মুকুল কান্তি দাশ, চকরিয়া :
পর্যটকদের অন্যতম তীর্থস্থান কক্সবাজার। বঙ্গোপসাগরের কুল ঘেষে বিশ্বে দীর্ঘতম বালুকাময় সৈকত আকর্ষণ করে দেশি-বিদেশী পর্যটকদের। তার বিপরীতে উচু-নিচু পাহাড়সহ ইনানীর ঝর্ণায় মুগ্ধ হয় পর্যটকরা। এই শহরকে পরিবশে বান্ধব ও রুপ লাবণ্যময় করে গড়ে তুলতে প্রসংশনীয় উদ্যোগ নিয়েছে কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (কউক)।
ঐতিহ্য হারাতে বসা শহরের তিনটি দীঘি পুণ:খননের মাধ্যমে পর্যটকদের বাড়তি বিনোদন চাহিদা পুরণে ৩৬ কোটি টাকার প্রাক্কলিত ব্যয় নির্ধারণ পূর্বক প্রকল্প প্রনয়ণও করা হয়েছে। কউক সূত্রে জানা গেছে, প্রকল্প তিনটি হচ্ছে কক্সবাজার শহরের ঐতিহ্যবাহী লালদিঘী, গোলদিঘী ও বাজারঘাটার নাপিতা পুকুর।ওই তিনটি দিঘীর পুনঃখননসহ ভৌত সুযোগ সুবিধার উন্নয়ন ঘটিয়ে আধুনিকায়ন করা হবে।
এতে সবুজ বেস্টনী, সাইকেল স্ট্যান্ড, পুকুরের পাড় বাধাই, ওয়াকওয়ে নির্মাণ, রিটেনিং ওয়াল নির্মাণ, আলোকসজ্জা, বিদ্যুতায়ন, পয়:নিষ্কাশন ও পানি সরবরাহ ব্যবস্থা থাকবে। আর ওই প্রকল্প তিনটির ব্যয় নির্ধারত করা হয়েছে ৩৬ কোটি টাকা।ইতিমধ্যে সরকারিভাবে ই-টেন্ডারের মাধ্যমে প্রকল্প তিনটির কাজ ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে দেয়া হয়েছে। আগামী বছরের জুনের দিকে প্রকল্প তিনটির কাজ শেষ করার কথা রয়েছে।
এছাড়া কক্সবাজার শহরের উন্নয়ন ও বেহাল চিত্র বদলাতে বেশকিছু প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে কউক (কক্সবাজার উন্নয়ন কতৃপক্ষ)। ইতিমধ্যে শহরের তিন স্পটে কউকের করা নান্দনিক সৌন্দর্য্যবর্ধন ও হিমছড়িতে সড়ক বাতি পর্যটকসহ স্থানীয়দের আকৃষ্ট করছে। সাথে যোগ হচ্ছে আরো তিনটি দীঘি পুণ:খনন প্রকল্প। প্রকল্প তিনটি বাস্তবায়ন হলে আকর্ষণীয় হবে কক্সবাজার শহর।
এদিকে, প্রকল্প তিনটির কাজ শুরু করার লক্ষ্যে কউক চেয়াম্যান লে:কর্ণেল (অব:) ফোরকান আহমদ স্থানীয় মেয়র মুজিবুর রহমান ও জনপ্রতিনিধিদের নিয়ে গত ১২ মার্চ সরজমিন দীঘি এলাকা পরিদর্শন করেন। ওই সময় প্রকল্প বাস্তবায়নে বাধা দুর করার জন্য কর্তৃপক্ষ স্থানীয়দের দিঘী তিনটি উন্নয়নের ফলে যেই সুফল আসবে তা চিত্র প্রদশর্নীর মাধ্যমে তুলে ধরেন।
প্রকল্প পরিচালক লে:কর্ণেল মোহাম্মদ আনোয়ার উল ইসলাম বলেন, দিঘী তিনটির আশপাশে অবৈধভাবে গড়ে উঠা স্থাপনাগুলো সরিয়ে নেয়ার জন্য আমরা বেশ কয়েকবার আলোচনা করেছি। শহরের সৌন্দর্য্য বৃদ্ধি ও দিঘী তিনটির আধুনিকায়নের স্বার্থে আমরা সরকারি জমি পুণরুদ্ধার করে কাজ করবো। এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন,লালদিঘীর পাড়ে যেহেতু মসজিদ ও আওয়ামীলীগের অফিস আছে সেটা সমঝোতার মাধ্যমে অন্যত্র সরিয়ে নেয়ার জন্য আমরা তাদের সাথে একাধিকবার আলোচনা করেছি। তিনি এই শহরের উন্নয়নের স্বার্থে সকলের সহযোগিতা কামনা করেন।
উন্নয়ন কতৃপক্ষের চেয়ারম্যান লে:কর্ণেল ফোরকান আহমদ বলেন, কক্সবাজারকে ঢেলে সাজাতে প্রধানমন্ত্রীর দেয়া দায়িত্ব তিন বছরের মতো হয়েছে। প্রথম বছর গোটা জেলার সমস্যা ও সম্ভাবনাগুলো সনাক্ত করেছি। ২য় বছরে এগুলোর প্রকল্প তৈরি ও একনেকে অনুমোদনের জন্য সম্ভাব্য বাজেট চেয়ে মন্ত্রনালয়ে প্রস্তাবনা দেয়া হয়েছে। দ্বিতীয় মেয়াদে এসে যেই প্রকল্পগুলোর অনুমোদন ও বাজেট পেয়েছি সেগুলোর কিছু কাজ শেষ করছি এবং কয়েকটি প্রকল্প চলমান রয়েছে। তার মধ্যে কউকের বহুতল ভবণও রয়েছে।
তিনি আরো বলেন, আশা করছি যথা সময়ে প্রকল্পগুলোর কাজ শেষ হবে। যানজটে নাকাল প্রধান সড়কের ব্যাপাওে হলিডের মোড় থেকে বাসটার্মিনাল পর্যন্ত দু-লেনের রাস্তার প্রস্তাবণা দেয়া হয়েছে অনেক আগে। বাজেট পাস হয়ে আসলেই কাজ শুরু করা হবে। এছাড়া সড়কের প্রস্থ বাড়াতে জমি অধিগ্রহণ করার কাজ চলছে।
প্রতিদিনের খবরগুলো আপনার ফেসবুক টাইমলাইনে পেতে নিচের লাইক অপশনে ক্লিক করুন-