আলমগীর মাহমুদ
উখিয়া ষ্টেশনের দক্ষিণে পাতাবাড়ি মন্দির। শৈলের ডেবার যে রোডটি আরাকান রোড থেকে বাইপাস হয়ে যাওয়া, তার শুরুর সংযোগস্থলে স্বপনদের বাড়ি। সুবর্ণ মাষ্টার যিনি ১৯৯৪, ১৯৯৫, ১৯৯৬, ১৯৯৭ সাল পর্যন্ত উখিয়া কলেজে নিজ অর্থে সমস্ত চক ডোনেশন দিতেন উনার বাড়ির সাথে প্রায় লাগোয়াই বাড়িটি।
এখানে বাস করা মানুষগুলোর ফুল ও গাছের বীজতলা প্রেম। চারা জাগানো উখিয়াবাসীর জানা। সেই পরিবেশে স্বপনও শখের বসে গড়ে ছিল ফুলের বাগান । গাছের পরিচর্যা, রোপিত গাছে ফুল ফুটায়ই ছিল তার সুখ। উখিয়া কলেজে পড়ালেখার পাঠ চুকেছে আজ থেকে একযুগেরও কিছু বেশী হবে। N.G.O কর্তা ছিল পেশায়।
কলেজে সে ছিল ব্যবসা শাখায়। আমার সমাজবিজ্ঞান বিষয়টি সিলেবাসে বাঁধের কারণে বিজ্ঞান ও ব্যবসায়ী শাখার ছাত্রদের পাঠ্য ছিল না। না পড়িয়েও যে আমার ভাবশিষ্য বনে আছে সেইই স্বপন। আজো প্রণাম করে শ্রদ্ধা জানানো,বিনয়াবনত প্রথম দর্শনের হাসিটিই ছিল তার পূঁজি।
সার্টিফিকেটধারী হবার পর বেশ কিছুদিন বেকার জীবনের তিক্ত অভিজ্ঞতা তার ছিল। সবকিছুর সাথে তাল মিলিয়ে মিলিয়ে যাওয়া সে তাহ পারত না। খাটিরর্চ্চায় সে পৃথিবীর ভালমন্দরে একবুকে ধারণ করে সামনে যাওয়াকে মনে নিয়ে মেনে নিতে পারা, সে অভিধার ছিল না। এমন সময়টায় আমিই ছিলাম তার ‘মত’ সার্পোটকারী। সান্নিধ্য সুখের পরমবন্ধু।
স্বপন পরে মেনে নিয়ে তাল মেলাতে শেখে। চাকরির সাথে সংসারী হয় তারপরেও সে ভুলেনি।সামান্য মনকষ্টে সে দৌঁড়ায়ে আসত। অনেক বছর আগে চাকরিতে প্রথম মাসের বেতনের টাকাটা নিয়ে হাজির, আমার হাতে এগিয়ে..
কইতে রইল ‘স্যার আমার প্রথম মাসের বেতনের টাকা’ পা ছুঁয়ে প্রণাম করতে করতে আওড়াচ্ছিল “আমি বাস্তববাদী হয়েছি স্যার, বাস্তববাদী। আর কোনদিন স্বপনের কষ্টের গোপন চিন্তা আপনারে কষ্ট দিবে না স্যার!’
গেলরাতে স্বপনের জগত সম্পর্ক ছিন্নে ঐ কথাটা শুধু বেজেই চলেছে। স্বপনের কাছেই আজ আরেকবার জানতে ইচ্ছে করছে” স্বপন,আমি চিন্তা মুক্ত হলাম কই!
লেখকঃ- আলমগীর মাহমুদ :
বিভাগীয় প্রধান (সমাজবিজ্ঞান বিভাগ)
উখিয়া কলেজ, কক্সবাজার
ইমেইল – alamgir83cox@gmail.com
প্রতিদিনের খবরগুলো আপনার ফেসবুক টাইমলাইনে পেতে নিচের লাইক অপশনে ক্লিক করুন-