ নেই বলেও সূত্রটি দাবি করে।
এছাড়াও মুন্না চৌধুরী ছাত্রলীগের ডাকে সব ধরণের আন্দোলনে জীবন বাজি রেখে অংশগ্রহণের বিষয়টি উল্লেখ করেন কোনো কোনো নেতা। ২০১৩ সালে হেফাজতের তাণ্ডবের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়া, বিএনপি-জামায়াতের সরকার বিরোধী হরতাল, অবরোধ ও ধর্মঘট প্রতিহত করে মানুষের জানমাল রক্ষায় মুন্নার সাহসী ভূমিকার কথাও তুলে ধরেন তারা।
পাশাপাশি ২০১৪ সালে বিএনপি জামায়াতের ডাকা অবরোধের বিরুদ্ধে রাজপথে সক্রিয় অংশগ্রহণ, জাতীয় নির্বাচন, উপজেলা নির্বাচন, পৌর ননির্বাচনসহ সব ধরনের নানা কর্মসূচি বাস্তবায়নে তার অগ্রণী ভূমিকারও প্রশংসা করেন ছাত্রলীগের নেতা কর্মীরা।
প্রসঙ্গত, সত্তর দশকের সাবেক ছাত্রলীগ নেতা, সদর উপজেলা আ.লীগের কাউন্সিলে পরপর ৩ বারের নির্বাচিত সাবেক সভাপতি ও কক্সবাজার জেলা আ.লীগের উপদেষ্টা বীর মুক্তিযোদ্ধা মনিরুল আলম চৌধুরীর ছেলে মুন্না চৌধুরী ছোটবেলা থেকেই বঙ্গবন্ধুর আদর্শে নিজেকে গড়ে তুলেন। খরুলিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার পরেই জড়িয়ে পড়েন ছাত্রলীগের সক্রিয় রাজনীতিতে। দীর্ঘ এই ছাত্র রাজনীতির যাত্রায় তিনি বাংলাবাজার সাংগঠনিক শাখার সাধারণ সম্পাদক পরবর্তীতে সভাপতি, কক্সবাজার সরকারি কলেজ ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক, সদর ছাত্রলীগের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ও পরবর্তীতে সাধারণ সম্পাদের দায়িত্ব পালন করে আসছেন তিনি।
নেতৃত্বের আলোচনায় এগিয়ে থাকা প্রসঙ্গে মুন্নার কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি একজন আওয়ামী পরিবারের সন্তান, আমার ৫ ভাইকে সদর ও জেলা ছাত্রলীগের নেতৃত্ব দিতে খুব কাছ থেকে দেখেছি। বর্তমানে তারা আ.লীগসহ বিভিন্ন অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের দায়িত্বে রয়েছে। ছাত্রলীগ করি বঙ্গবন্ধু আদর্শ ও চেতনা বাস্তবায়নের জন্য। নিজস্ব কোনো উদ্দেশ্য হাসিলের জন্য এ সংগঠন করি না। ফলে সব সময়ই রাজপথে আমার অবস্থান ছিলো। যেহেতু এ সংগঠনকে মন প্রাণ দিয়ে ভালোবাসি, তাই আমি চাই এ সংগঠনের গুরুত্বপূর্ণ কোনো দায়িত্ব পালনের মধ্য দিয়ে সংগঠনকে আরও আদর্শ ও গতিশীল করে তুলতে। তবে এ বিষয়ে সব সিদ্ধান্ত নিবেন কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ। তারা যদি আমাকে দায়িত্ব দেন, তাহলে আমি আমার সবকিছুর বিনিময়ে ছাত্রলীগের মর্যাদা ও সুনাম অক্ষুন্ন রাখতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
সদর ও জেলা ছাত্রলীগের কর্মীরা বলেন, মুন্নার মত ত্যাগী ও নিষ্ঠাবান ছাত্রনেতা ২য় একজন হয় না, কেবল মাত্র তার হাতেই কক্সবাজার জেলা ছাত্রলীগ পরিচ্ছন্ন ও নিরাপদ থাকবে বলে বিশ্বাস। তারা আরও বলেন, ভাইয়ের নেতৃত্ব খুব কাছ থেকে দেখেছি, তার প্রগতিশীল ও সৃজনশীল চিন্তাধারাই পারে জেলা ছাত্রলীগকে এক নতুন ধারায় সাজাতে।
প্রতিদিনের খবরগুলো আপনার ফেসবুক টাইমলাইনে পেতে নিচের লাইক অপশনে ক্লিক করুন-