দৃশ্যপটঃ খুরুস্কুল-চৌফলদন্ডী ফেরীঘাট

আসছে ইয়াবা,হচ্ছে লুটপাট !

শাহিদ মোস্তফা শাহিদ, সদর

কক্সবাজার সদরের খুরুস্কুল- চৌফলদন্ডী ফেরীঘাট এবং পার্শ্ববর্তী বেড়ীবাঁধ এলাকা এখন ইয়াবা খালাসের নিরাপদ জোনে পরিনত হয়েছে। আইনশৃংখলা বাহিনীর কঠোর নজরদারি থাকা সত্বেও ইতিমধ্যে ইয়াবার বড় দুটি চালান বেড়ীবাঁধ ও চৌফলদন্ডীর ঘাটে খালাস হয়েছে বলে নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে।

যদিও বা খালাসের সময় স্থানীয়রা আঁচ করতে পেরে বিপুল পরিমাণ ইয়াবা ছিনতাই করেছে দুটি চক্র। নিজেদের সাধু সাঝতে অল্প ইয়াবা স্থানীয় প্রভাবশালীদের হস্তান্তর করে আরো বিপুল পরিমাণ ইয়াবা নিজেদের হেফাজতে রেখেছে পাচারকারীরা।

পাচারের পিছনে চৌফলদন্ডীর রাখাইন সম্প্রদায়ের বেশ কয়েকজন জড়িত বলে অনুসন্ধানে উঠে এসেছে। জানা গেছে, বিগত মাস দুয়েক আগে চৌফলদন্ডী দক্ষিণ পাড়ার সাবেক মেম্বার উচাছিং রাখাইনের ছেলে ইয়াবার মামলায় কয়েকবার কারাগারে যাওয়া কিউবা রাখাইনের ভাই হেরী রাখাইন সাগর পথে মায়ানমার থেকে ৬ লক্ষ পিস ইয়াবা নিয়ে আসে । স্থানীয় লোকজন দেখতে পেয়ে সেখান থেকে ১ লক্ষ পিস ইয়াবা লুট করে নেয় একটি চক্র। পরে বাকী ৫ লক্ষ পিস ইয়াবা নিয়ে দ্রুত ঘটনাস্থল ত্যাগ করে হেরী রাখাইন ও তার নেতৃত্বে বোট মাঝি ছিতামং রাখাইনসহ আরো কয়েকজন।

অপরদিকে গত ২১ ফেব্রুয়ারী অজ্ঞাতনামা পাচারকারীরা এক লক্ষ পিস ইয়াবা সাগর পথে চট্রগ্রামে পাচার করার সময় গোপন সূত্রে খবর পেয়ে তাদের বহনকৃত বোটটি ধাওয়া করে ডিবি পুলিশ। অবস্থা বেগতিক দেখে পাচারকারী চক্রের সদস্যরা বোটটি খুরুস্কুলের দিকে চলে আসে। পরে তারা বোট পেলে ইয়াবাগুলো নিয়ে খুরুস্কুলের জনৈক সিএনজি চালক জাহাঙ্গীরের বাড়িতে আশ্রয় নেয়। সুচতুর সিএনজি চালক জাহাঙ্গীরের যোগসাজশে রিয়াজ উদ্দিন মিনুর ছেলে সোহেল নামের এক প্রভাবশালী ব্যক্তি এসে ইয়াবা গুলো ছিনতাই করে নিয়ে যান।

এভাবেই প্রতিনিয়ত ইয়াবার চালান খালাস,প্রবেশ ও লুট হওয়ার ঘটনায় স্থানীয় সচেতন সমাজের মধ্যে অজানা আতংক বিরাজ করছে বলে জানা গেছে। নির্ভরযোগ্য একটি সূত্র থেকে জানা যায়, রাখাইনদের বড় একটি উৎসবকে ঘিরে মায়ানমারে অবস্থানরত চৌফলদন্ডীর কিউবা রাখাইনের সিন্ডিকেটের সদস্যরা সাগর পথে আরো একটি বিশাল ইয়াবার চালান আনতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

অনুসন্ধানে আরো জানা গেছে, চৌফলদন্ডীর দক্ষিণ পাড়ার সাবেক মেম্বার উচাছিং রাখাইনের ছেলে কিউবা রাখাইন বর্তমানে মায়নমারে অবস্থান করছে। সেখান থেকে বাংলাদেশে বিশাল একটি ইয়াবা সিন্ডিকেট গড়ে তুলে। বাংলাদেশ তার সেকেন্ড ইন কমান্ড হিসেবে কাজ করে তার ছোট ভাই হেরী রাখাইন। মায়ানমার থেকে সাগর পথে সু -কৌশলে তাদের নিজস্ব ফিশিং ট্রলার করে চৌফলদন্ডী ঘাটে নিয়ে আসে। পরে নাপ্পী,লবন, মৎস্য বাহী যানবাহন নিয়ে সারাদেশে পাচার করে আসছে বলে তদন্ত উঠে এসেছে। আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর কঠোর অবস্থানেও কি ভাবে তারা ইয়াবা এনে পাচার করে আসছে প্রশ্ন তুলেন এলাকাবাসী। তবে অভিযোগ রয়েছে এই হেরী রাখাইনের সাথে চৌফলদন্ডী আরএফএফ পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ সুবেদার হেলাল মিয়ার সু সম্পর্ক রয়েছে।

বর্তমানে হেরী রাখাইনের হেফাজতে আনুমানিক ৫ লক্ষাধিক ইয়াবা রয়েছে বলে এলাকায় জনশ্রুতি রয়েছে। এলাকার লোকজন র্যাব ,পুলিশ ও আইন শৃংখলাবাহীনির হস্তক্ষেপ কামনা করে বলেন চিহ্নিত ইয়াবা পাচারকারীদের আটক পূর্বক আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্ত মুলক শাস্তি এবং স্পট গুলোতে নিয়মিত টহল জোরদার করার দাবী জানায়।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে কক্সবাজার সদর মডেল থানার ওসি তদন্ত মোঃ খায়রুজ্জামান জানান, মাদকের বিরুদ্ধে পুলিশ হার্ট লাইনে রয়েছে।চিহ্নিত ইয়াবা সম্রাট কিউবা রাখাইন মায়ানমারেে পলাতক থাকায় সহজে আটক করা যাচ্ছে না। সোর্স নিয়োগ করে ইয়াবা ব্যবসা এবং পাচারের যারা জড়িত তাদেরকে আইনের আওতায় আনা হবে বলে জানান তিনি।

আরও খবর