সেন্টমার্টিন দ্বীপে যেতে পারবে দৈনিক ১২৫০ পর্যটক

সেন্টমার্টিন দ্বীপে যেতে পারবে দৈনিক ১২৫০ পর্যটক

দীপক শর্মা দীপু :

দেশের একমাত্র প্রবাল দ্বীপ সেন্টমার্টিনে যেতে পারবেন প্রতিদিন মাত্র ১২৫০ জন পর্যটক। তাও আগে অনলাইনে নিবন্ধন করে সেন্টমার্টিন যেতে হবে। সেন্টমার্টিনের অস্থিত্ব রক্ষায় পরিবেশ সংরক্ষনে রাত্রিযাপনের উপরও বিধি নিষেধ আরোপ করা হতে পারে। এছাড়া আরো নতুন নতুন এ্যকশন প্ল্যান নেয়া হচ্ছে। বিষয়টি জানালেন পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. সুলতান আহমদ।

তিনি ১৬ এপ্রিল পরিবেশ অধিদপ্তরের উদ্যোগে অনুষ্ঠিত ‘কক্সবাজারের পরিবেশ ব্যবস্থাপনা’ বিষয়ক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, এখন থেকে ইচ্ছা করলে যখন তখন সেন্টমার্টিন যেতে পারবেননা। এই জন্য সেন্টমার্টিন ভ্রমনে ইচ্ছুকদের আগে থেকে অনলাইনে নিবন্ধন করতে হবে। তা দৈনিক ১২৫০ জন পর্যটক ভ্রমনে যেতে পারবেন। সেন্টমার্টিন সুক্ষায় এ্যাকশন প্ল্যান নেয়া হচ্ছে। এই প্ল্যানে সেন্টমার্টিনে রাত্রিযাপনের উপর বিধি নিষেধের সিদ্ধান্ত হতে পারে। তিনি আরো বলেন, সেন্টমার্টিন দেশের বড় সম্পদ। প্রকৃতি পরিবেশ সুরক্ষা করা সম্ভব না হলে অচিরে সেন্টমার্টিনের পরিবেশ হবে ভয়াবহ।

অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (মানব সম্পদ উন্নয়ন) এসএম সরওয়ার কামালের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সেমিনারে আলোচনায় অংশ নেন কক্সবাজার উন্নয়ন কতৃপক্ষের প্রতিনিধি লে. কর্ণেল আনোয়ারুল ইসলাম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবেদিল ইসলাম, পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিচালক ও রিও প্রকল্পের পরিচালক মোহাম্মদ জিয়াউল হক, যুগ্ন পরিচালক মো: ফেরদৌস হোসেন খান, কক্সবাজার প্রেসক্লাবের সভাপতি মাহবুবুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক আবু তাহের ও কক্সবাজার বন পরিবেশ সংরক্ষণ পরিষদের সভাপতি সাংবাদিক দীপক শর্মা দীপু।

সেমিনারে বলা হয়, ইসিএ এলাকা হিসেবে বর্তমানে সেন্টমার্টিন, সোনাদিয়া ও সমুদ্র সৈকত এখন পরিবেশগত ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে। এ জন্য মাস্টার প্ল্যানের মাধ্যমে উন্নয়ন কাজ করতে হবে। ফিরিয়ে আনতে হবে আগের পরিবেশ। পরিকল্পনা ছাড়া স্থাপনা গড়ে উঠায় দুষনের কবলে পড়েছে হোটেল মোটেল জোন । ৩২৫ টি হোটেলের মধ্যে পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র নিয়েছে মাত্র ৪৮টি। স্যুয়ারেজ ট্রিটমেন্ট প্ল্যান (এসটিপি) বাস্তবায়ন করেছে মাত্র ৬ টি হোটেল। কক্সবাজারে প্রতিদিন কঠিন ও তরল বর্জ্য সৃষ্টি হয় ৫০ থেকে ৭০ টন। ১২ টন বর্জ্য শোধানাগারের ব্যবস্থা রয়েছে। কিন্তু শোধানাগারে বর্জ্য আসে মাত্র ২ টন। এই তথ্য থেকে বুঝা যায়, কক্সবাজার পর্যটন শহরের পরিবেশ দুষনের ভয়াবহ অবস্থা।

সেমিনারে আরেক তথ্যে বলা হয়, দিন দিন পানির স্তর নিচে নেমে যাচ্ছে। এরমধ্যে পানি ব্যবহারের চেয়ে অপচয় হয় বেশি। পাহাড় কাটার মাটি, হ্যাচারির বর্জ্য ও হোটেল মোটেলের বর্জ্য সরাসরি যাচ্ছে সাগর ও নদীতে। বাঁকখালী নদী ভরাট, দখল হওয়ার কারনে শহরের লবনাক্ত পানি বেড়ে গেছে।

সেমিনারে বলা হয়, এসব নানা দুষনের কারনে কক্সবাজারে পর্যটক আসা হ্রাস পাবে এবং স্থানীয়দের জন্যও বসবাস অনুপযোগি হয়ে পড়বে কক্সবাজার। কক্সবাজারের পরিবেশ সুরক্ষার এ সময় এখনো ফুরিয়ে যায়নি। তবে দেরি করা যাবেনা। দ্রুত উদ্যোগ নেয়া দরকার। এজন্য সমন্বিত উদ্যোগে কাজ করতে হবে।

পরিবেশ অধিদপ্তরের তত্বাবধানে খুরুস্কুলে পরিবেশবান্ধব ২২৫ পরিবারের জন্য আবাসন ভবন তৈরির করবে বলে সেমিনারে জানানো হয়।

আরও খবর