এম. বেদারুল আলম :
বাড়ি নির্মানের জন্য কমিটির অনুমোদন দিয়েছি। অনুমতিপত্রে স্বাক্ষর হয়েছে। উপজেলা এবং ইউনিয়ন পরিষদের ওয়ার্ড মেম্বাররা কমিটি অনুযায়ি কাজ শুরু করে দিয়েছেন। ১০৯টি ঘর যারা পাবে অর্থাৎ উপকার ভোগিদের তালিকা প্রনয়ন শেষ হয়েছে। আমরা চলতি বাজেটে বাড়ি নির্মান শেষ করে উপকার ভোগিদের হাতে দিতে বদ্ধ পরিকর’।
জেলা ত্রান ও পূর্নবাসন কর্মকর্তা মোঃ রইস উদ্দিনের সাথে একান্ত সাক্ষাৎকারে উপরোক্ত তথ্য জানান।
২১ জুন উক্ত সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন- উপজেলা পর্যায়ে ৭ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি , ইউনিয়ন পর্যায়ে ৫ সদস্যের কমিটির সম্পূর্ণ তদারকিতে বাড়ি গুলো নির্মান করা হবে। প্রতিটি বাড়ির জন্য কাবিখা টিআর প্রকল্পের আদলে তদারকি কমিটি করা হয়েছে।
জেলা প্রশাসক, উপজেলা প্রশাসন, ইউনিয়ন কমিটির সার্বিক তত্বাবধানে ১০৯টি বাড়ি নির্মান করা হচ্ছে ফলে অনিয়মের সুযোগ থাকবেনা। তালিকা প্রস্তুত হলেও এ কর্মকর্তা চূড়ান্ত তালিকা সাংবাদিকদের জানাতে চাননি। এ ব্যাপারে তিনি জেলা প্রশাসক বরাবরে আবেদন করে তালিকা নেয়ার কথা জানান। ফলে ১০৯ জনের তালিকায় প্রকৃত উপকারভোগিরা তালিকাভুক্ত হয়েছে কিনা সেটি নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
জেলা ত্রাণ ও পূর্ণবাসন অফিস সূত্রে জানা যায়, গৃহহীনদের জন্য নগদ টাকায় দূর্যোগ সহনীয় বাসগৃহ নির্মান করার উদ্যোগ নেয় সরকার। সরকারের আমার গ্রাম আমার শহর নির্বাচনী ইশতেহারের ঘোষণা অনুযায়ি এ প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়। দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রনালয়ের আওতাধীন গ্রামীন অবকাঠামোগত রক্ষণাবেক্ষণ( টিআর) এবং অবকাঠামো সংস্কার ( কাবিটা) কর্মসূচির বিশেষ বরাদ্দ দ্বারা গৃহহীনদের দূর্যোগ সহায়ক উক্ত ১০৯টি বাড়ি নির্মান করা হচ্ছে।
সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্ঠনির আওতাভুক্ত টিআর ও কাবিটার বিশেষ খাতের অর্থ দ্বারা দরিদ্রদের জীবনমান উন্নয়ন ও দূর্যোগে নিরাপত্তা হ্রাসকল্পে গৃহহীন পরিবারের জন্য দূর্যোগ সহনীয় ঘর নির্মানের জন্য নির্দেশিকা জারি করে সরকার। নির্দেশিকায় উল্লেখ করা হয় যে সব দরিদ্র পরিবারের উচুঁ ভিটা আছে কিন্তু টেকসই ঘর নেই তাদের জন্য ৮শ বর্গফুট ( প্রায় ২ শতাংশ জমি) বাড়ি, একটি রান্নাঘর, টয়লেট যেটি ২কক্ষ বিশিষ্ট সেমিপাকা টিনসেট ঘর হবে। এতে বৃষ্টির পানি সংরক্ষণ, সোলার প্যানেল এবং পাশে টয়লেট থাকবে যাতে রাতে মহিলা ও শিশুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত হবে।
জেলা প্রশাসনের ত্রাণ শাখায় মন্ত্রনালয় থেকে প্রেরিত বরাদ্দপত্র থেকে জানা যায়, প্রতিটি বাড়ির নির্মানে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ২ লাখ ৫৮ হাজার ৫’শ ৩১ টাকা। জেলার ৮ উপজেলায় ১০৯টি বাড়ি নির্মানের জন্য বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ২ কোটি ৮১ লাখ ৭৯ হাজার ৮শ’ ৭৯ টাকা। উপজেলা ভিত্তিক বাড়ি নির্মান ও বরাদ্দের পরিমান হল চকরিয়া, পেকুয়া ও কুতুবদিয়ার জন্য ১২টি করে বাড়ির জন্য প্রতি উপজেলায় ৩১ লাখ ২ হাজার ৩৭২ টাকা। মহেশখালীতে ১৭টি বাড়ির জন্য ৪৩ লাখ ৯৫ হাজার ২৭ টাকা। কক্সবাজার সদরের ১১ টি বাড়ির জন্য২৮ লাখ ৪৩ হাজার ৮৪১ টাকা। এছাড়া রামুর , উখিয়া ও টেকনাফের জন্য ১৫টি করে বাড়ির জন্য ৩৮ লাখ ৭৭ হাজার ৯’ শ ৬৫ টাকা করে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।
মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ি ২ শতাংশ পরিমান জমির মালিক, জমি পাওয়া সাপেক্ষে হিজড়া, বেদে, বাউল ,আদিবাসী, ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠি, গৃহহীন অস্বচ্ছল মুক্তিযোদ্ধা পরিবার, নদী ভ্ঙ্গন, প্রাকৃতিক দূর্যোগে গৃহহীন, বিধবা,তালাকপ্রাপ্তা, প্রতিবন্ধী এবং পরিবারে উর্পাক্ষম লোক নেই এমন লোককে উক্ত বাড়ি দেওয়া হচ্ছে যা তালিকায় প্রতীয়মান রয়েছে।
তবে জেলা ত্রাণ ও পূর্ণবাসন কর্মকর্তা চূড়ান্ত প্রস্তুতকৃত তালিকা জেলা প্রশাসকের অনুমতি ছাড়া দেওয়া হবেনা বলে জানান। ফলে প্রকৃত উপকারভোগিরা আদৌ তালিকাভুক্ত হতে পেরেছে কিনা সন্দেহ থেকে গেল।
প্রতিদিনের খবরগুলো আপনার ফেসবুক টাইমলাইনে পেতে নিচের লাইক অপশনে ক্লিক করুন-