ডেস্ক রিপোর্ট- স্থানীয় সরকার নির্বাচনে দলীয় প্রার্থীর বিরুদ্ধে যারা কাজ করেছেন তারা ফেঁসে যাচ্ছেন। বিশেষ করে উপজেলা নির্বাচনে যারা দলীয় প্রার্থীর বিরুদ্ধে কাজ করেছেন বা অবস্থান নিয়েছেন তাদের তালিকা তৈরি করা হবে। তিনি মন্ত্রী, এমপি বা যত বড় নেতাই হননা কেন তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে। এবারের উপজেলা নির্বাচনে অনেক মন্ত্রী-এমপি দলীয় প্রার্থীর বিপক্ষে অর্থাৎ নৌকার বিপক্ষে কাজ করেছেন। ফলে বেশ কিছু স্থানে দলীয় প্রার্থীর ভরাডুবি হয়েছে।
শুক্রবার (২৯ মার্চ) প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে অনুষ্ঠিত বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়ামের সভায় এ বিষয়ে আলোচনা এবং দোষীদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে একাধিক প্রেসিডিয়াম সদস্য জানিয়েছেন।
খুলনার একজন এমপি যিনি এর আগের টার্মে মন্ত্রী ছিলেন। অভিযোগ রয়েছে, দলীয় প্রতীক নৌকার বিরুদ্ধে স্বতন্ত্র প্রার্থীর প্রতীক নিয়ে তার ছেলে ও সমর্থকদের দিয়ে প্রচার চালাচ্ছেন তিনি। সেই সঙ্গে দলীয় প্রার্থীর বিজয় সম্ভাবনাকে সন্ত্রাসী দ্বারা বিভিন্ন ভয়-ভীতি দেখিয়ে বাধাগ্রস্ত করছেন।
এমপির সন্ত্রাসীদের কারণে সুষ্ঠু ভোট নিয়ে শঙ্কায় রয়েছেন সবাই। ডুমুরিয়া উপজেলা নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী মোস্তফা সরোয়ার বলেন, এমপি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানদের নিয়ে বৈঠক করে নৌকার বিপক্ষে ভোট দিতে বলেছেন।
জানা যায়, সুনামগঞ্জের ৮টি উপজেলায় ভোট হয়। যার মধ্যে অর্ধেক উপজেলায় নৌকার ভরাডুবি হয়েছে। ৩টিতে বিজয়ী হন আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থীরা। একটিতে জয়লাভ করেন বিএনপির স্বতন্ত্র প্রার্থী। হবিগঞ্জ জেলার ৮টি উপজেলার মধ্যে ৪টিতে আওয়ামী লীগ বিজয়ী হলেও বাকি ৪টিতে নৌকার প্রার্থীরা ধরাশায়ী হন দলের বিদ্রোহী ও স্বতন্ত্র প্রার্থীদের কাছে। সিলেটে বিভাগে প্রথম ধাপে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে ফল ঘোষিত ১৬টি উপজেলার মধ্যে ৮টিতেই নৌকার ভরাডুবি হয়েছে। এ বিভাগেও এমপি-মন্ত্রীদের নৌকার বিপক্ষে কাজ করার কারণে এ ভরাডুবি ঘটে। এমনিভাবে গাজীপুরের একজন মন্ত্রী, নাটোরেরর এমপি, মুন্সিগঞ্জের এমপিসহ সারাদেশেই অনেক স্থানে মন্ত্রী-এমপিরা নৌকার বিপক্ষে কাজ করেছেন।
প্রেসিডিয়াম সভা শেষে দলের দফতর সম্পাদক ড. আবদুস সোবহান গোলাপ স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, স্থানীয় সরকারের বিভিন্ন পর্যায়ের নির্বাচনে যে সকল মন্ত্রী, এমপি ও দলীয় নেতারা সংগঠনের মনোনীত প্রার্থীদের পক্ষে কাজ করছেন না তাদের কর্মকাণ্ডের ওপর প্রতিবেদন তৈরি ও ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সাংগঠনিক নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে।
অক্টোবরে আওয়ামী লীগের বর্তমান কমিটি মেয়াদ শেষ হবে। অক্টোবরেই যাতে জাতীয় সম্মেলন করা যায় আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা সেই প্রস্তুতি রাখার নির্দেশ দিয়েছেন বলে সূত্র জানিয়েছে।
কেন্দ্রীয় কাউন্সিলের আগে তৃণমূলের কাউন্সিল সম্পন্ন করতে এবং দলকে সাংগঠনিকভাবে শক্তিশালী করতে আটটি টিমও গঠন করা হয় বৈঠক থেকে। এ ছাড়া প্রেসিডিয়াম সভায় অধিকাংশ সদস্য মাছ, মাংস, তরিতরকারিসহ নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম হঠাৎ বৃদ্ধি পাওয়ায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন বলে একজন সদস্য জানান। বনানী, পুরান ঢাকার আগুনসহ বিভিন্ন স্থানে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা বেড়ে যাওয়াতেও তারা উদ্বেগ প্রকাশ করেন।
প্রতিদিনের খবরগুলো আপনার ফেসবুক টাইমলাইনে পেতে নিচের লাইক অপশনে ক্লিক করুন-