মোহাম্মদ উল্লাহ, চকরিয়া
চকরিয়া উপজেলার মাতামুহুরী নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের জন্য শক্তিশালী ড্রেজার মেশিন পারাপারে নদীর বাঘগুজারা পয়েন্টে পাউবোর নিয়ন্ত্রনাধীন রাবারড্যাম চরম হুমকির মুখে পড়েছে।
এ অবস্থায় রাবার ড্যামটি যে কোন মুর্হুতে ফেটে গিয়ে বিকল হয়ে পড়লে মিঠাপানির সেচ সুবিধা নিয়ে চাষাবাদ ব্যাহৃতের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। এতেকরে স্থানীয় কৃষকদের মাঝে উদ্বেগ-উৎকন্ঠা ছড়িয়ে পড়েছে। ঘটনাটির বিষয়ে প্রথমে বাঁধা ও পরে কক্সবাজার পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তা ও চকরিয়া উপজেলা প্রশাসনকে জানালে তাতে ক্ষিপ্ত হয়ে অভিযুক্তরা ড্যামের নিয়োজিত কেয়ারকেটারকে হুমকি দিয়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী।
রাবার ড্যামের কেয়ারটেকার আবদুর রহিম বলেন, গত কয়েকদিন ধরে মাতামুহুরী নদীর বরইতলী-কোনাখালী পয়েন্টে নির্মিত কক্সবাজার পানি উন্নয়ন বোর্ডের নিয়ন্ত্রনাধীন বাঘগুজারা রাবার ড্যামের উপর দিয়ে বালু উত্তোলনের জন্য শক্তিশালী একাধিক ড্রেজার মেশিন পারাপার করছেন বিএমচর ইউপি চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে তাঁর লোকজন।
ইতোমধ্যে গত ৬ মে রাতে দুইটি শক্তিশালী ড্রেজার পারাপারও করেছে তাঁরা। বর্তমানে আরো ৩-৪টি ভারী ড্রেজার পারাপার করার চেষ্ঠা করছেন অভিযুক্তরা।
তিনি বলেন, রাবার ড্যামের উপর দিয়ে এভাবে শক্তিশালী ড্রেজার মেশিন পারাপার না করতে প্রথমে আমি ও ড্যামে কতর্ব্যরত আনসার সদস্যরা বাঁধা দিই। এরপরও তাঁরা ক্ষান্ত হয়নি। সেকারনে ঘটনাটি ইতোমধ্যে পানি উন্নয়ন বোর্ডের কক্সবাজারের নির্বাহী প্রকৌশলী, চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এবং পাউবোর চকরিয়া অঞ্চলের দায়িত্বরত উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী ও শাখা প্রকৌশলীকে জানিয়েছি।
রাবার ড্যামের কেয়ারটেকার আবদুর রহিম জানান, ভারী ড্রেজার পারাপারে যে কোন মুর্হুতে রাবার ড্যামটি ছিঁেড় যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। সেইকারনে ঘটনাস্থলে কর্তব্যরত আনসার সদস্যদের পাহারায় রেখে কয়েকটি ড্রেজার নদীতে আটকে রেখেছি। এতে উল্টো ক্ষিপ্ত হয়ে অভিযুক্তরা আমাকে নানাভাবে হুমকি দিচ্ছেন।
জানতে চাইলে ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন কক্সবাজার পানি উন্নয়ন বোর্ডের চকরিয়া উপজেলার চিরিঙ্গা শাখা কর্মকর্তা (এসও) এসএম তারেক বিন সগীর। তিনি বলেন, ঘটনাটি কর্তব্যরত কেয়ারটেকার ও আনসার সদস্যদের কাছ থেকে জানার পর ইতোমধ্যে পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী আইনগত সহায়তা চেয়ে চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলেছেন। আশাকরি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা নেবেন।
চকরিয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো.আতিক উল্লাহ বলেন, মাতামুহুরী নদীতে ৫১ কোটি টাকা বরাদ্দে নির্মিত পানি উন্নয়ন বোর্ডের দুইটি রাবার ড্যামের সাহায্যে নদীর মিঠাপানি আটকিয়ে প্রতিবছর চকরিয়া-পেকুয়ার অন্তত ৬০ হাজার কৃষক চাষাবাদে সেচ সুবিধা নেন। কিন্তু শক্তিশালী ড্রেজার পারাপারে রাবার ড্যামের কোন ধরণের ক্ষতিসাধন ঘটলে চাষাবাদ নিয়ে চরম অনিশ্চিয়তার ঘটনা ঘটতে পারে। সেইজন্য সবাইকে বিষয়টি নিয়ে গুরুত্ব সহকারে দেখা দরকার।
প্রতিদিনের খবরগুলো আপনার ফেসবুক টাইমলাইনে পেতে নিচের লাইক অপশনে ক্লিক করুন-