ডেস্ক রিপোর্ট – কামরুন্নাহার মনি। তার অনাগত সন্তানের বয়স পাঁচ মাস। নুসরাত হত্যাকাণ্ডে সরাসরি অংশ নেওয়া মনি সব অপরাধ স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন। জবানবন্দিতে তিনি তার গর্ভে সন্তানের বয়স পাঁচ মাস বলে জানিয়েছেন। গত শনিবার আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি শেষে তাকে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে।
গর্ভে সন্তান ধারণ করে এরকম একটি নৃশংস হত্যাকাণ্ডে জড়ানোয় অবাক হয়েছেন সবাই।
সোনাগাজীর নারী কর্মী মর্জিনা আক্তার জানান, কামরুন নাহার মনির পেটে যে সন্তান, সে নিজ থেকে দুনিয়াতে আসতে চায়নি। যে মা তাকে দুনিয়াতে আনতে চেয়েছেন; সেই মা কীভাবে এমন কাজ করতে পারেন? এই সন্তানের কী অপরাধ ছিল? তাকে কেন জন্মের আগে জেল খাটতে হচ্ছে।
বিটুবি রানি গুহ নামে এক শিক্ষিকা জানান, কামরুন নাহার মা হবে। পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ শব্দ মা। প্রত্যেক নারী এক সময় মা শব্দ শোনার প্রতীক্ষায় থাকে। গর্ভে সন্তান আসলে প্রত্যেক মা সব সময় ভালো কাজে লিপ্ত থাকে। কামরুন নাহার মনি ভালো মা-তো দূরের কথা, মানুষের মধ্যেও পড়েন না। গর্ভে সন্তান নিয়ে নৃশংসভাবে আরেকজন মেয়েকে আগুনে পুড়িয়ে হত্যা করেছেন মনি। তিনি নারী নামে কলংক।
এর আগে শনিবার বিকেল সাড়ে ৪ টার দিকে কড়া নিরাত্তার মধ্য দিয়ে ফেনীর সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শরাফ উদ্দিন আহম্মদের আদালতে মনিকে হাজির করে করে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। প্রায় ছয় ঘণ্টাব্যাপী জবানবন্দি রেকর্ডের পর রাত ১০টার দিকে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) চট্টগ্রাম বিভাগের স্পেশাল পুলিশ সুপার মো. ইকবাল।
তিনি বলেন, নুসরাত জাহান রাফি হত্যার কিলিং মিশিনে সরাসরি জড়িত ছিলেন কামরুন্নাহার মনি। তিনি নুসরাতের বুকসহ শরীর চেপে ধরেন। এর আগে তিনি বোরকার ব্যবস্থা করে দেন। উম্মে সুলতানা নুসরাতের পা বেঁধে চলে যাওয়ার সময় মনি তাকে শম্পা বলে ডাকেন। এই শম্পা নামটি পপি ও মনির দেওয়া। এই কিলিং মিশনে আর কোনো ছদ্মনাম ব্যবহার হয়নি। মনি আরও জানিয়েছেন, বর্তমানে তিনি ৫ মাসের অন্তঃস্বত্তা।
মো. ইকবাল আরও বলেন, কয়েক ঘণ্টাব্যাপী এ স্বীকারোক্তিমূলক জবাবনন্দিতে মনি হত্যাকাণ্ডের ব্যাপারে আরও চাঞ্চল্যকর অনেক তথ্য দিয়েছেন।
তবে তদন্তের স্বার্থে তা উল্লেখ করেনি এই কর্মকর্তা।
কামরুন নাহার মনিকে গত ১৫ এপ্রিল সোনাগাজী থেকে গ্রেফতার করা হয়। পরে ১৭ এপ্রিল তাকে ৫ দিনের রিমান্ডে পাঠান আদালত। গত শুক্রবার মনিকে নিয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শনে যায় পিবিআই। সে সময় মনি কিভাবে নুসরাতকে হত্যা করা হয়েছে তার বর্ণনা দেন। তার দেওয়া তথ্য মতে পিবিআই বোরকার দোকান পরিদর্শন করে।
প্রতিদিনের খবরগুলো আপনার ফেসবুক টাইমলাইনে পেতে নিচের লাইক অপশনে ক্লিক করুন-