এক যুগ পর কোপা আমেরিকা চ্যাম্পিয়ন ব্রাজিল

আগে চারবার কোপা আমেরিকা আয়োজন করেছিল ব্রাজিল, প্রত্যেকবার প্রতিযোগিতা শেষ করেছে চ্যাম্পিয়ন হয়ে। এবারও তার ব্যতিক্রম হলো না। রবিবার ফাইনালে পেরুকে ৩-১ গোলে হারিয়ে মারাকানার রিও ডি জেনিরোতে উল্লাসে মাতলো ব্রাজিল। এক যুগ পর কোপা আমেরিকার শ্রেষ্ঠত্ব ফিরে পেলো সেলেসাওরা।

গ্রুপ পর্বে এই পেরুই ৫-০ গোলে উড়ে গিয়েছিল ব্রাজিলের কাছে। কিন্তু রিকার্ডো গারেকার এই দল নকআউটে ছিল অন্য চেহারার। ফাইনালেও তাদের লড়াই ম্যাচ জমিয়ে তোলে। শেষ পর্যন্ত ১০ জনের ব্রাজিলই জেতে মহাদেশীয় শিরোপা। ২০০৭ সালের পর কোপা আমেরিকায় এটি তাদের প্রথম শিরোপা।

২০১৬ সালে এই পেরুর কাছে হেরে গ্রুপ পর্বে বিদায় নিয়েছিল ব্রাজিল। চাকরি হারান কার্লোস দুঙ্গা। তার উত্তরসূরি হিসেবে তিতে এগিয়ে নেন সেলেসাওদের। তার ভবিষ্যৎও ছিল শঙ্কায়। তবে ব্রাজিল নবম কোপা আমেরিকা চ্যাম্পিয়ন হওয়ায় চাকরিটা আরও পাকা হলো সান্তোসের সাবেক কোচের।

সেমিফাইনালে আর্জেন্টিনার বিপক্ষে গোল করা গ্যাব্রিয়েল জেসুস ফাইনালে নায়ক থেকে খলনায়ক হতে বসেছিলেন। তবে তার সতীর্থদের নৈপুণ্যে স্বস্তির জয় পায় ব্রাজিল। এভারটনের গোলে তারা এগিয়ে গেলেও প্রথমার্ধের শেষ মুহূর্তে পেরু অধিনায়ক পাওলো গেরেরোর লক্ষ্যভেদে চাপে পড়ে ব্রাজিল। প্রথম গোল বানিয়ে দেওয়া জেসুস বিরতিতে যাওয়ার আগ মুহূর্তে এগিয়ে দেন স্বাগতিকদের। কিন্তু দ্বিতীয়ার্ধে তিনি দ্বিতীয় হলুদ কার্ড দেখে মাঠ ছাড়লে আবার চাপের মুখোমুখি হয় ব্রাজিল। কিন্তু বদলি খেলোয়াড় রিচার্লিসন সব শঙ্কা দূর করে দেন পেনাল্টি গোল থেকে।

2019-07-07T220420Z_1798798092_RC1C0CD57F10_RTRMADP_3_SOCCER-COPA-BRA-PER

পেরুর আত্মবিশ্বাসী শুরু থমকে যায় ১৫ মিনিটে ব্রাজিল গোল করলে। প্রতিপক্ষের রক্ষণভাগের উপর দিয়ে ক্রস করেন জেসুস। দূরের পোস্টে সবার নজরের বাইরে থাকা এভারটন দুর্দান্ত হাফ ভলিতে গোলমুখ খোলেন। পরে ১০ গজ দূর থেকে নেওয়া ফিলিপে কৌতিনিয়োর শট গোলবারের পাশ দিয়ে যায়। ৩৬ মিনিটে অল্পের জন্য ক্রসবারের উপর দিয়ে লক্ষ্যভ্রষ্ট হয় রবের্তো ফিরমিনোর হেড।

সেলেসাওদের আক্ষেপ বাড়িয়ে দেয় রেফারি রবের্তো তোবারের রিভিউয়ের সিদ্ধান্ত। থিয়াগো সিলভার বাহুতে বল লাগায় পেরুকে পেনাল্টি উপহার দেন তিনি। সুযোগ নষ্ট করেনি পেরুভিয়ানরা, গেরেরো ৪৪ মিনিটে ফেরান সমতা।

পেরুর এই আনন্দ ছিল অল্প সময়। প্রথমার্ধের ইনজুরি সময়ের তৃতীয় মিনিটে কার্লোস জাম্বরানোর ভুলে জেসুস ঠাণ্ডা মাথায় স্কোর করেন ২-১। ব্যবধান বাড়িয়ে নিতে দ্বিতীয়ার্ধে আরও মরিয়া হয়ে ওঠে স্বাগতিকরা। কৌতিনিয়োর বাঁকানো শট আবার গোলবারের পাশ দিয়ে যায়। ব্রাজিলের জন্য দুঃসময় অপেক্ষা করছিল। ম্যাচে পঞ্চমবার ফাউল করে তোবারের ধৈর্য্যের বাঁধ ভাঙেন জেসুস, পরিণতিতে দ্বিতীয় হলুদ কার্ড দেখে ৭০ মিনিটে অশ্রুসিক্ত বিদায় নিতে হয় ম্যানসিটি স্ট্রাইকারকে।

বাকি ২০ মিনিট ১০ জনের ব্রাজিলকে পাওয়ার সুযোগ কাজে লাগাতে ব্যর্থ হয় পেরু। বরং ৮৭ মিনিটে জাম্বরানোর আরেকটি ভুলে শেষ মুহূর্তে ব্যবধান বাড়ায় সেলেসাওরা। বক্সের মধ্যে এভারটনকে ফাউল করেন তিনি। পেনাল্টি থেকে রিচার্লিসন ৯০ মিনিটে করেন ব্রাজিলের তৃতীয় গোল। এতে ১৯১৯, ১৯২২, ১৯৪৯ ও ১৯৮৯ সালের পর পঞ্চমবারও আয়োজক হিসেবে শিরোপা উৎসব করে তিতের দল।

আরও খবর