বিডি প্রতিদিন •
ইয়াবাসহ মাদক ব্যবসায়ীদের সমন্বিত একটি তালিকা তৈরির কাজ শুরু করেছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগ। আগের তালিকা (মাদক কারবারিদের বিদ্যমান তালিকা) ত্রুটিপূর্ণ হওয়ায় ও সেটি নিয়ে বিভিন্ন মহল থেকে প্রশ্ন ওঠায় এবং ওই তালিকায় থাকা অনেকের নাম সম্পর্কে আপত্তি থাকায় নতুন করে তালিকা তৈরির কাজে হাত দিল স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। প্রাথমিক অবস্থায় থাকা এই তালিকা তৈরির কাজে সহায়তার জন্য ইতিমধ্যে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) ও মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর তাদের তৈরি করা তালিকা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে জমা দিয়েছে। তবে পুলিশ র্যাবসহ সরকারের অন্য গোয়েন্দা সংস্থাগুলো তাদের তালিকা এখনো স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে জমা দেয়নি।
এদিকে বাংলাদেশ ব্যাংক ইয়াবাসহ মাদক ব্যবসায়ীদের ব্যাংক হিসাবে নজরদারি বাড়ানোর জন্য মাদক কারবারিদের তালিকা চেয়ে সম্প্রতি চিঠি দিয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে। মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগ সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
সুরক্ষা সেবা বিভাগ সূত্র জানায়, পুলিশ, র্যাব, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর ও বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ-বিজিবিসহ আইন প্রয়োগকারী বিভিন্ন বাহিনী ও গোয়েন্দা সংস্থা বিভিন্ন সময় পৃথক তালিকা তৈরি করে।
এই তালিকা ধরে অভিযান চালাতে গিয়ে অনাকাক্সিক্ষত এবং জনমনে প্রশ্ন ও সন্দেহ তৈরি হয় এমন ঘটনাও ঘটছে। যা নিয়ে বিভিন্ন সময় বিতর্ক হয়েছে। এ তালিকা সরকারের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এবং সংস্থাগুলোর কার্যক্রমকে প্রশ্নের মুখে ফেলেছে। যা নিয়ে বিভিন্ন সময়ে সরকারকে বিব্রতকর অবস্থায় পড়তে হয়েছে। এ অবস্থায় প্রকৃত মাদক কারবারিদের নাম-ঠিকানাসহ যাবতীয় তথ্য নিয়ে তাদের একটি সমন্বিত তালিকার বিষয়টি বেশ কিছু দিন ধরে আলোচনা হচ্ছিল।
এরই পরিপ্রেক্ষিতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সুরক্ষা সেবা বিভাগ নতুন করে মাদক কারবারিদের একটি সমন্বিত ও নির্ভুল তালিকা তৈরির কাজ শুরু করেছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন, বিভিন্ন সময়ে দেখা গেছে মাদক কারবারিদের তালিকা তৈরি করতে গিয়ে একাধিক সংস্থা ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মনগড়া নাম নিজ নিজ তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করেছে। আবার একটি সংস্থা যদি তাদের তালিকায় এলাকার চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ীর নাম অন্তর্ভুক্ত করে তো অন্য সংস্থা বিশেষ সুবিধা নিয়ে ওই মাদক ব্যবসায়ীর নাম তালিকার বাইরে রেখেছে এমন অনেক উদাহরণ তাদের হাতে রয়েছে। উদাহরণ তুলে ধরতে গিয়ে ওই কর্মকর্তা বলেন, কক্সবাজার এলাকার বাসিন্দা মোহাম্মদ ইয়াহিয়া। বিভিন্ন আইন প্রয়োগকারী সংস্থা ও গোয়েন্দা সংস্থার তালিকায় মাদকের গডফাদার হিসেবে তার নাম রয়েছে।
কিন্তু মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের তালিকায় তার নাম নেই। গত বছরের শেষ দিকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগ ইয়াহিয়া সম্পর্কে জানতে একটি চিঠি দেয়। এর ভিত্তিতে সম্প্রতি একটি প্রতিবেদন মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের চট্টগ্রাম বিভাগীয় কার্যালয় থেকে হেড অফিসে পাঠানো হয়। ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর, বিভিন্ন আইনপ্রয়োগকারী সংস্থা এবং বিভিন্ন গোয়েন্দা বিভাগ কক্সবাজার জেলার মাদক তথা ইয়াবা ব্যবসায়ী ও চোরাকারবারিদের পৃষ্ঠপোষক ও আশ্রয়দাতার তালিকা তৈরি করে। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের আওতাধীন কক্সবাজারের তৈরি করা তালিকায় মোহাম্মদ ইয়াহিয়ার নাম নেই। এদিকে বাংলাদেশ ব্যাংকও মাদক কারবারিদের একটি তালিকা চেয়ে সম্প্রতি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠিয়েছে। যাতে তালিকা ধরে ওই কারবারিদের আর্থিক লেনদেনের বিষয়টি সহজে দেখভাল করা যায়। কিন্তু স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে জমা থাকা তালিকায় কিছু ভুলভ্রান্তি থাকায় তারা বিদ্যমান তালিকা বাংলাদেশ ব্যাংকে এখনই না পাঠিয়ে সময় চেয়ে গতকাল একটি চিঠি দিয়েছে।
প্রতিদিনের খবরগুলো আপনার ফেসবুক টাইমলাইনে পেতে নিচের লাইক অপশনে ক্লিক করুন-