গিয়াস উদ্দিন ভুলু, কক্সবাজার জার্নাল
সারা দেশের ন্যায় কক্সবাজারের জেলা ও টেকনাফ উপজেলা প্রশাসন ও জেলা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের যৌথ আয়োজনে টেকনাফে আন্তর্জাতিক মাদক প্রতিরোধ দিবস পালিত হয়েছে।
মাদকের অপব্যবহার ও পাচার প্রতিরোধের ২৬ জুন সকাল ১০টায় পবিত্র কোরান তেলোয়াতের মধ্য দিয়ে সভা শুরু করা হয়। টেকনাফ সরকারী ডিগ্রী কলেজের প্রভাষক সন্তোষ কুমার শীলের পরিচালনায় উক্ত সভায় সভাপতিত্ব করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রবিউল হাসান।
অনুষ্টানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন কক্সবাজার বিজ্ঞ অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট মোহাম্মদ শাজাহান আলী।
বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন, টেকনাফ ২ বিজিবি অধিনায়ক লেঃ কর্ণেল মোহাম্মদ ফয়সল হাসান খান,অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মোহাম্মদ আদিবুল ইসলাম, সাবেক সাংসদ ও উপজেলা আওয়ামীলীগ সভাপতি অধ্যাপক মোহাম্মদ আলী, উপজেলা চেয়ারম্যান নূরুল আলম, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রন অধিদপ্তর কক্সবাজার সহকারী পরিচালক সোমেন মন্ডল,মেয়র হাজ্বী মোঃ ইসলাম, মডেল থানার (ওসি) প্রদীপ কুমার দাশ।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ কামাল হোসেন বলেন, যারা এখনো মাদক কারবারে জড়িত রয়েছে তাদের কোন ধরনের ছাড় দেওয়া হবেনা। সবাইকে ঐক্যবদ্ধ ভাবে মাদক কারবারিদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। তাদের সাথে সামাজিক সম্পর্ক বিচ্ছিন্ন করতে হবে। পাশাপাশি মাদক কারবারীদের আইনের আওয়তাই নিয়ে আসার জন্য আইন-শৃংখলা বাহিনীকে সঠিক তথ্য দিয়ে সহযোগীতা করুন। মসজিদ বা ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য মাদক কারবারীদের কাছ থেকে নগদ টাকাসহ যে কোন অনুদান নেওয়া প্রত্যাহার করুন।
তিনি আরো বলেন,যেসব জনপ্রতিনিধি ইয়াবা কারবারের সাথে জড়িত থেকে দীর্ঘদিন এলাকায় অনুপস্থিত তাদেরকে বরখাস্থ করার করার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গুলোতে মাদকের বিরুদ্ধে আধা ঘন্টা করে শিক্ষার্থীদের পাঠদান দেওয়ার জন্য শিক্ষকদের প্রতি অনুরোধ জানান।
টেকনাফ ২ বিজিবি অধিনায়ক লেঃ কর্ণেল মোঃ ফয়সল হাসান খাঁন বলেন, মাদক নির্মুল করতে গিয়ে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে অনেক কারবারি মারা গেছেন। এটা আমাদের কাম্য নয়। সীমান্তে গুলি মেরে ইয়াবা প্রতিরোধ করা সম্ভব নয়। আমার দেশের অস্ত্র, গুলি ব্যবহার করে আমার দেশের মানুষ মারতে হচ্ছে কেন? আড়ালে থেকে এখনো যারা মাদক ব্যবসা অব্যাহত রেখেছে।সেই সমস্ত গড ফাদারদের নির্মুল করে মাদকের করালগ্রাস থেকে জাতিকে মুক্ত করতে হবে।
তিনি আরো বলেন, সীমান্তে বেশি পরিমাণে মাদক জব্দ করে আমি আত্মতুষ্টিতে ভুগতে চাইনা, বরং সীমান্তে মাদক পাচার বন্ধ করতে পারাটাই আমার দেশের জন্য ভালো। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ঘোষিত মাদকের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্সের মাধ্যমে মাদক বিরোধী যে অভিযান চলছে,আমরা সেই চলমান অভিযান অব্যাহত রাখার মধ্য দিয়ে মাদক পাচার প্রতিরোধে ভুমিকা পালন করবো।
টেকনাফ মডেল থানার (ওসি) প্রদীপ কুমার দাশ বলেন,মাদকের ভয়াবহতা বেশী হওয়ার কারনে আজ আমাদের পরিবার,সমাজ, দেশ ও জাতিকে গ্রাস করেছে। এই মাদকের কারনে অনেক নারী বিধবা হয়েছে, ছেলে হারিয়েছে বাবাকে, বাবা হারিয়েছে তার সন্তানকে, ভাই হারিয়েছে ভাইকে।
তিনি আরো বলেন,টেকনাফে এক সময় বিভিন্ন প্রকার নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রীর সুগন্ধি বাতাস বইত, আর এখন চারিদিকে ইয়াবার গন্ধ বইছে। স্কুল পড়ুয়া ছাত্র থেকে শুরু করে এখানকার কিশোর, যুবক,বৃদ্ধ ও জনপ্রতিনিধি সবাই ইয়াবা নিয়ে ব্যস্ত। এই টেকনাফকে যারা ঘৃণার শহরে পরিণত করেছে, আমার জেল হোক, আর ফাঁসি হোক আমি তাদেরকে চিরতরে নির্মুল করে ছাড়বো।
অনুষ্টানে শেষে উপস্থিত জনগনকে মাদক মুক্ত সোনার বাংলাদেশ গড়ার জন্য শপথ বাক্য পাঠ করান জেলা প্রশাসক।
প্রতিদিনের খবরগুলো আপনার ফেসবুক টাইমলাইনে পেতে নিচের লাইক অপশনে ক্লিক করুন-