ডেস্ক রিপোর্ট – উখিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরে শেষ পর্যন্ত ক্ষমতার রাজনীতি নিয়ে প্রকাশ্যে শুরু হয়েছে অর্ন্তদ্বন্ধ। গত মঙ্গলবার অনুষ্টিত বিশেষ বর্ধিত সভায় উপজেলা নির্বাচনের চেয়ারম্যান প্রার্থী মাহমুদুল হক চৌধুরীকে দলের সিনিয়র সহ সভাপতি এবং গতকাল আরো এক দফায় তাকে ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ঘোষণার পর পরই কোন্দল রুপ নেয় একদম প্রকাশ্যে।
মূলত সাবেক সংসদ-সদস্য আবদুর রহমান বদি নেপথ্যে থেকে শুরু করেন এই প্রক্রিয়া। যার অংশ হিসেবে হামিদুল হক চৌধুরীকে উখিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতির পদ থেকে গতকাল পদত্যাগ করানো হয়। আগের দিন সিনিয়র সহ-সভাপতি আলাউদ্দিন সিকদার ও পদত্যাগ করেন। তাদের স্থলে মাহমুদুল হক চৌধুরীকে প্রথমে সিনিয়র সহ সভাপতি এবং গতকাল ভারপ্রাপ্ত সভাপতি করা হয়।
আগের দিন অনুষ্টিত উখিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের বিশেষ বর্ধিত সভায় নেয়া পদক্ষেপের অংশ স্বরুপ মাহমুদুল হক চৌধুরীকে গতকাল উপজেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতির পদ দেয়ার পর পরই তিনি এবং ইমরুল কায়েস চৌধুরী নিজ নিজ মনোনয়ন প্রত্যাহারের আবেদন দাখিল করেন রিটার্নিং অফিসারের নিকট। নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোয় উখিয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদে অধ্যক্ষ হামিদুল হক চৌধুরী এখন বিনাপ্রতিদ্বন্ধিতায় চেয়ারম্যান নির্বাচিত হলেন বেসরকারিভাবে।
এর আগে উখিয়া উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান পদে নির্বাচনের জন্য উখিয়া বঙ্গমাতা ফজিলাতুন্নেছা মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ্যের পদ থেকেও পদত্যাগ করেন তিনি। অভিযোগ উঠেছে, অধ্যক্ষ্যের পদ থেকে পদত্যাগের পর হামিদুল হক চৌধুরী রিতীমত জ্যেষ্টতা লংঘন পুর্বক তাঁরই আপন ভাতিজা অধ্যাপক হুমায়ূন কবির চৌধুরীকে কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ্যের দায়িত্ব বুঝিয়ে দেন। অধ্যক্ষ হামিদুল হক চৌধুরী সর্বশেষ উপজেলা চেয়ারম্যানের চেয়ারটির জন্য সমঝোতার অংশ স্বরুপ উপজেলা আওয়ামী লীগের নির্বাচিত সভাপতির পদটিও ছাড়লেন।
গত মঙ্গলবার থেকে গতকাল বুধবার পর্যন্ত উখিয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদের নির্বাচন ও উখিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের ক্ষমতা নিয়ে একের পর এক নাটকীয় ঘটনা নিয়ে আলাপ-আলোচনারও যেন শেষ নেই। এমনকি বিষয়টি এখন শুধু উখিয়া নয়, পুরো জেলার ‘টক অব দ্য ডিসকাসন’ এ পরিণত হয়েছে।
সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমেও শুরু হয়েছে তোলপাড়। মকবুল মোর্শেদ নামে এক ফেসবুক ইউজার নিজ আইডিতে লিখেছেন, “ উখিয়া উপজেলা নির্বাচন চৌধুরীদের নির্লজ্জ কাজ। টাকাই সব; ভোট নয়।’ যুবলীগ নেতা আবুল হোসেন আবু ফেসবুকে লিখেছেন, -‘টেকনাফ শিকারীর হাতে গুলি, মুরব্বির কাঁধে বন্দুকের নলি। হরিণ আদর্শের নির্ভেজাল আওয়ামী লীগ। ফায়দা লুটতে কি সিন্ডিকেট ও বাবা’ ??
এদিকে মাহমুদুল হক চৌধুরীকে ভারপ্রাপ্ত সভাপতি করায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন উখিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও রাজাপালং ইউপি চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর কবির চৌধুরী। সংগঠনের নেতা-কর্মীদের তিনি বলেছেন, যে প্রক্রিয়ায় মাহমুদুল হক চৌধুরীকে ভারপ্রাপ্ত সভাপতি করা হয়েছে তা অগঠনতান্ত্রিক। উখিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাথে এর কোন সম্পর্ক নেই। বিষয়টিকে অগঠনতান্ত্রিক উল্লেখ করেছেন উখিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির চৌধুরী গতকাল কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে বিষয়টি লিখিতভাবে জানিয়েছেন জাহাঙ্গীর চৌধুরী। জেলা আওয়ামী লীগ বরাবরে দেয়া ওই পত্রে জাহাঙ্গীর কবির চৌধুরী ছাড়াও উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি অধ্যক্ষ শাহ্ আলমের স্বাক্ষরও রয়েছে।
প্রতিদিনের খবরগুলো আপনার ফেসবুক টাইমলাইনে পেতে নিচের লাইক অপশনে ক্লিক করুন-