সম্প্রতি রেকর্ডসংখ্যক পর্যটক আগমন ও রোহিঙ্গাদের চাপের কারণে বাজারে সামুদ্রিক মাছের সংকট দেখা দিয়েছে। এছাড়া কক্সবাজার উপকূলের মাছ ধরার ট্রলারগুলো সাগরে যেতে না পেরে এ সংকট তীব্র আকার ধারণ করেছে। এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে কিছু অসাধু ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট করে মিঠাপানির মাছ ও মাংসের দাম পূর্বমূল্যের চেয়ে বাড়িয়ে বিক্রি করছে।
যার ফলে সাধারণ ক্রেতারা মাছ ও মাংসের দাম হাতের নাগালে না পেয়ে মুখ ফিরিয়ে নিতে দেখা গেছে। অন্যদিকে গত কয়েকদিনের বৈরি আবহাওয়ায় উপকূলের জেলেরা সাগরে মাছ আহরণ করতে যেতে না পেরে তাদের পরিবারে দৈন্যদশা চলছে বলে খবর পাওয়া গেছে।
শহরের সমুদ্র তীরবর্তী নাজিরারটেক, কুতুবদিয়াপাড়া, সমিতিপাড়া, বড়ছড়াসহ উপকূলের প্রায় সহস্রাধিক মাছ ধরার ট্রলার বৈরি আবহাওয়ার কারণে গত তিন দিন ধরে উপকূলে নোঙর করে রাখা হয়েছে। আবহাওয়া স্বাভাবিক হলে এসব মাছ ধরার ট্রলারগুলো সাগরে নামানো হবে বলে জেলে সূত্রে জানা গেছে।
কুতুবদিয়াপাড়ার ট্রলার মালিক লিয়াকত ও নাছির বহদ্দার জানান, আবহাওয়া অনুকূলে না থাকায় আমাদেরসহ সহস্রাধিক ফিশিং ট্রলার সাগরে মাছ ধরতে যেতে পারেনি। যার ফলে আমরাসহ অন্যান্য ট্রলার মালিকদের মাঝি-মাল্লাদের শ্রম না দিয়েও বেতন দিতে হবে। এভাবে বেশ কিছুদিন চলতে থাকলে আমরা ক্ষতি পূষিয়ে উঠতে পারব না।
নাজিরারটেক এলাকার বলি হোছন ও কফিল উদ্দিন মাঝি জানান, সাগরে মাছ আহরণ করতে যেতে না পেরে ট্রলার মালিকরা যেমন ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে, পাশাপাশি আমরাও পরিবার পরিজন নিয়ে দৈন্যের মাঝে দিনাতিপাত করছি। ট্রলার মালিকরা প্রতিদিন আমাদের সংসার চালানোর জন্য সামান্য কিছু টাকা দেয়। যা নিয়ে আমাদের চলতে খুবই কষ্ট হচ্ছে।
শহরের বড় বাজারে মাছ কিনতে যাওয়া আমান উল্লাহ নামের এক ব্যক্তি জানালেন, সামুদ্রিক মাছ বাজারে নেই বললেই চলে। যা আছে তাও ফ্রিজিং করা। দামও বেড়েছে গত সপ্তাহের চেয়ে দ্বিগুণ। যে ক’টি মিঠাপানির মাছ বাজারে পাওয়া যাচ্ছে তাও বেড়ে দ্বিগুণ। পাশাপাশি বেড়েছে মাংসের দামও। অনেকটা হাতের নাগালে নেই বললেই চলে।
শহরের বাহারছড়া বাজারের ক্রেতা দিদারুল আলম সিকদার জানান, সব মাছ ব্যবসায়ী যেন সিন্ডিকেট। কোন খানেই দাম কম নেই। সাগরে ট্রলার যেতে না পেরেই বাজারে মাছের এই অবস’া। এই সুযোগে অসাধু মাছ ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করে মাছের দাম বাড়িয়ে দিয়েছে। যার ফলে সাধারণ ক্রেতারা নানান ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। এলাকার সচেতনমহল জানিয়েছেন, বাজার মনিটরিং ব্যবস’া যথাযথভাবে না হওয়ায় এই দুরবস’ার সৃষ্টি। তারা মনে করেন নিয়মিত ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা অব্যাহত রাখলে এসব সমস্যা নিরসন হবে।
/সুপ্রভাত
প্রতিদিনের খবরগুলো আপনার ফেসবুক টাইমলাইনে পেতে নিচের লাইক অপশনে ক্লিক করুন-