উখিয়া-টেকনাফে মাদকাসক্তিতে জড়িয়ে পড়ছে এনজিওতে কর্মরত নারীরা

হুমায়ুন কবির জুশান, উখিয়া :

ফাইল ছবি

দেশজুড়ে ইয়াবার ভয়ঙ্কর নেটওয়ার্ক গড়ে উঠেছে। ইয়াবার ভয়াল থাবায় আক্রান্ত গোটা দেশ। উখিয়া-টেকনাফের বিভিন্ন সীমান্তবর্তী পয়েন্ট দিয়ে পাচার করে আনা হচ্ছে কোটি কোটি টাকার ইয়াবা। এ ছাড়া স্থলপথ, জলপথ ও আকাশপথেও সিন্ডিকেটের মাধ্যমে সহজেই তা ছড়িয়ে দিচ্ছে সারা দেশে।

কক্সবাজার হোটেলগুলোতে খুচরা বিক্রেতারা দিচ্ছেন হোটেল ও হোম সার্ভিস। ফোন করলেই বাড়িতে বা হোটেলে পৌঁছে দেয়া হচ্ছে ইয়াবা।

মানবতার শহর উখিয়া-টেকনাফের বিভিন্ন ক্যাম্পে কর্মরত এনজিও নারী কর্মীদের মধ্যে ইয়াবাসক্তের হার আশঙ্কাজনক অবস্থায় পৌঁছেছে। ইয়াবা পাচারের ভূমিকায় রয়েছেন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী ও জনপ্রতিনিধিরাই। রাজনৈতিক দলের প্রভাবে দিন দিন অপ্রতিরোধ্য হয়ে উঠেছে এই মাদক মাফিয়ারা। পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীও এখন তাদের সঙ্গে পেরে উঠছে না।

সরকারের দেওয়া ৯ শর্তে গত ১৬ ফেব্রুয়ারী টেকনাফে আত্নসমর্পন করেছেন উখিয়া-টেকনাফের সাবেক এমপি আব্দুর রহমান বদির তিন ভাইসহ ১০২ ইয়াবা ব্যবসায়ী। সেই সময় টেকনাফ পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের মাঠে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের উপস্থিতিতে আনুষ্ঠানিকভাবে আত্নসমর্পন করেন তারা। কক্সবাজার-টেকনাফে মাদকবিরোধী সাঁড়াশি অভিযানে বন্দুকযুদ্ধে মাদককারবারিরা নিহত হলেও থেমে নেই ইয়াবা পাচার।

এ অবস্থায় প্রজন্ম থেকে প্রজন্ম ধ্বংসের ইয়াবা ব্যবসার প্রসার হচ্ছে দ্রুত। রোহিঙ্গা ক্যাম্পে কর্মরত তরুণ সোহেল আরমান ( ছদ্ননাম ) । ইয়াবায় আসক্ত। এক সময় এই তরুণকে ইয়াবা জোগাড় করতে বহুদুর যেতে হতো। কখনো উখিয়া আবার কখনো টেকনাফ। ক্যাম্পে চাকরির সুবাদে সোহেল আরমান খবর পায়, কক্সবাজার হোটেলে পাওয়া যায় ইয়াবা। সেখানেই পরিচয় আরেক এনজিও কর্মীর সঙ্গে। তিনিও ক্যাম্পে চাকরি করেন। তার কাছ থেকে খবর পায়, এতদূর নয় কক্সবাজার হোটেলেই পাওয়া যায় ইয়াবা। তাই তারা প্রতি বৃহস্পতিবার কক্সবাজারে ছুটে যান।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক রোহিঙ্গা ক্যাম্পে কর্মরত উখিয়ার এক তরুণ বলেন, ক্যাম্পে কাজের শেষে প্রতি বৃহস্পতিবারে নারী কর্মীরা তাদের বয় ফ্রেন্ড নিয়ে কক্সবাজার হোটেলে চলে যায়। সেখানে অনৈতিক কর্মকান্ডসহ ইয়াবা সেবন করে থাকে। আমাদের এখানকার পরিবেশও কলুষিত হচ্ছে। একসময় শুধু পুরুষ মাদক সেবনকারী নিয়ে সংশ্লিষ্ট মহল উদ্বিগ্ন থাকলেও বিগত কয়েক বছর ধরে এতটায় বিপদজনক যে, রোহিঙ্গা ক্যাম্পে কর্মরত প্রতি ৩০ জনের মধ্যে ৩ জনই কোন না কোনভাবে ইয়াবাসহ বিভিন্ন নেশা জাতীয় দ্রব্য সেবনের সঙ্গে জড়িত।

মাদকাসক্তদের নিয়ে কাজ করেন এমন এক জনের সাথে কথা বলে জানা যায়, লোকলজ্জা ও সামাজিকতার ভয়ে তারা মেয়ের আসক্তির বিষয়টি লুকিয়ে রাখেন।টিনএজ কিশোরী ও রোহিঙ্গা ক্যাম্পে এনজিওতে কর্মরত নারী ইয়াবা গ্রহণের হার সব চেয়ে বেশি।

আরও খবর