ডেস্ক রিপোর্ট :

কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফে ৩৪টি ক্যাম্পে আশ্রিত রোহিঙ্গা মুসলিমরা রমজানের আগমনে আনন্দিত। যদিও তাদের ঘরে সাহরি ও ইফতারের জন্য পর্যাপ্ত খাবার ও পানীয় নেই, তবু তারা খুশি। ভয়ভীতির ইবাদতের এই অভিজ্ঞতা তাদের ছিল না।
তারা এখন রমজানে দল বেঁধে মসজিদে যেতে পারে, শিশুরা উচ্চৈঃস্বরে কোরআন তিলাওয়াত করতে পারে, পরিবারের সবাই মিলে একসঙ্গে ইফতার ও সাহরি খেতে পারে। পারিবারিক ও সামাজিক পর্যায়ে সম্মিলিত ইবাদতের এই সুযোগ তারা আগে কখনো পায়নি।
২০১৭ সালে মিয়ানমার থেকে বিতাড়িত হয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় পাওয়ার পর তারা স্বাধীনভাবে ইবাদতের স্বাদ উপভোগ করছে। মিয়ানমারে তাদের ইবাদত করতে হতো গোপনে। সেনাবাহিনী তাদের ইবাদতে বাধা দিত। কিন্তু এখন কোনো বাহিনী তাদের ভয় দেখাতে আসে না।
রোহিঙ্গা ক্যাম্পের অধিবাসী জাফর আলম বলেন, ‘আমি আনন্দিত। আমি এখানে ইবাদত করতে পারি। আমরা বাংলাদেশের সাধারণ মানুষ ও সরকারের প্রতি কৃতজ্ঞ।’ তবে এই আনন্দের মাঝেও তাদের কপালে রয়েছে দুশ্চিন্তার ভাঁজ। কারণ রমজানে পর্যাপ্ত খাবার ও পানীয়র নিশ্চয়তা নেই বেশির ভাগ রোহিঙ্গা মুসলিমের।
গাছপালাহীন ক্যাম্প এলাকায় তীব্র গরমে গলা শুকিয়ে কাঠ হয় রোজাদারদের। কিন্তু দিন শেষে পর্যাপ্ত খাবারও পান না অনেকে। বিদ্যুতের লাইন না থাকায় গরমের কষ্ট আরো বেড়ে যায় তাদের। আবার কোরআন তিলাওয়াত করতে না পারা এবং জরুরি মাসায়েল সম্পর্কে অজ্ঞতার দুঃখও আছে অনেকের মনে।
কোরআন তিলাওয়াতের ইচ্ছা থাকলেও কোরআনের কপি না থাকায় তা পারছে না অনেক রোহিঙ্গা পরিবার। তার পরও তারা নামাজ, রোজা ও কোরআন তিলাওয়াতের মধ্য দিয়ে রমজান অতিবাহিত করতে চায়।
কুতুপালং ক্যাম্পের অধিবাসী আবদুর রশিদ বলেন, ‘মিয়ানমারে ধর্ম পালন করতে চাইলে আমাদের নানাভাবে হয়রানি করা হতো। মসজিদ বন্ধ করে দেওয়া হয়। কোরআন তিলাওয়াতও নিষিদ্ধ ছিল। একজন ভালো মুসলিম হতে হলে আমাদের কোরআন শিখতে হবে এবং ইসলামের বিধিবিধান জানতে হবে।
ইসলাম আমলের প্রতিদানের ক্ষেত্রে ধনী-দরিদ্রের মাঝে কোনো পার্থক্য করেনি। ইসলাম আমাদের যা নির্দেশ করেছে তা পালন করলেই আমরা জান্নাত লাভ করব।’
(ইউনিসেফের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত প্রতিবেদন অবলম্বনে)
প্রতিদিনের খবরগুলো আপনার ফেসবুক টাইমলাইনে পেতে নিচের লাইক অপশনে ক্লিক করুন-