কক্সবাজারের বিভিন্ন স্থানে চলছে বলীখেলা নামে জুয়ার আসর: সংঘর্ষের আশংকা

পিএমখালী ইউনিয়নের ছনখোলাতে বলীখেলা নামে জুয়ার আসর থেকে ছবিটি ধারণ করা হয়।

সাইফুল ইসলাম,কক্সবাজার জার্নাল

বৈশাখ মাসকে টার্গেট করে কক্সবাজার জেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে বলীখেলার আড়ালে চলছে রমরমা জুয়ার আসর। এমনকি বলীখেলা দিতে মরিয়া হয়ে উঠেছে ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মী ও স্থানীয় প্রভাবশালী ও বেকার যুব সমাজ। এর কারণে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন সাধারন মানুষ। অভিযোগ উঠেছে, কোন কোন ইউনিয়নে দুইদিনের মাইকিং করে ৪ দিনও চালিয়ে যাচ্ছে বলীখেলা নামে এসব জুয়া খেলা।

বলীখেলা নামে জুয়ার আসর বসাতে মরিয়া হয়ে উঠেছে বৃহত্তর ঈদগাঁওয়ের চৌফলদন্ডী, পোকখালী, ঈদগাঁও, জালালাবাদ , ভারুয়াখালী, পিএমখালী ইউনিয়নের বিভিন্ন জায়গায়। এসব বলীখেলা নামে জুয়ায় সক্রিয় হয়ে উঠেছে চিহ্নিত জুয়াড়ি চক্র। ইতোমধ্যে আয়োজক কারীদের সাথে চুক্তিবদ্ধ হয়েছে জুয়ার। প্রশাসন থেকে বলী খেলার অনুমতি নিতে পোকখালী ইউনিয়নের কয়েকজন ক্ষমতাসীন দলের নেতা মরিয়া হয়ে উঠেছে। পবিত্র মাহে রমজানের আগে বলীখেলার নামে জুয়ার আসর বসালে এলাকার ধর্মপ্রাণ মুসল্লীদের সাথে সংঘর্ষের আশংকাও রয়েছে বলে এলাকার লোকজন। এছাড়াও প্রকাশ্য দিবালোকে জমজমাট জুয়ার আসর বসালে দল ও প্রশাসনের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হচ্ছে বলে জানান সচেতন মহল।

স্থানীয়রা জানান, প্রতিবছরের ন্যায় এ বছরও বৈশাখী মেলার নাম দিয়ে বলীখেলার নামে জুয়ার আস্তানা গড়ে তুলে এলাকার কতিপয় বেকার যুবক। তাদেরকে সহযোগিতা করে ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মী, স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা। জেলা, উপজেলা এবং স্থানীয় জনপ্রতিনিধি চেয়ারম্যানদের অনুমতি নেওয়া পর্যন্ত যত অর্থ খরচের প্রয়োজন হয় সবগুলো সঙ্গবদ্ধ জুয়াড়ি চক্রের প্রধান জোগান দেয় বলে জানান স্থানীয়রা।

প্রাপ্ত তথ্য মতে, বলীখেলার আড়ালে সবচেয়ে বেশি জুয়ার আসর বসে চৌফলদন্ডী, পিএমখালী এবং পোকখালী ইউনিয়নে। এসব জুয়ার আসরের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে গিয়ে একাধিক বার এলাকার সাধারণ মানুষের সাথে আয়োজক কমিটির মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া, এমনিক গোলাগুলির, সংঘর্ষও হয়েছিল। এবারও সংঘর্ষের মত ঘটনা ঘটতে পারে বলে আশংকা করেন সাধারণ জনগণ।

পিএমখালী ছনখোলা এলাকার মো, জসিম নামে এক ব্যক্তি বলেন, জেলা, উপজেলা প্রশাসন থেকে বলীখেলার নামে ঐতিহ্যবাহী একটি সংস্কৃতির অনুমতি এনে ২/৩ দিন ধরে সুবিধা জনক স্থানে প্রকাশ্য দিবালোকে জমজমাট জুয়ার আসর বসায় গুটি কয়েক বেকার যুবক। তাদের সহযোগিতা করে কতিপয় কিছু নেতা ও জনপ্রতিনিধি। বলীখেলা একটি ঐতিহ্যবাহী সংস্কৃতি কিন্তু এই সংস্কৃতির আড়ালে প্রকাশ্য দিবালোকে জমজমাট জুয়ার আসর গড়ে তোলা কোন সভ্য সমাজে হতে পারে না। মুলত তারা বলীখেলার অনুমতি পেলেই জুয়ার আসর বসাতে অনুমতি পায় না। উপজেলা ও স্থানীয় প্রশাসনকে ম্যানেজ করে দিব্যি চালিয়ে যায় জুয়াখেলা।

আলী আকবর নামে চৌফলদন্ডীর অপর এক যুবক জানান, প্রতি বছর বলীখেলার আড়ালে জুয়ার আসর বসাতে গিয়ে একাধিক বার স্থানীয়দের সাথে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এমনকি জুয়ার আস্তানায় চাঁদা দাবী করতে গিয়েও ঘটেছে একাধিক ঘটনাও। বর্তমান পেক্ষাপটে বেকারত্ব বাড়ায় জুয়া খেলায় অংশ নিতে বিভিন্ন স্থানে ডাকাতি, ছিনতাই, চুরির মত ঘটনাও ঘটবে বলে আশংকা করেন তিনি। অপরদিকে উঠতি বয়সী ছাত্রদের অভিভাবকরাও রয়েছে আতংকে। জুয়াখেলায় অংশ নিতে অর্থ না পেলে অপরাধ জগতে পা বাড়াতে পারে তরুণ বয়সের ছাত্ররা এমন তাই জানালেন এক অভিভাবক।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে কক্সবাজার সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত ওসি মো. খায়রুজ্জামান বলেন, ঐতিহ্যহাসিক সংস্কৃতি হিসেবে বলীখেলা দিতে পারে। কিন্তু বলীখেলার আড়ালে কেউ জুয়ার আসর বসালে কঠোর ব্যবস্থা এবং আস্তানা গুড়িয়ে দেওয়া হবে।

আরও খবর