ডেস্ক রিপোর্ট :
ইয়াবা বিরোধী অভিযানে টেকনাফ এবং উখিয়ায় ভিন্ন রকমের চিত্র পরিলক্ষিত হচ্ছে। টেকনাফে পুলিশ ইয়াবা বিরোধী অভিযানে বাহবা পেলেও তার পার্শ্ববর্তী উখিয়া উপজেলার ক্ষেত্রে সম্পূর্ণ বিপরীত চিত্র। এমনকি টেকনাফে ইয়াবা বিরোধী অভিযানে পুলিশ এলাকাবাসীর সহযোগিতা পেলেও উখিয়ায় উল্টো এক্ষেত্রে পুলিশ পদে পদে নানাভাবে বাঁধা প্রাপ্ত হচ্ছেন বলেও অভিযোগ উঠেছে।
পুলিশ সুত্রে জানা গেছে, টেকনাফে প্রতিদিন এবং প্রায় প্রতিরাতেই ইয়াবা বিরোধী সাঁড়াশি অভিযান অব্যাহত রয়েছে। সীমান্তের এই থানাটিতে সবখানেই পুলিশ একদম নির্বিঘেœ অভিযান চালিয়ে ইয়াবার মরণ ছোবল থেকে জাতিকে পরিত্রাণ দিতে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। পুলিশের সাথে সাথে বিজিবি, র্যাব, কোষ্ট গার্ড ও মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরও এক্ষেত্রে সক্রিয় রয়েছে।
টেকনাফ-উখিয়া দেশের সীমান্তবর্তী এলাকা হওয়ায় ইয়াবা কারবারিদের দৌরাতœ্যও এখানে সঙ্গত কারনেই বেশী। গত বছরের মে মাসে প্রধানমন্ত্রী ইয়াবার বিরুদ্ধে জিরোটলারেন্স নীতি ঘোষণা করার পর থেকেই সীমান্ত এলাকার পরিস্থিতি পাল্টে যেতে শুরু করে। টেকনাফে পুলিশ সাঁড়াশি অভিযান পরিচালনা করে কয়েক শ কারবারিকে আটক করেন।
প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণার পর এ পর্যন্ত টেকনাফেই অন্তত আশি জনেরও বেশী ইয়াবা কারবারি ‘বন্দুক যুদ্ধে’ নিহত হয়েছেন। অথচ এই আশি জন কারবারির জন্য টেকনাফের কোথাও কোন একটি সাংবাদিক সম্মেলনতো দুরের কথা একটি টু-শব্দও উচ্চারিত হয়নি। অথচ উখিয়ার মরিচ্যা বাজার থেকে একজন ইয়াবা কারবারিকে ইয়াবার চালান সহ পুলিশের হাতে আটক হওয়াকে কেন্দ্র করে থানা পুলিশের নিকট অনেক তদবির হয়েছে আটক কারবারিকে ছাড়িযে নিতে।
এমনকি আবদুস শুকুর নামের আটক এই ইয়াবা কারবারিকে মুক্ত করতে ইতিমধ্যে উখিয়া থানা পুলিশের বিরুদ্ধে ‘ঘুষ বাণিজ্যের’ মত জঘন্য অভিযোগ উত্থাপন করে সংবাদ সম্মেলনও করা হয়েছে। উখিয়া থানার ওসি এবং সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা এরকম অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা বলে জানান।
ওই সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়েছে-ইয়াবার চালান সহ পুলিশের নিকট গ্রেফতার হওয়া ব্যক্তি একজন দোকান কর্মচারি। আবার এমনই একজন দোকান কর্মচারি নাকি কয়েকটি ট্রাকের মালিক। তিনি একারনে ট্রাক মালিক সমিতিরও সদস্য। আর এ কারনে একজন ইয়াবা কারবারির জন্য মানব বন্ধন কর্মসুচিরও হুমকি দেয়া হয়েছে। অনুরুপ পালংখালীর একজন কে আটক নিয়েও নানা কৌশলের আশ্রয় নেয় কারবারির দল।
এ বিষয়ে উখিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ আবুল খায়ের জানিয়েছেন, টেকনাফে ব্যাপক ধরপাকড় এবং এবং শতাধিক ইয়াবা কারবারি আতœসমর্পণ করে কারাগারে আটক থাকার পর থেকে উখিয়া সীমান্তে কারবারিদের তৎপরতা বৃদ্ধি পাবার খবরে পুলিশ ব্যাপক অনুসন্ধানের মাধ্যমে প্রকৃত ইয়াবা কারবারিদের সনাক্ত করে। এরপর ইয়াবা বিরোধী রাষ্ট্রীয় নির্দ্দেশনা বাস্তবায়নে পুলিশী অভিযানেও গতি বাড়িয়ে দেয়া হয়।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নির্দ্দেশনা বাস্তবায়নে কিছুতেই পুলিশ পিছপা হবে না। এক্ষেত্রে পুলিশ সর্বশক্তি নিয়োগ করবে। পুলিশের মনোবল ভেঙ্গে দেয়ার কৌশল হিসাবে কারবারিরা যতই মিথ্যা রটনা ছড়িয়ে দিক তাতে কিছুই আসে যায়না।
টেকনাফে ইয়াবা কারবারিদের জন্য পুলিশের কাছে কোন ধরণের তদবির না থাকলেও উখিয়ায় এমন ঘটনার বিপরীত চিত্র নিয়ে নানা কথা উঠেছে। অভিযোগ উঠেছে, সংঘবদ্ধ ইয়াবা করাবারিরা উখিয়াকে ইয়াবা কারবারের নির্বিঘœ রুট করার স্বার্থে কোন কারবারি ধরা পড়ার সাথে সাথেই কৌশলে নানা তদবিরে নেমে পড়েন। সেই সাথে পুলিশের সাঁড়াশি অভিযানকে প্রশ্ন বিদ্ধ করারও চেষ্টা চালানো হচ্ছে।
সচেতন মহলের মতে, ইয়াবা কারবারিদের বিরুদ্ধে উখিয়ায় এ মুহুর্তে চলমান কঠোর অভিযান আরো জোরদার করা না হলে কারবারিরা আরো বেপরোয়া হয়ে উঠবে-তখন পস্তাতে হবে দেশবাসীকে।
প্রতিদিনের খবরগুলো আপনার ফেসবুক টাইমলাইনে পেতে নিচের লাইক অপশনে ক্লিক করুন-