ডেস্ক রিপোর্ট :
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী এনামুর রহমান বলেছেন ঘণ্টায় ২৭ কিলোমিটার বেগে ধেয়ে আসছে ঘূর্ণিঝড় ফণী। সে হিসেবে শুক্রবার (৩ মে) রাত ১১টা নাগাদ মোংলা ও এর ঘণ্টা খানেক পরে রাত ১টায় পায়রা সমুদ্রবন্দর এলাকা অতিক্রম করতে পারে।
তবে ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রটি বাংলাদেশে প্রথম হানা দিতে পারে মেহেরপুর জেলায়। আর সেটি শনিবার (৪ মে) দুপুর ১টার দিকে আঘাত হানতে পারে। এরপর চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার শিবগঞ্জ ও গোমস্তাপুরে আঘাত হানতে পারে। শনিবার বিকেল ৩টার দিকে শিবগঞ্জ অতিক্রম করতে পারে। যার গতি হতে পারে ১৮০ থেকে ২০০ কিলোমিটার। এরপর রাজশাহীর সীমান্তবর্তী উপজেলা পোরশা অতিক্রম করবে শনিবার সন্ধ্যা নাগাদ।
দিনাজপুরের বিরামপুর উপজেলা সদরের উপর দিয়ে মূলকেন্দ্রটি অতিক্রম করার সম্ভাবনা রয়েছে। রাত ১১টার দিকে সীমান্তবর্তী উপজেলা বিরামপুর অতিক্রম করতে পারে। যে কারণে এই এলাকাটিকে ঝুঁকিপূর্ণ মনে করা হচ্ছে। এরপর রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলা হয়ে রংপুর সিটি করপোরেশনের উপর দিয়ে অতিক্রম করবে শনিবার মধ্যরাতে। সর্বশেষ কাউনিয়া উপজেলার উপর দিয়ে কুড়িগ্রামের রাজারহাট দিয়ে ভারতে প্রবেশ করবে রোববার ভোররাতে।
ফণী ভারতের গোহাটির উপর দিয়ে ভুটানে ল্যান্ডফল করবে। তবে ধারণা করা হচ্ছে ল্যান্ডে আঘাত করার পর ক্রমে দুর্বল হয়ে পড়তে পারে ফণী। এতে মেহেরপুরের তুলনায় বিরামপুর, রংপুর শহরে বাতাসের তীব্রতা কম অনুভূত হবে।
এছাড়া ধারণা করা হচ্ছে, বিশাল আকৃতির এই ঘূর্ণিঝড়টি শুক্রবার সন্ধ্যা রাতেই আঁচড় কাটতে পারে বাংলাদেশের সীমানায়। রাত ৯টা নাগাদ প্রথমে শ্যামনগরের উপকূলীয় এলাকায় আঘাত হানতে পারে। এরপর যশোর, খুলনা, মেহেরপুর, রাজশাহী, বগুড়া, জয়পুরহাট, দিনাজপুর, রংপুর, কুড়িগ্রাম হয়ে ভারতে প্রবেশ করবে। তবে এর পার্শ্ববর্তী জেলা জয়পুরহাট, ঠাকুরগাঁও, নীলফামারী ও লালমনিরহাটকেও ক্ষতিগ্রস্ত করার সম্ভাবনা রয়েছে।
আবার খানিকটা ডানে টার্ন নিয়ে মেহেরপুর, পাবনা, সিরাজগঞ্জ, বগুড়া, জামালপুরের সরিষাবাড়ী, কিশোরগঞ্জ হয়ে ভারতে প্রবেশ করতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। এমনটি হলে ময়মনসিংহ, নেত্রকোনা জেলা ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। তবে ফণীর প্রভাবে শুক্রবার দিনের প্রথম ভাগ থেকেই দেশের অনেক জায়গায় বৃষ্টি হতে পারে।
আবহাওয়া অধিদপ্তর বৃহস্পতিবার রাত ৯টার বুলেটিনে (বত্রিশ নম্বর) বলেছে, ঘূর্ণিঝড় ফণীর কারণে বঙ্গোপসাগর উত্তাল হয়ে উঠেছে। মোংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দরসমূহকে ৪ নম্বর স্থানীয় হুঁশিয়ারি সংকেত নামিয়ে তার পরিবর্তে ৭ নম্বর বিপদ সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। চট্টগ্রাম সমুদ্র বন্দরকে ৬ নম্বর বিপদ সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে এবং কক্সবাজার সমুদ্রবন্দরকে ৪ নম্বর স্থানীয় হুঁশিয়ারি সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।
আবহাওয়ার সমুদ্রবন্দরের সতর্কবার্তায় বলা হয়েছে, পশ্চিমমধ্য বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছে ঘূর্ণিঝড় ফণী। ঘূর্ণিঝড় ফণীর কেন্দ্রের ৭৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ১৬০ কিলোমিটার, যা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ১৮০ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। শুক্রবার (৩ মে) বিকেলে বাংলাদেশে আঘাত হানতে পারে ফণী।
বৃহস্পতিবার (২ মে) দুপুরে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. এনামুর রহমান বলেন, ঘূর্ণিঝড়টি বামে বাক নিয়ে ভারতের পশ্চিমবঙ্গে প্রবেশ করতে পারে। এমনটি হলে এটি শক্তিহারিয়ে দুর্বল হয়ে পড়বে। এতে বাংলাদেশের ক্ষতির সম্ভাবনা কমে যাবে। আর যদি ডানে টান নিয়ে স্থলসীমা দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করে তাহলে ক্ষয়ক্ষতি বাড়তে পারে।
প্রতিদিনের খবরগুলো আপনার ফেসবুক টাইমলাইনে পেতে নিচের লাইক অপশনে ক্লিক করুন-