সন্ত্রাস দমন ও নিরাপত্তা জোরদারে রোহিঙ্গা শিবিরে তৈরী হচ্ছে ‘৩টি পুলিশ ক্যাম্প’

গিয়াস উদ্দিন ভুলু,কক্সবাজার জার্নাল

টেকনাফে রোহিঙ্গা ক্যাম্পের নিরাপত্তা জোরদার ও সন্ত্রাসীদের দমন করতে তিনটি পুলিশ ক্যাম্প স্থাপন করার প্রস্তুতি চলছে।

জানা যায়,২৯ আগস্ট দুপুরে জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ ইকবাল হোসেনের নেতৃত্বে একটি টিম টেকনাফের জাদিমুরা, শালবাগান, নয়াপাড়া, আলীখালী ও লেদা রোহিঙ্গা ক্যাম্প গুলো একের পর এক ঘুরে দেখেছেন। পাশাপাশি ২২ আগস্ট রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীদের’ গুলিতে নিহত হওয়া যুবলীগ নেতা ওমর ফারুক হত্যার ঘটনাস্থলও পরিদর্শন করেছেন এবং হত্যাকারীদের বিষয়ে খোঁজ খবর নেন।

এ সময় তার সঙ্গী হিসাবে ছিলেন শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনারের প্রতিনিধি, টেকনাফ জাদিমুরা শালবাগান রোহিঙ্গা ক্যাম্পের ইনচার্জ মোহাম্মদ খালেদ হোসেন,জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক হাইকমিশনার (ইউএনএইচসিআর) কক্সবাজার সিনিয়র লিয়াজো অফিসার মোহাম্মদ বায়েজিদ ও টেকনাফ মডেল থানার ওসি (তদন্ত) এবিএমএস দোহা।

পরিদর্শনকালে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ ইকবাল হোসেন বলেন,রোহিঙ্গাদের জানমাল রক্ষা করা নিরাপত্তা ও বিভিন্ন অপরাধ দমনসহ আইন-শৃংখলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখার জন্য পাঁচ রোহিঙ্গা শিবিরে পুলিশ ক্যাম্প স্থাপনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। টেকনাফের জাদিমুরা, শালবাগান, নয়াপাড়া, আলীখালী ও লেদা রোহিঙ্গা শিবির গুলো পরিদর্শন করেছেন। এসব রোহিঙ্গা শিবির গুলোতে তিনটি পুলিশ ক্যাম্প স্থাপনের জায়গা নির্ধারণ করা হচ্ছে।

রোহিঙ্গাদের নিরাপত্তায় টেকনাফে তিন পুলিশ ক্যাম্প স্থাপনের প্রস্তুতি পুলিশের এই কর্মকর্তা বলেন, ‘অতি দ্রুত রোহিঙ্গা ক্যাম্পে পুলিশ ক্যাম্প স্থাপনের কার্যক্রম শুরু হবে। এত অল্প সময়ে বিশ্বের কোনো দেশ এত আশ্রয়হীন মানুষকে আশ্রয় দেয়নি। মানবিক দিক বিবেচনা করে তাদের আশ্রয় ও নানামুখি সেবা দিয়েছি। যেকোনো কিছুর বিনিময়ে রোহিঙ্গা শিবিরের পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখার জন্য আইন-শৃংখলা বাহিনীর চেষ্টা অব্যাহত থাকবে।পাশাপাশি যুবলীগ নেতা ওমর ফারুক হত্যাকারীদের গ্রেফতার করে দ্রুত বিচারের আওয়তাই আনা হবে।

শরণার্থী ত্রাণ,প্রত্যাবাসন কমিশনারের প্রতিনিধি ও টেকনাফের জাদিমুরা শালবাগান রোহিঙ্গা ক্যাম্পের ইনচার্জ মোহাম্মদ খালেদ হোসেন জানান, রোহিঙ্গা শিবিরে নিরাপত্তা জোরদার করার লক্ষ্যে অত্র ক্যাম্প এলাকায় কয়েকটি পুলিশ ক্যাম্প স্থাপন করার প্রস্তুতি নিয়েছে সরকার।

গত ২২ আগস্ট রাতে টেকনাফ উপজেলায় রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীদের’ গুলিতে যুবলীগ নেতা ওমর ফারুককে গুলি করে হত্যার ঘটনায় স্থানীয় ও রোহিঙ্গাদের মধ্যে চরম উত্তেজনা বিরাজ করে আসছে। অনুসন্ধানে দেখা যায়, উক্ত ঘটনার পর থেকে বেশ কয়েকটি রোহিঙ্গা ক্যাম্পে সার্বিক নিরাপত্তা ভয়ে এনজিওদের কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়। সেই সূত্র ধরে অপরাধ দমন ও স্থানীয় জনগোষ্টির নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করার জন্য ৫টি রোহিঙ্গা শিবিরে ৩টি পুলিশ ক্যাম্প স্থাপন করার প্রক্রিয়া হাতে নিয়েছে সরকার।

টেকনাফ উপজেলার সচেতন মহলের দাবি পুলিশ ক্যাম্প তৈরী করার পাশাপাশি রোহিঙ্গাদের সু-শৃংখল ভাবে রাখার জন্য দ্রুত ক্যাম্প গুলোর চারি পাশে সীমানা প্রাচীর নির্মাণ করতে হবে। এদিকে টেকনাফের জাদিমুরা,শালবাগান,লেদা, নয়াপাড়া ও আলীখালী রোহিঙ্গা ক্যাম্পে বসবাসরত অসাধু রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীদের অপরাধ কর্মকান্ড দিনের পর দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। এতে অত্র ক্যাম্পগুলোর আশে পাশে থাকা সাধারণ মানুষ গুলো চরম নিরাপত্তাহীনতায় দিন কাটাচ্ছে।

আরও খবর