হাসান তারেক মুকিম,রামু :
রামুতে পুরো উপজেলা জুড়ে ছেয়ে গেছে তামাক চাষ। অব্যাহত তামাক বিষের কারনে চরম ভাবে বিপন্ন হচ্ছে এ এলাকার প্রাকৃতিক পরিবেশ। ককসবাজারে রামু উপজেলা সবুজ খাদ্য শস্যের ভান্ডার হিসাবে পরিচিতি থাকলেও তামাক চাষের কারনে এখন এ উপজেলায় নেমে এসেছে সবুজ খাদ্যদ্রব্যের আকাল।
এক সময়ে গর্জনিয়া বাজার, রামু ফকিরা বাজার হতেই সিংহভাগ কাচাঁ তরিতরকারি সমগ্র ককসবাজারের বিভিন্ন হাট বাজারে সরবরাহ করা হতো, কিন্তু বর্তমানে ব্যাপক হারে তামাক চাষের কারনে নিত্য প্রয়োজনীয় শাক সবজি সূদুর চট্রগ্রাম শহরের আশ পাশ এলাকা থেকে এখানকার ব্যবসায়ীরা এনে দ্বিগুন দামে বিক্রি করছে। এতে সাধারন মানুষের খাদ্য তালিকায় সবুজ শাক সবজির অভাবতো দেখা দিচ্ছেই, পাশাপাশি তারা ভিটামিনের তথা পুষ্টিহীনতার কারনে নানান রোগে ভুগছে। বিগত বেশ কয়েক বছর ধরে উপজেলার গর্জনিয়া, কচ্ছপিয়া,কাউয়ারখোপ, ফতেখারকুল রাজারকুল, খুনিয়াপালং ইউনিয়নে অপ্রতিরোধ্য তামাক চাষের ফলে,এ এলাকায় মাটির উর্বরতা শক্তি কমে যাচ্ছে এতে করে মানুষের জীবন ধারনের অপরিহার্য্য খাদ্য শস্যের উৎপাদনের মাত্রা দিন দিন কমে আসছে। দিন দিন তামাক চাষের প্রসারতা বৃদ্ধি পাওয়ায় এখানকার শত শত একর জমিতে তামাকের বিষ ছড়িয়ে পড়েছে। এক শ্রেনীর টোব্যাকো কোম্পানীর লোভের ফাঁদে পড়ে কৃষকরা তামাক চাষে জড়িয়ে পড়ছে। এসব টোব্যাকো কোম্পানী কৃষকদের স্বল্প সুদে ঋনসহ নানা ভাবে উৎসাহিত করে আসছে।
যার ফলে অতিতে কৃষকরা যেখানে সোনালী ধান ও সবুজ ফসলাদী ফলাত, সেখানে কৃষকরা এখন অতিউৎসাহী হয়ে তামাক চাষ করছে। অপরদিকে চুল্লি তৈরী করে তামাক পাতা শুকানোর জন্য পুড়ানো হচ্ছে শত শত মন কাঠ। এতে করে উজাড় হচ্ছে বনাঞ্চল, পাশাপাশি তামাক পুড়ানো দুষিত ধোয়ায় অক্সিজেনের মাত্রা কমে পৃথিবীতে বৃদ্ধি পাচেছ নাইট্রোজেনের পরিমান ।
যার ফলে প্রতিনিয়ত হুমকির সম্মুখীন হচ্ছে পরিবেশের ভারসাম্য। এছাড়া তামাক পুড়ানোর বিষক্রিয়ার ফলে মানুষ স্বর্দি কাশি,এজমা আলসার ও ক্যান্সারসহ নানাবিদ দুরারোজ্ঞ ব্যাধিতে আক্রান্ত হচ্ছে।
বর্তমান সরকার দেশজুড়ে তামাক চাষ বন্ধ ও তামাকের ভয়াবহতা সম্পর্কে গনসচেতনামুলক প্রচার করে আসছে,সেখানে রামু উপজেলায় চলছে অব্যাহত ভাবে তামাক চাষ। সরকারী ও বেসরকারীভাবে প্রাকৃতিক ভারসাম্য রক্ষার্থে কৃষকদের সবুজ ফসলাদী চাষে উদ্বুদ্ধ ও সহযোগীতা করে তামাক চাষ বন্ধ করতে হবে।
এতে করে আমাদের বনাঞ্চল রক্ষা পাবে, পাশাপাশি চরমভাবে স্বাস্থ্য ঝুঁকি ও পরিবেশ বিপর্যয়ের হাত থেকে রক্ষা পাবে রামুর লক্ষ লক্ষ মানুষ।
প্রতিদিনের খবরগুলো আপনার ফেসবুক টাইমলাইনে পেতে নিচের লাইক অপশনে ক্লিক করুন-