রোহিঙ্গা ক্যাম্পে বেড়া: একমত সশস্ত্র বাহিনী-সংসদীয় কমিটি

ডেস্ক রিপোর্ট – নিরাপত্তার জন্য রোহিঙ্গা ক্যাম্পের চারদিকে কাঁটাতারের বেড়া বা সীমানাপ্রাচীর নির্মাণ চায় সশস্ত্র বাহিনী। প্রতিরক্ষা বিষয়ক সংসদীয় কমিটিও ক্যাম্প এলাকার নিরাপত্তার ওপর জোর দিয়ে প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করেছে।

বুধবার (৪ সেপ্টেম্বর) সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত সংসদীয় কমিটির বৈঠকে রোহিঙ্গা এলাকার নিরাপত্তা নিয়ে আলোচনা হয়।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে কমিটির সদস্য মুহাম্মদ ফারুক খান বলেন, ‘আমরা দেখতে পেয়েছি অনেক রোহিঙ্গা সেখান থেকে বেরিয়ে এদিক-সেদিক যাচ্ছে। এজন্য আমরা সেখানকার নিরাপত্তা নিশ্চিত করার সুপারিশ করেছি। কেউ যেন ক্যাম্প থেকে বের হতে না পারে, আবার কেউ যেন ক্যাম্পে ঢুকতে না পারে—সেটা দেখতে বলেছি। নিরাপত্তা যথাযথভাবে দিতে বলেছি।’

বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, বৈঠকে রোহিঙ্গা ক্যাম্প এলাকায় সেনাবাহিনীর কার্যক্রম নিয়ে একটি প্রতিবেদন উপস্থাপন করা হয়।

এতে বলা হয়, সেনাবাহিনী ৭টি ক্যাম্পের মাধ্যমে ওই এলাকায় অসামরিক প্রশাসনকে সহায়তা দিয়ে আসছে। বাস্তুচ্যুত মিয়ানমার নাগরিকদের ক্যাম্প এলাকায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করার লক্ষ্যে অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী প্রতিদিন ২১টি যৌথ টহলের মাধ্যমে নিরাপত্তা নিশ্চিত করে আসছে।
প্রতিবেদনে সুপারিশ করা হয়েছে, বর্তমানে সার্বিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা স্থিতিশীল থাকলেও পাহাড়ি এলাকায় কাঁটাতারের বেড়া না থাকায় রোহিঙ্গারা ক্যাম্প ছেড়ে সারাদেশে ছড়িয়ে পড়তে পারে। এজন্য ক্যাম্প এলাকায় উপযুক্ত কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে কাঁটাতারের বেড়া বা সীমানাপ্রাচীর নির্মাণ করা জরুরি।

এদিকে কমিটির আগের বৈঠকের কার্যবিবরণী থেকে জানা গেছে, ওই বৈঠকে রোহিঙ্গা ক্যাম্প এলাকার বাইরে দেশব্যাপী যেন ছড়িয়ে পড়তে না পারে, সে বিষয়ে প্রয়োজনে যৌথ টহলের ব্যবস্থাসহ সশস্ত্র বাহিনীকে সতর্ক থাকার সুপারিশ করা হয়।

বৈঠকে সশস্ত্র বাহিনীর প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার (পিএসও) লে. জেনারেল মো. মাহফুজুর রহমান রোহিঙ্গা ইস্যুতে বলেন, রোহিঙ্গা শুধু বাংলাদেশ নয়, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার জন্য হুমকি। রোহিঙ্গা ক্যাম্প এলাকায় ১২-১৭ বছরের শিশু রয়েছে প্রায় ৪ লাখ। এরা কোনও ধরনের শিক্ষা না পাওয়ায় ভয়াবহ পরিণতির দিকে যাচ্ছে। এরা সুযোগ পেলে সারাদেশে ছড়িয়ে পড়ার চেষ্টা করবে। বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসী সংগঠনও তাদের কাজে লাগানোর চেষ্টা করবে বলে তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করেন।
এদিকে, সংসদ সচিবালয়ের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, বৈঠকে কক্সবাজার খুরুশকুল আশ্রয়ণ প্রকল্পের কাজের মান বৃদ্ধি ও সঠিক সময়ে সম্পাদন করার সুপারিশ করা হয়। বৈঠকে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে সশস্ত্র বাহিনীর অংশগ্রহণ বিষয়ে আলোচনা করা হয়। জানানো হয়, বর্তমানে শান্তিরক্ষী পাঠানোর দিক থেকে বাংলাদেশ তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে। ৭টি দেশের ৯টি শান্তিরক্ষা মিশনে ৫ হাজার ৮৫৬ জন সদস্য শান্তিরক্ষার কাজে নিয়োজিত রয়েছে।

কমিটির সভাপতি মোহাম্মদ সুবিদ আলী ভূঁইয়ার সভাপতিত্বে কমিটির সদস্য মুহাম্মদ ফারুক খান, মো. ইলিয়াস উদ্দিন মোল্লাহ্, মো. মোতাহার হোসেন, মো. মহিববুর রহমান ও নাহিদ ইজাহার খান বৈঠকে অংশ নেন।

আরও খবর