নিজস্ব প্রতিবেদক:
রামু উপজেলার আল-জামিয়াতুল ইসলামিয়া দারুল উলুম চাকমারকুল মাদ্রাসা সংলগ্ন মসজিদে ১৯ জুলাই জুমার নামাজ পড়ানো নিয়ে বাড়াবাড়ির ঘটনা ঘটেছে। দীর্ঘদিনের নিয়োগকৃত খতিবকে হটিয়ে আব্দুর রাজ্জাক নামের বহিরাগত একজন মাওলানা (বহিস্কৃত শিক্ষক) দিয়ে জোরপূর্বক জুমার নামাজ পড়ানোর চেষ্টা চালানো হয়েছে। এ নিয়ে সাধারণ মুসল্লিদের চরম ক্ষোভ দেয়া দেয়।
খবর পেয়ে মসজিদ এলাকায় সতর্ক অবস্থান নেয় পুলিশ। যে কারণে কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। অবশ্যই অধিকাংশ মুসল্লিদের সমর্থনে জুমার নামাজ পড়ান নির্ধারিত খতীব মুফতি মাওলানা নুরুল হক।
ঘটনাস্থলে থাকা রামু থানার পুলিশ উপ-পরিদর্শক (এসআই) আনোয়ার হোসাইন জানান, খবর পেয়ে তাৎক্ষণিত ঘটনাস্থলে পুলিশ উপস্থিত হওয়ায় কোন ধরণের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি।
তিনি জানান, মসজিদে পূর্বে নিয়োগকৃত খতিব থাকতে আরেকজন নামাজ পড়ানোর চেষ্টা চালানো উচিত হয়নি। এর দ্বারা সাধারণ মুসল্লিদের মধ্যে বিভ্রান্তি সৃষ্টির পাশাপাশি ইসলামের সৌন্দর্যও নষ্ট হচ্ছে। একজন মুসলমান হিসেবে নামাজ নিয়ে এমনটি করা মোটেও উচিত হয়নি বলে মন্তব্য করেন পুলিশের এই কর্মকর্তা। রামু থানায় নতুন যোগদানকৃত ওসি মো. আবুল খায়ের বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে দেখছেন বলে জানান।
চাকমারকুল মাদরাসা গেটের বাসিন্দা মাওলানা শাহ আলম, ছৈয়দ নূর, আব্দুল মালেক, জসিম উদ্দিন, আব্দুল কাদের, জয়নাল আবেদীন, ফজলুল ইসলাম, আরিফুল ইসলামসহ শতাধিক মুসল্লি অভিযোগ করেছেন, প্রতি জুমাবারের মতো তারা নামাজ পড়তে গিয়ে দেখে, মসজিদের আশেপাশে অসংখ্য অচেনা মানুষের অবস্থান। কি কারণে হঠাৎ এত লোকের উপস্থিতি? কেউ জানতে পারেনি। খুতবার সময় হলে নিয়োগকৃত খতিব মুফতি মাওলানা নুরুল হক মসজিদে ঢুকতে চাইলে তাকে বাধা দেয় মাওলানা আব্দুর রাজ্জাকসহ চেনাঅচেনা কিছু লোক। এনিয়ে স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে বেশ কিছুক্ষণ বাকবিত-ার ঘটনা ঘটে। অবশ্যই উপস্থিত ৯৫ শতাংশ মুসল্লির মতামতের ভিত্তিতেই জুমার নামাজ পড়ান নির্ধারিত খতিব মুফতি মাওলানা নুরুল হক।
স্থানীয়রা জানিয়েছে- বিতর্কিত ও নিয়ম পরিপন্থি কর্মকা-ের কারণে শিক্ষক মাওলানা আব্দুর রাজ্জাককে বহিস্কার করে মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ। এর জের ধরে শিক্ষকদের হুমকি, ক্লাস রুটিন ছিঁড়ে ফেলা, শিক্ষকদের নামে মিথ্যা অভিযোগে মামলাসহ আইনশৃঙ্খলা পরিপন্থী নানা কর্মকান্ড করে যাচ্ছেন আব্দুর রাজ্জাক। ধারাবাহিকতায় ১৯ জুলাই জুমার নামাজে হট্টগোল সৃষ্টির অপচেষ্টা চালায়।
চাকমারকুল মাদ্রাসার মুহতামিম মাওলানা সিরাজুল ইসলাম জানান, মাদ্রাসা থেকে বহিষ্কৃত খন্ডকালীন শিক্ষক মাওলানা আব্দুর রাজ্জাক স্থানীয় চিহ্নিত সন্ত্রাসীদের মদদে নিয়োগকৃত খতিব মাওলানা মুফতি নুরুল হককে খুতবা প্রদান ও নামাজ পড়াতে বাধা প্রদান করে। সাধারণ মুসল্লি ও এলাকাবাসীর অপছন্দ সত্ত্বেও মাওলানা আব্দুর রাজ্জাক জোরপূর্বক জুমার নামাজ পড়ানোর চেষ্টা করে। গত ঈদুল ফিতরের নামাজের আগে তার আপত্তিজনক ও উত্তেজনাকর বক্তব্যে মুসল্লিরা চরম ক্ষুব্ধ হয়।
বিষয়টি জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও থানার ওসিকে লিখিতভাবে জানায় এলাকাবাসী।
মুহতামিম মাওলানা সিরাজুল ইসলাম আরো জানান, প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই মাদ্রাসার অধীনেই মসজিদ পরিচালিত হয়ে আসছে। ইমাম ও খতিবসহ সংশ্লিষ্ট সবার বেতন ভাতা মাদ্রাসার ফান্ড থেকে দেয়া হয়। মসজিদের নামে আলাদা কোন জমিজমা নেই। তিনি জানান, মসজিদ সংক্রান্ত যেকোন বিষয়ে মাদ্রাসা কমিটির সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত। এতে মাদ্রাসার বাইরের কোন ব্যক্তি বা গোষ্ঠীর হস্তক্ষেপের সুযোগ নেই।
উল্লেখ্য, আল-জামিয়াতুল ইসলামিয়া দারুল উলুম চাকমারকুল মাদ্রাসা কওমি মাদরাসা শিক্ষাবোর্ডের বিধান অনুযায়ী পরিচালিত হয়। এতে কোন পক্ষের চাপিয়ে দেয়া সিদ্ধান্ত আইনতঃ অকার্যকর।
প্রতিদিনের খবরগুলো আপনার ফেসবুক টাইমলাইনে পেতে নিচের লাইক অপশনে ক্লিক করুন-