প্রতি দল বদলের মৌসুমেই এমন একটি দল গঠন করা হয়। বিশ্ব রেকর্ড করে কোনো খেলোয়াড়কে টানে কোনো ইউরোপীয় পরাশক্তি, আর সঙ্গে সঙ্গে বিশ্বের সবচেয়ে দামি স্কোয়াড বানাতে বসেন সবাই। এখনো মৌসুম শেষ হয়নি, দল বদলের বাজার উন্মুক্ত হতে এখনো তিন মাস বাকি। কিন্তু লুকাস হার্নান্দেজকে দলে পেতে অতদিন অপেক্ষা করতে রাজি হয়নি বায়ার্ন মিউনিখ।
অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদে বেড়ে ওঠা বিশ্বকাপজয়ী ফ্রেঞ্চ ডিফেন্ডারকে জানুয়ারিতেই চাইছিল বায়ার্ন। কিন্তু তখন তাঁকে ছাড়তে রাজি হয়নি ক্লাব। জাতীয় দলের হয়ে চোটে পড়ে মৌসুমের বাকিটা বেঞ্চেই কাটবে হার্নান্দেজের। তাই আনুষ্ঠানিকভাবে বায়ার্নের সঙ্গে চুক্তি করতে আর বাধেনি অ্যাটলেটিকোর। উপায়ও ছিল না, এই ডিফেন্ডারের চুক্তিতে নির্ধারিত রিলিজ ক্লজ দিয়েই যে তাঁকে নিয়েছে জার্মান ক্লাব। দুই বছর আগে এই ডিফেন্ডারের জন্য নির্ধারিত রিলিজ ক্লজ ঠিক করতে গিয়ে ৮০ মিলিয়নই যথেষ্ট মনে হয়েছিল অ্যাটলেটিকোর!
হার্নান্দেজের দলবদলের পর বিশ্বের সবচেয়ে দামি একাদশেও বদল এসেছে। একবার দলটিতে একটু নজর দিয়ে আসা যাক—
গোলরক্ষক
এএস রোমা থেকে ব্রাজিলিয়ান অ্যালিসনকে ৬২.৫ মিলিয়ন ইউরো দিয়ে দলে টেনেছিল লিভারপুল। ১৮ বছর পুরো দলবদলের রেকর্ড ভেঙে খুব বেশি দিন শীর্ষস্থান ধরে রাখতে পারেননি অ্যালিসন। গত মৌসুমেই অ্যাথলেটিক বিলবাও থেকে কেপা আরিসাবালাহাকে টেনে এনেছে চেলসি। বিলবাওর অনিচ্ছায় দলবদল বলে রিলিজ ক্লজের ৮০ মিলিয়ন ইউরো দিয়েই আনতে হয়েছিল চেলসিকে।
ডিফেন্ডার
৮০ মিলিয়ন ইউরোর হার্নান্দেজ তো আছেন সেটা লেখার শুরুতেই বলা হয়েছে। তবে ডিফেন্ডারদের বিশ্ব রেকর্ড এখনো ভার্জিল ফন ডাইকের। ২০১৮ সালের শুরুতে সাউদাম্পটন থেকে এই ডাচকে আনতে ৮৫ মিলিয়ন খরচ করেছে লিভারপুল। এঁদের পেছনেই আছেন আয়মারিক লাপোর্তে। এই ফ্রেঞ্চ ডিফেন্ডারকে সিটি এনেছে বিলবাও থেকে। এবারও ক্লাবের অনিচ্ছা, ফলে রিলিজ ক্লজের ৬৫ মিলিয়ন ইউরোই খরচ করতে হয়েছে।
মিডফিল্ডার
এ মৌসুমে তাঁর খেলা দেখলে হয়তো অবিশ্বাস্য মনে হতে পারে, কিন্তু ফিলিপে কুতিনহোর জন্য লিভারপুরের সঙ্গে রীতিমতো লড়াই করেছে বার্সেলোনা। শেষ পর্যন্ত ১২০ মিলিয়ন ইউরো এবং শর্তসাপেক্ষে আরও ৪০ মিলিয়ন ইউরোর প্রতিশ্রুতিতে কুতিনহোকে এনেছে বার্সেলোনা। কুতিনহোর দলবদলে মিডফিল্ডারের বিশ্ব রেকর্ড হলেও সবকিছু মিলিয়েই রেকর্ড করতে পেরেছিলেন পল পগবা। ২০১৬ সালে এই ফ্রেঞ্চ মিডফিল্ডারের জন্য ১০৫ মিলিয়ন ইউরো খরচ করে গ্যারেথ বেলের রেকর্ড ভেঙেছিল ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড। কুতিনহো ও পগবার তুলনায় মধ্য মাঠের বাকি দুজন একটু পিছিয়েই থাকবেন ফ্র্যাঙ্কি ডি ইয়ং ও হামেস রদ্রিগেজ। মৌসুমে শেষেই বার্সেলোনায় যাচ্ছেন ডি ইয়ং। আর মোনাকো থেকে ২০১৪ সালে রিয়ালে এসে আপাতত মিউনিখে ধারে খেলছেন রদ্রিগেজ। দুজনের জন্যই ৭৫ মিলিয়ন ইউরো খরচ করেছে বার্সেলোনা ও রিয়াল মাদ্রিদ।
ফরোয়ার্ড
তিন ফরোয়ার্ড কারা সেটা না বললেও বুঝে নিতেন সবাই। দলবদলের বিশ্ব রেকর্ড গড়ে এখনো ধরে রেখেছেন নেইমার। বার্সেলোনা থেকে ২২২ মিলিয়ন ইউরোতে পিএসজিতে গিয়েছেন এই ফরোয়ার্ড। নেইমারের পর এমবাপ্পেকেও কিনেছে পিএসজি। শর্ত সাপেক্ষে ১৮০ মিলিয়ন ইউরো হলেও, এককালীন নাকি ১৩৫ মিলিয়ন ইউরোই দিয়েছে তারা। আর এ মৌসুমেই রিয়াল ছেড়ে জুভেন্টাসে গিয়ে সবাইকে চমকে দিয়েছেন ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো। ৩৪ বছর বয়সীকে পেতে জুভেন্টাস খরচ করেছে ১১৭ মিলিয়ন।
সব মিলিয়ে ১ বিলিয়ন ১৫৯ মিলিয়ন ইউরোর দল। বাংলাদেশি মূল্যমানে ১০ হাজার ৯৬৮ কোটি টাকা!
প্রতিদিনের খবরগুলো আপনার ফেসবুক টাইমলাইনে পেতে নিচের লাইক অপশনে ক্লিক করুন-