রোহিঙ্গা নিয়েই এখন যত ভয় বাংলাদেশের

অনলাইন ডেস্ক :

আশ্রয় দেয়া রোহিঙ্গাদের নিয়েই এখন যত ভয় বাংলাদেশের। তাদের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড ও মাদক-অস্ত্র ব্যবসায় জড়িয়ে পড়া, বাংলাদেশি পাসপোর্ট নিয়ে বিদেশে যাওয়া ছাড়াও আরো বিভিন্ন কাজ বাংলাদেশের জন্য দুশ্চিন্তার হয়ে দাঁড়িয়েছে। এরই সঙ্গে নতুন ভয় যুক্ত হয়েছে রাজধানীতে পালিয়ে এসে এরা জঙ্গি তৎপরতায় না একাট্টা হয়ে পড়ে? তেবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, দুশ্চিন্তার কিছুই নেই। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা এ বিষয়ে সজাগ আছে। আর পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, বিষয়টি নিয়ে আমরা উদ্বিগ্ন নই, সজাগ আছি। 

মিয়ানমারে ভয়াবহ হত্যাযজ্ঞ আর নির্যাতনের মুখে পালিয়ে আসা প্রায় ১২ লাখ রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দিয়েছিল বাংলাদেশ। মানবিকতার বিবেচনায় আশ্রয় পাওয়া এসব রোহিঙ্গারা প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি কক্সবাজারকে বিরান ভূমিতে পরিণত করেছে। গাছপালা কেটে সাভার করেছে। এই রোহিঙ্গাদের নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে সরকার প্রায় আড়াই হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে নোয়াখালীর ভাসানচরে বসতি
নির্মাণের পর সেখানে যেতে এরা আপত্তি জানিয়েছে। নৌবাহিনীর তত্ত্বাবধানে প্রস্তুত করা সরকারের বিশাল এই প্রকল্পটি এখন মুখ থুবড়ে পড়েছে। 

কক্সবাজারের আশ্রয় নেয়া এই রোহিঙ্গারা এখন বাংলাদেশের জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। ক্যাম্পের ভেতরে-বাহিরে জড়িয়ে পড়ছে ভয়ংকর অপরাধে। মাদকের পাশাপাশি অস্ত্র ব্যবসায়ও জড়িয়ে পড়ছে এরা। আর সুযোগ পেলেই পালাচ্ছে ক্যাম্প ছেড়ে। মালয়েশিয়া যেতে ছুটছে রাজধানী ঢাকার উদ্দেশ্যে। কেউবা আবার নৌ-পথে পাড়ি জমাচ্ছে। 

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল গণমাধ্যমকে বলেছেন, ‘বাংলাদেশে নানা সমস্যার মধ্যে ‘রোহিঙ্গা সংকট’ একটি নতুন বাড়তি সমস্যা যুক্ত হয়েছে। কক্সবাজারের ক্যাম্প থেকে পালিয়ে এসে বিদেশ যাওয়ার পাশাপাশি রাজধানীতে ভয়ংকর কোন সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে বা যদি জঙ্গিদের মোটিভেশনে জঙ্গি তৎপরতায় যুক্ত হয়ে পড়ে, তবে তা হবে আমাদের জন্য খুবই উদ্বেগের।’ রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলো দেয়াল বা তারকাটা দিয়ে ঘেরা দেয়ার পরিকল্পনার কথা জানান মন্ত্রী।

তিনি গণমাধ্যমকে আরো বলেছেন, ‘বিষয়টি নিয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সজাগ আছে। গোয়েন্দারা তৎপর আছে। তা ছাড়া আমাদের দেশের মানুষ শান্তি প্রিয়। ‘জঙ্গিবাদ-উগ্রোবাদ’ তারা পছন্দ করে না। যে কারণে জঙ্গিবাদ বাংলাদেশে মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে পারেনি।’ 

পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেন বলেন, ‘বিষয়টি নিয়ে আমরা উদ্বিগ্ন নই। তবে সজাগ আছি। কোন কিছুই উড়িয়ে দিচ্ছি না।’ তবে তিনি রোহিঙ্গাদের হাতে বাংলাদেশের পাসপোর্ট ও ভোটার আইড কার্ড যাওয়ার বিষয়ে বিষ্ময় প্রকাশ করেন। মন্তব্য করেন ‘ভোটার ‘আইডি কার্ড-পাসপোর্ট’ এত সহজ!’

রোহিঙ্গাদের নিয়ে কাজ করা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সাউথইস্ট উইংয়ের দায়িত্বশীল একজন কর্মকর্তা বলেন, ‘এ পর্যন্ত প্রায় দু’লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশের পাসপোর্ট হাতে নিয়ে মালয়েশিয়াসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে অবস্থান করছে। তারা খুবই উগ্র এবং জড়িয়ে পড়ছে নানা ধরনের অপরাধে। এতে করে আমাদের দেশের ভাবমূর্তি মারাত্মকভাকে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।’

আরও খবর