ডেস্ক রিপোর্ট – মাদক ব্যবসায়ে রাজি না হওয়ায়’ নরসিংদীতে এক কিশোরী বধূকে পুড়িয়ে হত্যার অভিযোগে মামলা হয়েছে। শনিবার রাতে নিহতের শাশুড়ি শান্তি বেগমকে প্রধান আসামি করে চারজনের নামে নরসিংদীর সদর মডেল থানায় মামলা করেন। এ ঘটনায় পুলিশ বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে ছয়জনকে আটক করেছে। আসামিরা হলেন, জান্নাতির শাশুড়ি শান্তি বেগমের বোন সাথী আক্তার, দেবর নওসের মিয়া, খালা পারুল বেগম, খালাতো ভাই টিউলিপ, মামা রতন মিয়া ও খালাত ভাই জাহাঙ্গীর।
মামলার এজাহার ও নিহতের পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, প্রায় ১ বছর আগে নরসিংদী সদর উপজেলার হাজিপুর গ্রামের শরীফুল ইসলাম খানের মেয়ে জান্নাতি আক্তারের সঙ্গে পার্শ্ববর্তী খাসেরচরের শিপলু মিয়ার প্রেমের সম্পর্ক তৈরি হয়। কিছুদিন পরই পরিবারের অমতে তারা পালিয়ে বিয়ে করেন। আর বিয়ের কিছুদিন যেতে না যেতেই স্ত্রী জান্নাতিকে মাদক ব্যবসায় সম্পৃক্ত করতে শাশুড়ি শান্তি বেগম ও স্বামী শিপলু চাপ দেয়।
এতে রাজি হয়নি জান্নাতি। ফলে জান্নাতির ওপর নেমে আসে নির্যাতনের খড়গ। গত ২১ এপ্রিল রাতে ঘুমন্ত অবস্থায় দুর্বৃত্তরা জান্নাতির শরীরে পেট্রল ঢেলে আগুন লাগিয়ে দেয়। দগ্ধ হয়ে ছটফট করলেও তাকে হাসপাতালে নিয়ে যায়নি। পরে এলাকাবাসীর চাপে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করে শ্বশুরবাড়ির লোকজন।
অবস্থার অবনতি হলে তাকে ঢাকা মেডিকেলের বার্ন ইউনিটে ভর্তি করানো হয়। ঘটনার পর ২৫ এপ্রিল নিহতের দাদা মুক্তিযোদ্ধা সিরাজুল ইসলাম খান আদালতে মামলা করেন। আদালত পুলিশ ব্যুরো-অব-ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) কে সাত দিনের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দেওয়ার নির্দেশ দেয়। কিন্তু পৌনে দুই মাসেও আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন দেয়নি পিবিআই। এরই মধ্যে ৪০ দিন পর গত ৩০ মে ঢাকা মেডিকেলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
সর্বশেষ শনিবার রাতে জান্নাতিকে যৌতুকের জন্য নির্যাতন ও মাদক ব্যবসায় সম্পৃক্ত না হওয়ায় পুড়িয়ে হত্যার অভিযোগে শাশুড়ি শান্তি বেগম, স্বামী শিপলু ওরফে শিবু, ফাল্গুনী বেগম ও শ্বশুর হুমায়ুন মিয়াকে আসামি করে সদর মডেল থানায় হত্যা মামলা করা হয়। সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সৈয়দুজ্জামান বলেন, থানায় মামলা দায়েরের পর পরই পুলিশ বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে ছয়জনকে আটক করে। তদন্তের স্বার্থে এখনই সব বলা যাচ্ছে না।
প্রতিদিনের খবরগুলো আপনার ফেসবুক টাইমলাইনে পেতে নিচের লাইক অপশনে ক্লিক করুন-