অনলাইন ডেস্ক – বিয়ের আশ্বাস দিয়েছিলেন প্রেমিক। কিন্তু নির্ধারিত দিনে বিয়ে করতে না আসায় সেই প্রেমিক ভিডিও কলে রেখে ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন ইডেন কলেজের এক ছাত্রী।
ঘটনাটি ঘটে গত রবিবার, রাজধানীর কাঁঠালবাগান এলাকায়।
জানা গেছে, রবিবার সন্ধ্যায় ঢাকার কাঁঠালবাগান এলাকার ৭৪/১ ফ্রি স্কুল স্ট্রিটের চারতলা বাড়ির চতুর্থ তলার একটি কক্ষ থেকে গলায় ফাঁস লাগানো অবস্থায় ইডেন কলেজের অনার্স দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী সায়মা কালাম মেঘার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।
ওই দিন রাতেই কলাবাগান থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা দায়ের করে নিহতের চাচা আবুল বাশার।
মামলায় দাবি করা হয়, ঝালকাঠি শহরের পূর্ব চাদকাঠি এলাকার মাহিবী হাসান (২৫) নামের এক যুবকের প্ররোচনায় গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করেছে মেঘা।
সোমবার দুপুরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে মেঘার লাশের ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের সদস্যদের কাছে লাশ হস্তান্তর করে কলাবাগান থানা পুলিশ।
মেঘার মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে মেঘার বাবা আবুল কালাম আজাদ (৫৫) জানান, ঝালকাঠি সরকারি মহিলা কলেজে উচ্চ মাধ্যমিক পড়ার সময় শহরের পূর্বচাদকাঠি এলাকার মৃত নফিসুর রহমানের ছেলে বরিশাল হাতেম আলী কলেজের ছাত্র মাহিবী হাসানের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে মেঘার। ২০১৭ সালে মেঘা ঢাকা ইডেন কলেজে ভর্তি হয়। কাঁঠালবাগান এলাকায় এক বাড়িতে পেয়িং গেস্ট হিসেবে থাকতো মেঘা।
তিনি বলেন, ঢাকায় গিয়ে মাহিবী হাসান প্রায়ই মেঘার সঙ্গে দেখা করতো। মাস ছয়েক আগে মেঘা এবং মাহিবী বিয়ের ব্যাপারে একমত হলেও বাদ সাধেন মাহিবীর মা ঝালকাঠি কির্ত্তীপাশা হাসপাতালের নার্স সেলিনা বেগম।
মেঘার বান্ধবীদের বরাত দিয়ে মেঘার চাচা আবুল বাশার জানান, শবেবরাতের দুদিন আগে শুক্রবার ঢাকায় কাউকে না জানিয়ে তাদের বিয়ে করার কথা ছিল। এ জন্য মেঘা কিছু কেনা কাটাও করেছিল। কিন্তু মাহিবী কথা দিয়েও বিয়ের জন্য আসেনি। এ নিয়ে মোবাইল ফোনে তাদের ঝগড়া হয়।
তিনি জানান, ঘটনার দিন রবিবার বিকালে মৃত্যুর কিছুক্ষণ আগেও মেঘা এবং মাহিবীর ইমোতে কথা হয়। ভিডিও কলে কথা বলার সময়ই মেঘা তার প্রেমিক মাহিবীকে জানায়- সে যদি বিয়ে না করে তাহলে এখনই সে আত্মহত্যা করবে এবং মাহিবীকে ভিডিও কলে রেখে ফ্যানের সঙ্গে ওড়না পেঁচিয়ে মেঘা ঝুলে পড়ে। মর্মান্তিক এ দৃশ্য দেখেও মাহিবী হাসান মেঘাকে বিয়ের আশ্বাস দেয়নি।
মেঘার মৃত্যু নিশ্চিত হয়ে মাহিবী ঝালকাঠিতে মেঘার মা রুবিনা আজাদকে মোবাইল ফোনে মেঘার মৃত্যর বিষয়টি জানায়। মেঘার মা বিষয়টি ঢাকায় মেঘার বান্ধবী আনিকাকে জানালে আনিকা কিছু বন্ধুবান্ধব নিয়ে কাঁঠালবাগানের বাসায় যায়।
তারা বাসায় গিয়ে বাড়ির মালিকের সহায়তায় দরজা ভেঙে ঝুলন্ত অবস্থায় মেঘাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেলে কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানকার জরুরি বিভাগের চিকিৎসকরা মেঘাকে মৃত ঘোষণা করেন।
কলাবাগান থানার এসআই সেলিম রেজা গণমাধ্যমকে বলেন, মেঘার চাচা যে ইউডি মামলা করেছেন তার ভিত্তিতে তদন্ত চলছে। মেঘার আত্মহত্যার পেছনে কারো প্ররোচনা থাকলে তা তদন্তে বেরিয়ে আসবে। তখন দণ্ডবিধির ৩০৬ ধারায় প্ররোচনা দানকারীদের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেয়া হবে।
প্রতিদিনের খবরগুলো আপনার ফেসবুক টাইমলাইনে পেতে নিচের লাইক অপশনে ক্লিক করুন-