টেকনাফে পঙ্গু বশর হত্যা মামলায় নিরীহ লোকজনকে ফাঁসানোর অভিযোগ

নিজস্ব প্রতিবেদক :

গত ১১ জুলাই রাতে টেকনাফ উপজেলার সদর ইউনিয়নস্থ মহেশখালীয়াপাড়ায় পঙ্গু আবুল বশর নিহত হওয়ার ঘটনায় দায়েরকৃত মামলায় নিরীহ লোকজনকে আসামী করার গুরুতর অভিযোগ উঠেছে। জমি সংক্রান্ত বিরোধকে কেন্দ্র করে প্রতিপক্ষের লোকজনকে ওই মামলায় আসামী করা হয়েছে। শনিবার (১৭ আগস্ট) কক্সবাজার প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে ওই এলাকার নূরুল ইসলামের পুত্র মোহাম্মদ শফিক (৩০) ও তার তিনভাই এই অভিযোগ করেছেন।

সংবাদ সম্মেলনের লিখিত বক্তব্যে মোহাম্মদ শফিক বলেন, মোহাম্মদ শফিক ও তার ভাইয়েরা বর্তমানে স্বপরিবারে দীর্ঘদিন ধরে কক্সবাজার শহরে বসবাস করে আসছি। তাদের মা ও বড়ভাই বর্তমানে হজ¦ পালনের জন্য সৌদি আরবে অবস্থান করছেন। এর মধ্যে গত গত ১১ আগস্ট পঙ্গু আবুল বশর খুন হয়ে। কিন্তু ওই আমি এবং আমার ভাইসহ পরিবারের কেউই টেকনাফে ছিলাম না। ওই সময় আমি (মোহাম্মদ শফিক) কিডনি রোগজনিত কারণে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে ভর্তি ছিলাম। বেশ কয়েকদিন ধরে অসুস্থতাবোধ করার পর মেডিসিন বিশেষজ্ঞের পরামর্শমতে গত ১০ আগস্ট রাত ৩টার সময় কক্সবাজার সদর হাসপাতালে ভর্তি হই। হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়ে আমার ভাইয়েরাও ব্যস্ত ছিল। কিন্তু পঙ্গু আবুল বশর হত্যা মামলায় আমি এবং আমার তিন ভাই তারেক (২১), রাশেদ (১৮), ও আরিফকে (১৮) আসামী করা হয়েছে। যা দেখে রীতিমত হতবাক হয়েছি।

তিনি আরো বলেন, বেশ কয়েক বছর পূর্বে আমার পরিবারের সাথে পঙ্গু আবুল বশরের পরিবারের জমি বিরোধ চলে আসছিল। সেই বিরোধের ফায়দা হাসিলের জন্য পঙ্গু আবুল বশর হত্যাকান্ডে দায়ের হওয়া মামলায় আমাদেরকে মিথ্যা আসামী করা হয়েছে। পঙ্গু আবুল বশরের লাশের সঙ্গে যারা সেদিন কক্সবাজার সদর হাসপাতালের মর্গে এসেছিল তারাও সেইদিন আমাদেরকে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় দেখেছিলেন। কিন্তু তারপরও পরিকল্পিতভাবে আমাদেরকে আসামী করে ফাঁসানো হয়েছে।

মোহাম্মদ শফিক বলেন, ঘটনার পর আমরা স্থানীয়ভাবে বিভিন্ন মানুষের কাছে খবর নিয়ে জানতে পেরেছি- পঙ্গু আবুল বশর হত্যাকান্ডের ঘটনাটি সম্পূর্ণ পরিবারের মধ্যে ঘটেছে। নিজেদেরকে রক্ষা করতে পরিকল্পিতভাবে পূর্ব শত্রুদের আসামী করে ফাঁসানো হয়েছে। প্রকৃতপক্ষে নিহত আবুল বশর একজন মাদকাসক্ত ব্যক্তি। প্রতিদিন মদ্যপান করে বাড়িতে মারামারি ও নানা ঝগড়া বাঁধে। ঘটনার দিনও (১১/৮/১৯) আবুল বশর মদ্যপান করে রাতে বাড়িতে আসে। প্রতিদিনের মতো সেদিনও স্ত্রীর সাথে ঝগড়া হয় আবুল বশরের। এক পর্যায়ে আবুল বশর তার স্ত্রী সামসুন নাহারকে (৪৫) পায়ে দায়ের কোপ মেরে আঘাত করে। এসময় ছোট ছেলে সাইফুল ইসলাম (২৪) নিজের পিতা আবুল বশরকে রাগেরবশত: গলাটিপে ধরে। গলাটিপে ধরা অবস্থায় মারা যান আবুল বশর। নিজের আপন ছেলে রাগের বশত: হত্যা করলেও দীর্ঘদিন জমি বিরোধ চলে আসা প্রতিপক্ষ ব্যক্তিদের আসামী করে প্রকৃত ঘটনা আড়াল এবং নিরীহ ও নিরপরাধ ব্যক্তিদেরকে ফাঁসানোর ষড়যন্ত্র করা হয়েছে। আমরা এই মিথ্যা ও ষড়যন্ত্রমূলক মামলা থেকে রেহায় পেতে পঙ্গু আবুল বশর হত্যাকান্ডের সঠিক তদন্ত করে প্রকৃত ঘটনার উদঘাটন করতে পুলিশ প্রশাসন ও সরকারের উর্ধ্বতন মহলের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।

সংবাদ সম্মেলনের আরো উপস্থিত ছিলেন শফিকের ভাই তারেক, রাসেল ও আরিফ, মহেশখালীয়াপাড়ার স্থানীয় প্রতিবেশী আব্দুস সালাম, আব্দুল মাবুদ, মো. আমিন, রুবেল, আব্দুল হামিদ, আজিজুল হক, নজরুল ইসলাম ও বিপ্লব প্রমুখ।

আরও খবর