সাইফুল ইসলাম, কক্সবাজার জার্নাল

কক্সবাজার শহরে জমে উঠেছে ঈদ বাজার। শপিংমল ও বিপণি-বিতানগুলোতে ক্রেতা-দর্শকে মুখরিত। প্রতিদিন সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত মার্কেটে কেনাকাটা চলছে। সম্প্রতি কয়েকদিন ধরে দর্শক ও ক্রেতাদের চাপে ঈদ মার্কেটে পা ফেলার জায়গা থাকছে না। তবে বিভিন্ন বিপণি কেন্দ্রে ক্রেতাদের ব্যাপক ভিড় দেখা গেছে। অধিকাংশ মার্কেটের প্রতিটি দোকানেই ভিড় থাকছে দর্শক ও ক্রেতাদের। প্রতিটি মোড়ের ফুটপাতেও রীতিমতো চাপ থাকছে দর্শক-ক্রেতাদের।
এদিকে যানজট নিরসন, ছিনতাই, চুরি ও ইভটিজিং যাতে না হয় প্রশাসনের পক্ষে মার্কেটের আশপাশে আইন-শৃঙ্খলা ও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে পুলিশের বিশেষ টিম কাজ করছে। তাছাড়া ঈদের মার্কেটগুলোতে নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়েছে পুলিশ। যাতায়ত ব্যবস্থাসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে পুলিশের কড়া নিরাপত্তা চোখে পড়ার মতো। এই নিরাপত্তা রমজানের শেষ পর্যন্ত থাকবে বলে জানা গেছে। ঈদে সবাই চাই নতুন কাপড় কিনতে বিশেষ করে পাঞ্জাবী- পায়জামা।
গতকাল শহরের ফিরোজা শপিং কমপ্লেক্সে, বার্মিজ মার্কেট, সমবায় সুপার মার্কেট, এ সালাম মার্কেট, শৈল্পিক, সী-কুইন মার্কেট, আপন টাওয়ার , সুপার মার্কেট, ফজল মার্কেট, হাশেম টাওয়ার, বাঙ্গালী বাবু, প্লাস পয়েন্টে-সহ ও ৩টি হকার মার্কেটে গত কয়েক দিনে ক্রেতাদের ভিড় দেখা গেছে। ক্রেতারা তাদের পছন্দের পোষাক ক্রয় করতে এক মার্কেট থেকে অন্য মার্কেটে ঘুরাঘুরি করেছে। তবে আগামি সপ্তাহে এ বিক্রি আরো বাড়বে বলে আশা ব্যবসায়ীদের। আবাল বৃদ্ধ বনিতা সকলে মজেছে নতুন জামায়।
ফিরোজা শফিং কমপ্লেক্সের মুক্তা ফেব্রিক্সের স্বত্বাধিকারী কনক জানান, কয়েকদিন ধরে দোকানে একটু ভিড় দেখা দিচ্ছে। বেচাকেনাও মোটামুটি হচ্ছে। মার্কেটে এখনো ছোট্ট বাচ্চাদের পোষাক বেশি বিক্রি হচ্ছে। রমজানের শেষ সপ্তাহে ক্রেতা আরও বাড়তে পারে। তবে দেশীয় পোশাকের চেয়ে বিদেশী পোশাকের চাহিদা বেশি।
এদিকে উপরোক্ত মার্কেটগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ভীড় দেখা গেছে হকার মার্কেটে। এই মার্কেটে দেখা গেছে বেশির ভাগ নি¤œ-মধ্যবিত্তদের পরিবারে লোকজন। মার্কেটে ছেলে চেয়ে মেয়েদের সংখ্যা বেশি। এখানে সব ধরনের কাপড়ের দাম ক্রেতাদের আয়ত্বে। ফলে দরিদ্ররা এখানে বেশি ভীড় জমায়। সবচেয়ে হকার মার্কেটে ক্রেতাদের সংখ্যা বৃদ্ধি।
পানবাজার সড়কের হকার মোস্তাফা জানান, গত কয়েকদিনে ধরে মার্কেটে শিশুদের কাপড় বেশি বিক্রি হচ্ছে। পোষাকের দাম গত বছরের মতো রয়েছে। বিক্রিও মোঠামুটি হচ্ছে। সামনে আরও বাড়তে পারে ধারণা তার।
কক্সবাজার সরকারী কলেজের ছাত্রী মিশকাত সামিহা সাকি বলেন, ঈদ আসলে সবাই পছন্দের পোশাক ক্রয় করতে মার্কেটে আসে। তবে মার্কেটে তেমন কোন নতুন ডিজাইনের পোশাক আসেনি সবেই আগে মতো ডিজাইন। তারপরেও ঈদ উপলক্ষে পোশাক ক্রয় করতে হবে। দামও আগের মতো।
শহরের এ সালাম মাকের্টের পিএমখালী বস্ত্র বিতানের মালিক আবদুর রশিদ জানান, গত কয়েকদিনে ক্রেতার সংখ্যা বাড়লেও তা গত বছরের তুলনায় কম।বছর সৌদি আরবে প্রবাসিদের আয় কমেছে । অনেকে ব্যবসা বানিজ্য গুটিয়ে দেশে চলে আসার কারনে আর্থিক সংকটের প্রভাব ঈদ বাজারে পড়েছে। ফলে গত বছরের তুলনায় এখনো ঈদ বাজার তেমন চাঙ্গা হয়নি। ঈদ ঘনিয়ে আসার সাথে সাথে হয়ত বিক্রি আরো বাড়তে পারে।
কক্সবাজার সদর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ মো. ফরিদ উদ্দীন খন্দকার নিরাপত্তা জোরদারের বিষয়ে বলেন- শহরের মার্কেটেগুলোতে পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। পাশাপাশি মার্কেটে আশপাশে পুলিশের বিশেষ টিম কাজ করছে। আগামীতে আরও কয়েকটি টিম নামানো হবে। এছাড়াও যে সব জায়জায় ছিনতাই কিংবা আশংকাজনক হারে ইভটিজিং এর শংকা রয়েছে। সেসব জায়গা বাড়তি নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।
প্রতিদিনের খবরগুলো আপনার ফেসবুক টাইমলাইনে পেতে নিচের লাইক অপশনে ক্লিক করুন-