কক্সবাজারে দুইজন ভুঁয়া কারা পরিদর্শক আটক

শাহজাহান চৌধুরী শাহীন

কক্সবাজার শহরতলি কলাতলি হোটেল সী ক্রাউন থেকে নারীসহ দুই ভুঁয়া কারা কর্মকর্তা আটক করেছে পুলিশ। বুধবার (৩ জুলাই) দিনগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে কক্সবাজার জেলা কারাগারের জেল সুপারের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে পুলিশ এ অভিযান চালায়। আটক দুইজনকে জিজ্ঞাসাবাদ চালায় পুলিশ।

আটককৃতরা হলেন- রিয়াদ বিন সেলিম ও শাহনাজ পারভীন মায়া।তারা স্বামী স্ত্রী এবং চট্টগ্রামের পটিয়ার বাসিন্দা।

কলাতলি সী ক্রাউন হোটেল কর্তৃপক্ষ জানান,দম্পত্তি পরিচয়ে রিয়াদ বিন সেলিম ও শাহনাজ পারভীন মায়া নামে দুই জন গত ২১ জুন হোটেলে কাফল বেড়ের ২১৭ নং রুমে উঠেন। হোটেলে অবস্থান, খাবার বাকিতে ভোগ করছিলেন তারা। পরে ২০৯ নং রুমে স্থানান্তর করা হয় এই বর্ডারদের। নিয়ম অনুযায়ী বর্ডারদের কাছ থেকে রুম ভাড়া আর খাবারের বিল পরিশোধের জন্য তাগাদা দিলে তারা আজ দিবে কাল দিবে এভাবে কাল ক্ষেপন করেন।

হোটেল কর্তৃপক্ষ আরো জানান, ওই রুমে অবস্থানকারী বর্ডাররা কোন কোন সময় নিজেদেরকে কারা কর্মকর্তা, কখনো কখনো সিনিয়র কারা পরিদর্শক পরিচয় দেন। এই পরিচয়ে রুম ভাড়াসহ অন্যান্য বিল থেকে ৫০ ডিসকাউন্ট দেয়ার পরেও তারা বিল পরিশোধে গড়িমসি করেন। তাদের পরিচয় ও আচরণ সন্দেহ হলে বিষয়টি কক্সবাজার জেলা কারাগারের তত্ত্বাবধায়ক বজলুর রশীদ আখন্দ জানানো হয়। তিনি খবর পেয়ে বুধবার রাত ১২টার দিকে হোটেলে আসে।

কক্সবাজার জেলা কারাগারের তত্ত্বাবধায়ক বজলুর রশীদ আখন্দ বলেন,বুধবার রাত ১২ টার সময় হোটেল সী- ক্রাউন কর্তৃপক্ষ আমাকে অবগত করেন যে, তাদের হোটেলে অবস্থানরত দুইজন বর্ডার সিনিয়র কারা পরিদর্শক পরিচয়ে অনেক টাকা বাকী করেছে। খাবার ও রুমের বিলও পরিশোধ করছে না। এই খবর পেয়েই আমি তৎক্ষনিক ফোর্স নিয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছি।

বজলুল রশীদ আখন্দ আরো বলেন, পরবর্তীতে রিয়াদ বিন সেলিম ও শাহনাজ পারভীন মায়া নামের ওই বর্ডারদেরকে চ্যালেঞ্জ করা হলে তারা অসংলগ্ন কথাবার্তা বলেন। বিষয়টি অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ইকবাল হোছাইনকে জানানো হলে তিনি কক্সবাজার সদর মডেল থানার অপারেশন অফিসার ইন্সপেক্টর সো. ইয়াছিনকে ফোর্সসহ ঘটনাস্থলে পাঠান। পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদ করে তাদেরকে থানায় নিয়ে যান।

কক্সবাজার সদর মডেল থানার অপারেশন অফিসার ইন্সপেক্টর মো. ইয়াছিন বলেন, তারা নিজেদেরকে স্বামী-স্ত্রী দাবী করে দুজনই সিনিয়র কারাপরিদর্শক হিসেবে ভূঁয়া পরিচয় দেন এবং উক্ত পরিচয়ে হোটেলে ১৩ দিন অবস্থান করেন। বিষয়টি সন্দেহ জনক।
ইন্সপেক্টর মো. ইয়াছিন বলেন, চট্টগ্রামের স্থায়ী বাসিন্দা হলে কোন কাজ ছাড়াই হোটেল কক্ষে ১৩ দিন অবস্থান অস্বাভাবিক।
এর পেছনে মাদকের কোন সংশ্লিষ্টতা আছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

কোন মাদকের চালান নিয়ে যাওয়ার জন্য তারা এতোদিন পর্যন্ত হয়তুবা অপেক্ষা করছিল। সময় ক্ষেপন হওয়ায় তারা দিনের পরদিন সেখানে হোটেলে অবস্থান করেছে।

তিনি আরো বলেন,আটককৃত রিয়াদ বিন সেলিমের বিরুদ্ধে আকবর শাহ থানায় ধর্ষণ ও অপহরনের মামলা রয়েছে। এ ব্যাপারে তদন্ত পূর্বক আইননানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

আরও খবর