গিয়াস উদ্দিন ভুলু,কক্সবাজার জার্নাল
টেকনাফে আটক রোহিঙ্গা উগ্রপন্থী সংগঠনের স্বঘোষিত নেতা, পাহাড়ী জনপদের ত্রাস, রোহিঙ্গা সন্ত্রাসী ও ইয়াবা গডফাদার নুর মোহাম্মদকে নিয়ে বন্য আস্তানায় অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার অভিযানে বন্দুকযুদ্ধের ঘটনা ঘটেছে। এতে ওসি তদন্তসহ ৩জন পুলিশ আহত হলেও ঘটনাস্থল হতে বিপূল পরিমাণ অবৈধ অস্ত্রসহ গুলিবিদ্ধ নুর মোহাম্মদকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
পুলিশ সূত্র জানা যায়,১লা সেপ্টেম্বর (রবিবার) ভোর সাড়ে ৫টার দিকে টেকনাফ মডেল থানার ওসি (তদন্ত) এবিএমএস দোহার নেতৃত্বে বিশেষ পুলিশের দল ধৃত মৃত রোহিঙ্গা কালা মিয়ার পুত্র দূধর্ষ সন্ত্রাসী নুর মোহাম্মদ (৩৪) কে নিয়ে উপজেলার হ্নীলা জাদিমোরা ২৭নং ক্যাম্পের তার বাড়ি সংলগ্ন পাহাড়ী এলাকায় গোপন স্থানে লুকিয়ে রাখা অবৈধ অস্ত্রের ভান্ডার উদ্ধার করার জন্য অভিযানে যায়। এসময় রোহিঙ্গা উগ্রপন্থী সংগঠন এবং মাদক কারবারী সিন্ডিকেটের স্বশস্ত্র সদস্যরা এলোপাতাড়ি গুলিবর্ষণ শুরু করে ডাকাত নুর মোহাম্মদকে ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে। এতে থানা পুলিশের ওসি (তদন্ত) এবি এম এস দোহা (৩৬), কনস্টেবল আশেদুল (২১), অন্তর চৌধুরী (২১) গুরুতর আহত হয়।
এরপর পুলিশও আত্মরক্ষার্থে আধ ঘন্টাব্যাপী ৪০/৫০ রাউন্ড পাল্টা গুলিবর্ষণ করে অবশেষে হামলাকারীরা গহীন পাহাড়ের দিকে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়। কিছুক্ষণ পর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে এলে ঘটনাস্থল তল্লাশী করে দেশীয় তৈরী ৪টি এলজি, ১টি থ্রি কোয়াটার,১৮ রাউন্ড গুলি,২০ রাউন্ড খালি খোসা উদ্ধার করতে সক্ষম হয় পুলিশ।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে টেকনাফ মডেল থানা পুলিশের অফিসার্স ইনচার্জ প্রদীপ কুমার দাশ কক্সবাজার জার্নালকে জানান, মোস্ট ওয়ানন্টেড একাধিক মামলার পলাতক আসামী ও যুবলীগ নেতা ওমর হত্যা মামলার প্রধান আসামী নুর মোহাম্মদকে নিয়ে আস্তানায় অভিযানে গেলে। উৎপেতে থাকা তার বাহিনীর সদস্যদের ছোঁড়া গুলিতে থানা পুলিশের (ওসি) (তদন্ত) এবি এম এস দোহাসহ ৩ পুলিশ সদস্য আহত হয়। এরপর পুলিশও আত্মরক্ষার্থে পাল্টা গুলিবর্ষণ করে।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আসার পর গুলিবিদ্ধ নুর মোহাম্মদকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সে মারা যায়। মৃতদেহটির ময়না তদন্ত রিপোর্ট তৈরী করার জন্য মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে বলে জানান তিনি।
এদিকে এই কুখ্যাত সন্ত্রাসী, মাদক কারবারী ও রোহিঙ্গা উগ্রপন্থী সংগঠনের স্বঘোষিত নেতা বন্দুকযুদ্ধের পর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যাওয়ায় এলাকাবাসী ও সাধারন রোহিঙ্গাদের মাঝে ছড়িয়ে পড়েছে আনন্দ। অনেকে মিষ্টি বিতরন শুরু করেছে।
এদিকে দীর্ঘদিন পর হলেও এই রোহিঙ্গা দূধর্ষ সন্ত্রাসীকে আইনের আওতায় নিয়ে আসায় সর্বস্তরের জনসাধারণের মনে পুলিশ সম্পর্কে থাকা ভুলে ভরা ভ্রান্ত ধারণা পাল্টে গেছে। টেকনাফে মানুষের মনে নতুন করে আস্থা অর্জন করছে ওসি প্রদীপ ও অত্র থানার পুলিশ সদস্যরা।
প্রতিদিনের খবরগুলো আপনার ফেসবুক টাইমলাইনে পেতে নিচের লাইক অপশনে ক্লিক করুন-