গিয়াস উদ্দিন ভূলু, কক্সবাজার জার্নাল ডটকম
সীমান্ত এলাকা টেকনাফে মাদক কারবারীদের নির্মুল করতে আইন-শৃংখলা বাহিনীর মাদক ও সন্ত্রাস বিরোধী চলমান অভিযান এখনো অব্যাহত। সেই ধারাবাহিকতার অংশ হিসাবে পুলিশ-বিজিবির সাথে পৃথক বন্দুকযুদ্ধে মাত্র কয়েক ঘন্টার ব্যবধানে ৪জন মাদক কারবারী নিহত হয়েছে।
এসময় প্রায় সাড়ে ৩ কোটি টাকা মুল্যের এক লক্ষ,৬ হাজার ইয়াবা, ৪টি দেশীয় তৈরী অস্ত্র, ১০ রাউন্ড তাজা কার্তুজ,১৪ রাউন্ড খালি খোসা উদ্ধার করা হয়েছে। উক্ত ঘটনায় ৫ পুলিশ ও ১জন বিজিবি সদস্য আহত হয়েছে।
টেকনাফ থানা সূত্রে জানা যায়,১ মার্চ ভোর রাত ৩টার দিকে টেকনাফ থানা পুলিশের হাতে আটক ডাকাত, শীর্ষ ইয়াবা কারবারী ও সন্ত্রাসী টেকনাফ পৌরসভা ৭নং ওয়ার্ড চৌধুরী পাড়ার আব্দুল জলিলের পুত্র ডাকাত নজির আহাম্মদ (৩০) ও হোয়াইক্যং ইউনিয়নের নয়াপাড়ার হাজী মোহাম্মদ জাকারিয়ার পুত্র গিয়াস উদ্দিন (২৯) কে নিয়ে টেকনাফ মডেল থানার (ওসি) প্রদীপ কুমার দাশের নেতৃত্বে পুলিশের বিশেষ দল হোয়াইক্যং বটতলী বাজার সংলগ্ন নাফনদীর ৩নং সুইচ গেইট এলাকায় অভিযানে গেলে আটককৃত আসামীদের অনুসারীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে বেপরোয়া গুলিবর্ষণ শুরু করে। এসময় পুলিশ সদস্যরা আত্বরক্ষার্থে পাল্টা গুলি চালায়।
সত্যতা নিশ্চিত করে টেকনাফ মডেল থানার (ওসি) প্রদীপ কুমার দাশ কক্সবাজার জার্নালকে জানান, সংঘটিত এই ঘটনায় আটক ২ অপরাধী গুলিবিদ্ধ হয়। ৪ পুলিশ সদস্য আহত হয়। তারা হচ্ছে এসআই সুজিত চন্দ্র দে, এএসআই খায়রুল, কনস্টেবল এরশাদুল ও হেলাল উদ্দিন। এরপর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে এলে ঘটনাস্থল তল্লাশী করে নজির ও গিয়াস উদ্দিনে গুলিবিদ্ধ ২টি দেহ, ৬ হাজার ইয়াবা, ৩টি দেশীয় তৈরী অস্ত্র, ৯ রাউন্ড তাজা কার্তুজ,ও ১৩ রাউন্ড খালি খোসা উদ্ধার করা হয়।
এরপর গুলিবিদ্ধ ২ জনকে উদ্ধার করে টেকনাফ উপজেলা সদর হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত ডাক্তার উন্নত চিকিৎসার জন্য কক্সবাজার সদর হাসপাতালে রেফার করে। অবশেষে জেলা সদর হাসপাতালের কর্তব্যরত ডাক্তার তাদেরকে মৃত ঘোষণা করেন। বর্তমানে মৃতদেহ ২টি ময়না তদন্ত রিপোর্ট তৈরী করার প্রক্রিয়া চলছে বলে জানা যায়।
অপরদিকে ভোর সাড়ে ৫টার দিকে টেকনাফ ২বিজিবি ব্যাটালিয়নের নাঃ সুবেঃ মোঃ শাহ আলমের নেতৃত্বে ১টি টহল দল দ্রুত সাবরাং মগপাড়া কাকঁড়া প্রজেক্ট এলাকায় গেলে ইয়াবা পাচারকারীরা টহলদলের উপর অতর্কিতভাবে গুলিবর্ষণ ও ধারালো অস্ত্র নিয়ে আক্রমন করে।
এসময় বিজিবি টহলদলের একজন সদস্য আহত হয়। বিজিবিও আত্বরক্ষার্থে পাল্টা গুলি বর্ষন করলে উভয় পক্ষের মধ্যে প্রায় ৮-১০ মিনিট গুলি বিনিময় হয়। ইয়াবা পাচারকারীরা পালিয়ে যাওয়ার পর ঘটনাস্থল তল্লাশী করে এক লক্ষ ইয়াবা,১টি দেশীয় তৈরী লম্বা বন্দুক ও ১টি খালী কার্তুজ,গুলিবিদ্ধ অবস্থায় ২টি লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। নিহত দুইজনের মধ্যে একজনের পরিচয় পাওয়া গেছে।
সে টেকনাফ সদর ইউনিয়নের দক্ষিণ ডেইল পাড়া এলাকার কালা মিয়ার পুত্র আব্দুর শুক্কুর(৪৩) ও নিহত শুক্কুরের পুত্র মোঃ ইলিয়াস (২৫)। মৃতদেহ গুলো টেকনাফ থানার এসআই জামশেদ ও এসআই বাবুলের নেতৃত্বে পুলিশ সদস্যরা উদ্ধার করেছে।
আর আহত বিজিবি সদস্যকে টেকনাফ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষ করার পর বিজিবি হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। সংঘটিত এই দুটি ঘটনাকে কেন্দ্র করে টেকনাফ মডেল পুলিশ ও বিজিবি বাদী হয়ে পৃথক পৃথক মামলা রুজু করার প্রক্রিয়া চলছে।
প্রতিদিনের খবরগুলো আপনার ফেসবুক টাইমলাইনে পেতে নিচের লাইক অপশনে ক্লিক করুন-