ডেস্ক রিপোর্ট :
১৩ বছর বয়সী মেয়েকে দৌলতদিয়া যৌনপল্লীতে বিক্রির সময় গোয়ালন্দ ঘাট থানা পুলিশ এরশাদ আলী নামে এক ব্যক্তিকে আটক করেছে। এ সময় এক যৌনকর্মীকেও গ্রেফতার করে পুলিশ। ঘটনাটি ঘটে শনিবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে।
গ্রেফতার ব্যক্তির বাড়ি নওগাঁর মান্দা উপজেলায়। এ ঘটনায় রোববার দুপুরে গোয়ালন্দ ঘাট থানার এসআই ওলিয়ার রহমান বাদী হয়ে গ্রেফতার ওই দুইজনের বিরুদ্ধে মানবপাচার আইনে মামলা করেছেন।
উদ্ধার হওয়া মেয়েটি জানায়, তার বাবা-মায়ের অনেক আগেই ছাড়াছাড়ি হয়ে গেছে। তারা দু’জনই আবার বিয়ে করে সংসার করছেন। সে কখনও দাদির কাছে, কখনও ফুফুর কাছে আবার কখনও মায়ের কাছে থাকে। এ পরিস্থিতিতে তার বাবা তাকে বলেন, ‘তোমার খাওয়ার খরচ দিয়ে আমি তোমাকে ঢাকায় ভালো একটি জায়গায় রেখে দেব, সেখানে ভালো থাকবে।’ বাবার কথায় রাজি হয়ে গত শনিবার সে বাবার সঙ্গে ঢাকার উদ্দেশে রওনা হয়। কিন্তু তার বাবা তাকে ঢাকা না নিয়ে সরাসরি দৌলতদিয়া যৌনপল্লীতে নিয়ে আসে।
বাবার বিচার চায় কি-না জানতে চাইলে মেয়েটি কান্না করে বলে, ‘আব্বু ভুল করে ফেলেছে। আব্বুকে ভালো হওয়ার জন্য একবার সুযোগ দেন স্যার।’ এ সময় বাবার প্রতি সন্তানের ভালোবাসা দেখে সেখানে আবেগঘন পরিবেশের সৃষ্টি হয়। কোথায় যেতে চায় জানতে চাইলে সে বলে, ‘আমি মায়ের কাছে যেতে চাই।’
আটক যৌনকর্মী জানায়, উদ্ধার হওয়া মেয়েটির বাবা দৌলতদিয়া যৌনপল্লীতে যাতায়াতের সূত্র ধরে তার সঙ্গে পরিচয়। সেই প্রস্তাব দেয়, একটি মেয়ে এনে দিলে তাকে ৮০ হাজার টাকা দিতে হবে। কিন্তু তাকে ৩০ হাজার টাকা দেওয়ার কথা ছিল। সেই টাকার জন্যই ওই ব্যক্তি মেয়েকে যৌনপল্লীতে নিয়ে আসে।
গোয়ালন্দ ঘাট থানার ওসি মো. এজাজ শফী জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে পুলিশের একটি দল শনিবার রাতে ছদ্মবেশে যৌনপল্লীতে বিক্রির সময় ওই মেয়েটিকে উদ্ধার করে। এ সময় হাতেনাতে দু’জনকে গ্রেফতার করা হয়।
তিনি জানান, উদ্ধার হওয়া মেয়েটির নির্ভরযোগ্য অভিভাবক না থাকায় আদালতের মাধ্যমে ১৮ বছর না হওয়া পর্যন্ত সরকারি সেভ হোমে রাখার আবেদন করা হবে।
প্রতিদিনের খবরগুলো আপনার ফেসবুক টাইমলাইনে পেতে নিচের লাইক অপশনে ক্লিক করুন-