আনোয়ার হোছাইন, ঈদগাঁও:
কক্সবাজার সদরের ঈদগাঁওতে প্রবাসী স্ত্রীর সাথে অনৈতিক কাজ করতে গিয়ে জনতার হাতে আটক হল নুর মোহাম্মদ জিন্নাত নামের কথিত এমবিবিএস ডাক্তার। সে ইসলামাবাদ ইউনিয়নের মেম্বার আব্দুল শুক্কুরের মেয়ে জামাই। রবিবার (৪ আগষ্ট) দিবাগত রাত দেড়টার দিকে পার্শ্ববর্তী ইসলামপুর ইউনিয়নের হাজী পাড়ায় এ ঘটনা ঘটে। আটককৃত এ নুর মোহাম্মদ জিন্নাত স্থানীয় শাহ ফকির বাজারের এক ফার্মেসির চিকিৎসক হওয়ায় ঘটনাস্থলের ওয়ার্ড মেম্বার শাহবুদ্দীন তাকে বাজার কমিটির সভাপতি, সহ সভাপতির জিম্মায় পরবর্তী মীমাংসার শর্তে ছেড়ে দেন।ছাড় পেয়ে ঐ ডাক্তার ইতিমধ্যে এলাকা ছেড়ে পালিয়েছে বলে স্থানীয়রা জানিয়েছে।
প্রাপ্ত তথ্যে জানা যায়, ইসলামপুর ইউনিয়নের হাজী পাড়া এলাকার মৃত ইদ্রীসের মেয়ে আসমাউল হুসনার সাথে তিন বছর পূর্বে পোকখালী ইউনিয়নের উত্তর পাড়ার জাহাঙ্গীর আলম নামের এক প্রবাসীর বিয়ে হয়। স্বামী জাহাঙ্গীর বিদেশ থাকার সুযোগে আসমাউল হুসনা ডাক্তার নুর মোহাম্মদ জিন্নাতের সাথে পরকীয়া প্রেমে আসক্ত হয়ে পড়ে। সে সুবাদে তার সাথে প্রায় সময় মোবাইলে কথা বলত আসমা। বিষয়টি জানতে পেরে শ্বাশুড়ি আসমাকে বারন করে।ইত্যবসরে সে কৌশলে জামাইয়ের দেয়া বিপুল স্বর্ণালংকার ও নগদ টাকা নিয়ে পিত্রালয়ে চলে যায় বলে শ্বশুর পক্ষের লোকজন জানান।
ঘটনার দিন রাতে পরকীয়া প্রেমিক ডাক্তার নুর মোহাম্মদ জিন্নাতকে গোপনে অভিসারে লিপ্ত হতে ডেকে নিয়ে যায় আসমা। সে অন্ধকারে গোপনে আছমার বাবার বাড়িতে প্রবেশের সময় স্থানীয় কয়েকজন যুবক দেখতে পেয়ে ওয়ার্ড মেম্বার শাহাব উদ্দীনকে খবর দেয়। মেম্বার শাহাব উদ্দীন শাহ ফকির বাজারের সভাপতি হাফিজুর রহমান লাভলু ও সহ সভাপতি ওবাইদুল হককে সাথে নিয়ে ঘটনাস্থলে যান।
মেম্বার শাহাব উদ্দীনের সাথে যোগাযোগ করা হলে ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, স্থানীয়দের খবরের ভিত্তিতে ঘটনাস্থলে পৌঁছে ধৃত ডাক্তার নুর মোহাম্মদ জিন্নাতকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। সে সময় জিন্নাত মোস্তাক ফকির নামের এক ব্যক্তির ডাকে চিকিৎসা দেওয়ার জন্য তার বাসায় গিয়েছিল।
তখন মেম্বার শাহাব উদ্দীন কৌশলে মোস্তাক ফকির থেকে মুঠোফোনে যোগাযোগ করে তার বাসায় কোন ডাক্তার গিয়েছিল কি না জানতে চাইলে মোস্তাক ফকির স্বীকার করেন তার বাসায় কোন চিকিৎসক যায়নি।সে সুস্থ আছে। ওয়ার্ড মেম্বার শাহাব উদ্দীন তখনই আছমা এবং ধৃত ডাক্তার জিন্নাতের স্বীকারোক্তিতে নিশ্চিত হন তারা দুজন অনৈতিক কাজে লিপ্ত হয় এবং বাহিরে লোকজনের উপস্থিতি টের পেয়ে ঘর থেকে কৌশলে পালানোর সময় লোকজন এ কথিত ডাক্তারকে আটক করেছে বলে জিন্নাত জনসম্মুখে স্বীকারও করেছে।
সে সময় উপস্থিত বাজার কমিটির সভাপতি ও সহ সভাপতির জিম্মায় জিন্নাতকে ছেড়ে দেয়।পরদিন সকালে মেম্বার শাহাবুদ্দিন ডাক্তার এবং মহিলা পক্ষকে বিচারের জন্য ডাকলে মেয়ে পক্ষ উপস্থিত হলেও এ ডাক্তার এলাকা ছেড়ে পালানোতে উপস্থিত হয়নি বলে জানান মেম্বার ।
পরদিন সকালে ডাক্তার জিন্নাত লোকলজ্জায় ঈদগাহ ছেড়ে অন্যত্রে আত্মগোপনে চলে যায়।অভিযুক্ত ডাক্তার ও আসমাউল হুসনার সাথে বিভিন্ন মাধ্যমে যোগাযোগের চেষ্টা করেও মোবাইল বন্ধ পাওয়ায় বক্তব্য নেয়া যায়নি। কিন্ত মুঠোফোনে সংযোগ না পাওয়ায় বক্তব্য নেওয়া যায়নি।
অপর একটি সূত্রে জানা গেছে, অভিযুক্ত চিকিৎসক নুর মোহাম্মদ জিন্নাত এমবিবিএস পাশ না করেই ডাক্তার বনে গিয়ে রাতারাতি চেম্বার খুলে চিকিৎসার নামে অপচিকিৎসা করে যাচ্ছে দীর্ঘদিন ধরে এলাকার বিভিন্ন স্থানে । সুযোগ বুঝে সুন্দরী নারী রোগীদের ফাঁদে ফেলে অনৈতিক কাজে জড়িয়ে পড়ে। ইতিপূর্বে সে আরো ৩/৪ বার ধৃত হয়ে মুচলেকা দিয়ে ছাড় পেয়ে যায়। স্থানীয়রা কথিত চিকিৎসক নামধারী নুর মোহাম্মদ জিন্নাতকে আটক পূর্বক আইনের আওতায় আনার দাবী জানান।
প্রতিদিনের খবরগুলো আপনার ফেসবুক টাইমলাইনে পেতে নিচের লাইক অপশনে ক্লিক করুন-