কক্সবাজার জার্নাল ডেস্ক :
কক্সবাজার, কুষ্টিয়া ও যশোরে এক রাতে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ পাঁচজন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে কক্সবাজার ও কুষ্টিয়ায় পুলিশের সঙ্গে কথিত ‘বন্দুকযুদ্ধে’ চারজন নিহত হয়েছেন। আর যশোরে দু’দল ডাকাতের গোলাগুলিতে নিহত হয়েছে একজন।
কক্সবাজারে নিহত তিনজনের মধ্যে দুজন রোহিঙ্গা এবং একজন মাদক কারবারি। নিহত রোহিঙ্গারা মানব পাচারকারি দলের সদস্য। আর কুষ্টিয়ায় নিহত ব্যক্তি ডাকাত দলের সদস্য।
সোমবার রাত থেকে মঙ্গলবার ভোর পর্যন্ত এসব বন্দুকযুদ্ধের ঘটনা ঘটে।
কক্সবাজার: কক্সবাজারের টেকনাফে পুলিশের সঙ্গে কথিত বন্দুকযুদ্ধে দুই রোহিঙ্গা নিহত হয়েছেন, যারা মানবপাচারকারী দলের সদস্য বলে দাবি করছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীটি। এ ঘটনায় চার পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। সোমবার দিবাগত রাত ২টার দিকে উপজেলার শামলাপুর মেরিনড্রাইভ এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলেন, টেকনাফের শামলাপুর রোহিঙ্গা শিবিরের বাসিন্দা আজিম উল্লাহ এবং উখিয়ার জামতলি রোহিঙ্গা শিবিরের আবদুস সালাম। আহত পুলিশ সদস্যরা হলেন, সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) জহিরুল ইসলাম, কনস্টেবল মোবারক হোসেন, মানিক মিয়া, খাইরুল।
টেকনাফ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রদীপ কুমার দাস জানান, গোপন তথ্যের ভিত্তিতে রাতে শামলাপুর মেরিনড্রাইভ এলাকায় অভিযান চালাতে যায় পুলিশ। এ সময় মানবপাচারকারী চক্রের সদস্যরা পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি চালায়।
আত্মরক্ষার্থে পুলিশও পাল্টা গুলি চালায়। তখন পালানোর সময় দুজন গুলিবিদ্ধ হন। তাদের উদ্ধার করে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে নেয়া হলে চিকিৎসক দুজনকেই মৃত ঘোষণা করেন।
অভিযানের সময় দু’টি দেশীয় অস্ত্র (এলজি), ১০টি গুলি উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানান ওসি। মরদেহ দুটি ময়নাতদন্তের জন্য কক্সবাজার সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় মামলার প্রক্রিয়া চলছে। নিহতরা তালিকাভুক্ত মানবপাচারকারী ছিল বলে জানান ওসি।
অন্যদিকে মঙ্গলবার ভোরে কক্সবাজার শহরের কলাতলী কাটাপাহাড় এলাকায় আরেকটি বন্দুকযুদ্ধের ঘটনায় এক মাদক কারবারি নিহত হয়েছেন।
নিহত ব্যক্তির নাম শহীদুল ইসলাম ভুলু। তিনি কক্সবাজার শহরের পাহাড়তলী এলাকার মোহাম্মদ জহিরের ছেলে।
কক্সবাজার সদর থানার ওসি ফরিদ উদ্দিন খোন্দকার বলেন, নিহত শহীদুল ইসলাম ভুলু একজন ‘চিহ্নিত ইয়াবা ব্যবসায়ী’। তার বিরুদ্ধে মাদক ও অস্ত্র আইনে পাঁচটি মামলা রয়েছে। এসব মামলায় দীর্ঘদিন ধরে পলাতক ছিলেন ভুলু।
গোপন সংবাদের ভিত্তিতে সোমবার বিকালে কক্সবাজার শহরের পাহাড়তলী এলাকা থেকে পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে। পরে থানায় এনে জিজ্ঞাসাবাদের পর ভুলুর দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে তাকে নিয়ে ভোরে শহরের কলাতলী কাটাপাহাড় এলাকায় ইয়াবা ও অস্ত্র উদ্ধারে যায় পুলিশের একটি দল।
পুলিশ ঘটনাস্থলে গেলে ভুলুর সহযোগীরা গুলি ছুড়তে থাকে। পুলিশও আত্মরক্ষার্থে পাল্টা গুলি চালায়। গোলাগুলি থামার পর ভুলুকে সেখানে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখা যায়। তাকে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে নেয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
পাবনা: সোমবার রাত আড়াইটার দিকে ঈশ্বরদী উপজেলার সাড়া ইউনিয়নের চাঁনমারি এলাকায় পুলিশের সঙ্গে কথিত বন্দুকযুদ্ধে তিতাস মোল্লা নামে ডাকাত দলের এক সদস্য নিহত হয়েছেন। তার বিরুদ্ধে ডাকাতিসহ ১৭টি মামলা রয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।
নিহত তিতাস মোল্লা ঈশ্বরদী উপজেলার বাঁশেরবাদা গ্রামের মৃত আজিজ মোল্লার ছেলে। তার বিরুদ্ধে ডাকাতিসহ ১৭টি মামলা আছে বলে জানিয়েছেন ঈশ্বরদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বাহাউদ্দিন ফারুকী।
যশোর: যশোর সদরে অজ্ঞাতপরিচয় এক ব্যক্তির গুলিবিদ্ধ মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। যিনি দুই দল ডাকাতের গোলাগুলিতে নিহত হয়েছে বলে ভাষ্য পুলিশের।
মঙ্গলবার ভোরে সদর উপজেলার নোঙ্গরপুরে মাগুরের সড়ক থেকে গুলিবিদ্ধ মরদেহটি উদ্ধার করা হয় বলে জানান যশোর কোতোয়ালি থানার উপপরিদর্শক এসআই মাহবুব।
তিনি বলেন, দুই দল ডাকাতের ‘বন্দুকযুদ্ধের’ খবর পেয়ে পুলিশ সেখানে যায়। পরে তারা রাস্তার ওপর কয়েকটি গাছ কেটে ফেলে রাখা অবস্থায় দেখতে পান। ঘটনাস্থল তল্লাশি চালিয়ে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় এক ব্যক্তিকে পড়ে থাকতে দেখা যায়। তাকে উদ্ধার করে যশোর হাসপাতালে নেয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
এছাড়া ঘটনাস্থল থেকে একটি ওয়ান শুটার গান, তিনটি গুলি, চারটি দা ও তিন জোড়া স্যান্ডেল উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানান এসআই মাহবুব। নিহত ব্যক্তির নামপরিচয় জানা না গেলেও তিনি ডাকাত দলের সদস্য বলে নিশ্চিত পুলিশ।
প্রতিদিনের খবরগুলো আপনার ফেসবুক টাইমলাইনে পেতে নিচের লাইক অপশনে ক্লিক করুন-