পেকুয়া (কক্সবাজার) প্রতিনিধি
কক্সবাজারের পেকুয়া প্রকৌশল অধিদপ্তরে প্রকৌশলী জাহেদুল ইসলাম চৌধুরীর লাগামগীন অনিয়ম অার দূর্ণীতির কারণে পেকুয়ার সড়ক ব্যবস্থা ভেঙ্গে পড়েছে। ঠিকাদারের কাছ থেকে অনৈতিক সুবিধা নিয়ে গ্রামীণ সড়ক থেকে শুরু করে প্রধান সড়কগুলোর ইট খুলে নেওয়ার কাজটি দ্রুত করলেও সংস্কার করতে যতসব অনিহা। মনে হয় তাদের পকেটের টাকা দিয়ে টেন্ডারকৃত সড়ক সংস্কার করতে হয়।
দীর্ঘদিন ধরে ওই সমস্ত সড়কে চলাচলকারী এলাকাবাসী চরম দূর্ভোগে পড়লেও প্রকৌশলী জাহেদুল ইসলাম চৌধুরী ও সংশ্লিষ্ঠ ঠিকাদার অারাম অায়েশে উপজেলা ভিত্তিক বাসভবনে দিনাপাত করলেও সাধারণ জনগণের দুঃখ লাগবে রাজনৈতিক নেতারাও এগিয়ে অাসছেনা।
বিভিন্ন সড়কের বেহাল দশার কথা উল্লেখ করে ইতোমধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক ও বিভিন্ন মিডিয়ায় একাধিক সচিত্র সংবাদ প্রকাশ হলেও টনক নড়ছেনা প্রকৌশলী জাহেদুল ইসলামের। বারবার ঠিকাদারকে দোষারোপ করে সংস্কার কাজ দ্রুত শুরু করার কথা বলে দ্বায় এড়ানোর চেষ্টা করে থাকেন।
সরেজমিন দেখা গেছে, উপজেলার সদরের শেখের কিল্লা ঘোনা সড়ক, বলীর পাড়া সড়ক, মামা ভাগিনার দোকান হয়ে বটতলিয়া পাড়া সড়ক, গুলধির সড়ক উজানটিয়া ইউনিয়নের করিমদাদ মিয়ার ঘাট সড়ক, এএস মাদ্রাসা সড়ক, কইড়া বাজার সড়ক সংস্কার বিহীন, মধ্যম উজানটিয়া ফোরকানের দোকান থেকে সৈকত বাজার, অামিরুজ্জামানের বাড়ি থেকে ইউনিয়ন পরিষদ সড়ক, মগনামা উচ্চ বিদ্যালয় হয়ে মহুরী পাড়া ও মগঘোনা সড়ক, মগনামা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ইউনিয়ন পরিষদ সড়ক, রারবাকিয়া ব্রীজ সংলগ্ন প্রধান সড়ক, টইটং বনকানন সড়ক, শিলখালীর মাঝের ঘোনা সড়ক, রাজাখালীর অামিন বাজার-মাতবর পাড়া সড়ক বেশ মারাত্মক অাকার ধারণ করেছে। তারমধ্যে বেশ কয়েকটি সড়ক থেকে ইট খুলে ফেলা হয়েছে। এছাড়াও অারো বেশ কয়েকটি সড়ক ও কালভার্টের জন্য যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে এলাকাবাসীর। এর মধ্যে মহেশখালী, কুতুবদিয়া ও উজানটিয়া এলাকাবাসীর জন্য চলাচলকারী করিমদাদ মিয়ার ঘাট সড়ক যোগাযোগ সম্পূর্ণ বন্ধ রয়েছে। বন্ধ রয়েছে এএস সিনিয়র মাদ্রাসা সড়ক। যে সড়ক দিয়ে শতশত শিক্ষার্থী ও হাজার হাজার জনগণের চলাচল। ওই সড়কে কালভার্ট করার জন্য কেটে নেওয়া হয়েছে সড়ক। বিকল্প রাস্তাটি পানিতে ডুবে অাছে। মগনামার উচ্চ বিদ্যালয় হয়ে মগঘোনা সড়কটি দিয়ে যান চলাচল দূরে থাক মানুষ চলাচল বন্ধ রয়েছে দীর্ঘদিন ধরে।
স্থানীয়রা বিভিন্ন সময় উপজেলা প্রকৌশলী জাহেদুল ইসলাম চৌধুরীকে অবগত করলেও তিনি কাজ বাস্তবায়নে কোন ধরণের প্রদক্ষেপ নেয়নি।
সর্বশেষ ইউএনওকে সড়কগুলো দ্রুত সংস্কারের জন্য স্থানীয়রা অবগত করলে তিনি প্রকৌশলী জাহেদকে ব্যবস্থা নেওয়ার তাগাদা দেন। তিনি ঠিকাদারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলে দ্বায় এড়িয়ে যান।
উজানটিয়ার বাসিন্দা এডভোকেট মীর মোশারফ হোসেন টিটু বলেন, উজানটিয়ার বেশ কয়েকটি সড়ক মারাত্মক অাকার ধারণ করেছে। ঠিকাদার ও প্রকৌশলীর অবহেলায় সাধারণ জনগণ চরম দূর্ভোগ পোহাচ্ছে। এএস সিনিয়র মাদ্রাসার সড়কটি দিয়ে অসুস্থ এক বৃদ্ধা মহিলাকে তার সন্তান ভার করে চিকিৎসা দিতে নিয়ে যাচ্ছে। অনেক গর্ভবতি মহিলার সন্তান নষ্ট হয়ে গেছে। অথচ সরকার সড়ক সংস্কারে খুব অান্তরিক। কোটি কোটি বরাদ্ধও দিচ্ছে। কিন্তু ঠিকাদার ও প্রকৌশল কর্মকর্তার কারণে সাধারণ জনগণ কষ্ট পাচ্ছে।
এছাড়াও মগনামার বাসিন্দা শিক্ষক নুরুল অামিন, রাজাখালীর বাসিন্দা অানসারুল ইসলাম টিপু, সদরের রেজাউল করিমসহ অারো কয়েকজন বলেন, উপজেলার বেশ কয়েকটি সড়ক সংস্কার করার জন্য দ্রুত বরাদ্ধ দিয়েছেন। বরাদ্ধ নয়ছয় করার জন্য প্রকৌশল কর্মকর্তা জাহেদুল ইসলাম চৌধুরী ও সংশ্লিষ্ঠ ঠিকাদার দূর্ণীতির অাশ্রয় নিয়েছেন। তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবী জানাচ্ছি।
এবিষয়ে জানতে চাইলে পেকুয়া প্রকৌশল অধিদপ্তরের প্রকৌশলী জাহেদুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, করিমদাদ ঘাট সড়কটি ঠিকাদার কাজ না করায় তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। অার অন্যান্য যে সমস্ত সড়ক খুলে ফেলা হয়েছে তা বর্ষার কারণে সংস্কার করা যাচ্ছেনা। বর্ষার পর দ্রুত সংস্কার করা হবে।
প্রতিদিনের খবরগুলো আপনার ফেসবুক টাইমলাইনে পেতে নিচের লাইক অপশনে ক্লিক করুন-