১০ বছরের পুরনো মামলা ছয় মাসের মধ্যে নিষ্পত্তির নির্দেশ

কক্সবাজার জার্নাল ডেস্ক :

দায়রা জজ আদালতে বিচারাধীন ১০ বছরের পুরনো ফৌজদারী মামলাগুলো ছয় মাসের মধ্যে নিষ্পত্তির নির্দেশ দিয়েছে হাই কোর্ট। একই সঙ্গে প্রত্যেক জেলা জজদের ৩০ দিনের মধ্যে এইসব মামলার তালিকা করে সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেলের কাছে জামা দিতে বলা হয়েছে।
তালিকা পাওয়ার পর রেজিস্ট্রার জেনারেল তা সুপ্রিম কোর্টের অধস্তন আদালত তদারকী কমিটির কাছে জমা দেবেন। ডাকাতি মামলার এক আসামির জামিন আবেদনের শুনানি শেষে বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের হাই কোর্ট বেঞ্চ মঙ্গলবার এ আদেশ দেয়।
আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক সোমবার জাতীয় সংসদে এক প্রশ্নে জানান, বর্তমানে দেশের উচ্চ ও অধস্তন আদালতে মোট বিচারাধীন মামলার সংখ্যা ৩৫ লাখ ৬৯ হাজার ৭৫০টি।
এর মধ্যে আপিল বিভাগে ২০ হাজার ৪৪২টি ও হাই কোর্ট বিভাগে ৫ লাখ ১৬ হাজার ৬৫২টি এবং অধস্তন আদালতে ৩০ লাখ ৩২ হাজার ৬৫২টি মামলা বিচারাধীন রয়েছে।
মঙ্গলবার আদালতে শরিফুলের জামিন আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন এটিএম মিজানুর রহমান। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ফরহাদ আহমেদ ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল ইউসুফ মাহমুদ মোর্শেদ।   
এটিএম মিজানুর রহমান পরে সাংবাদিকদের বলেন, “শরিফুলের মামলাটি ২০০৭ সালের। ওই বছরের নভেম্বরে এ মামলার অভিযোগ গঠন করা হলেও এখন পর্যন্ত কোনো সাক্ষ্য গ্রহণ হয়নি। ফলে বিচারে দীর্ঘসূত্রতা তৈরি হয়েছে। এই গ্রাউন্ডেই সে আবেদন করেছিল। হাই কোর্ট তাকে চার মাসের অন্তর্র্বতী জামিন দিয়েছে।”
সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল ইউসুফ মাহমুদ মোর্শেদ বলেন, “আসামি শরিফুলকে অন্তর্র্বতী জামিন দিয়ে আদালত দেশের দায়রা আদালতসূমহে ১০ বছরের পুরনো বিচারাধীন সকল ফৌজদারি মামলা ছয় মাসের মধ্যে নিষ্পত্তির নির্দেশ দিয়েছেন। এ সময়ের মধ্যে মামলা নিষ্পত্তি করে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করতেও বলা হয়েছে।”
২০০৭ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি মধ্যরাতে গ্রিনলাইনের একটি যাত্রাবাহী বাস নরসিংদীর সোনাইমুড়ি পাহাড়ের কাছে আসলে যাত্রীবেশী ৬/৭ জন ডাকাত গাড়ির চালক, সহকারী ও সুপারভাইজরকে বেঁধে গাড়ির নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেয়। পরে যাত্রীদের অস্ত্র ঠেকিয়ে তাদের মালামাল লুট করে নেমে যায়।
এ ঘটনায় ওই বাসের যাত্রী নাজুমুল হোসেন ফয়সাল পরদিন রায়পুরা থানায় মামলা করেন।
বাস ডাকাতির ওই ঘটনায় ভৈরবের মানিকদির নয়াহাটি থেকে আসামি শরিফুল শৈবালকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরে নিম্ন আদালত থেকে শরিফুলের জামিন হয়।
কিন্তু জামিনের অপব্যবহারের অভিযোগে নরসিংদীর অতিরিক্ত দায়রা জজ আদালত গত বছরের ১৩ মার্চ শরিফুলের জামিন বাতিল করলে তাকে আবার গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
এরপর নরসিংদীর অতিরিক্ত দায়রা জজ আদালত জামিন আবেদন নামঞ্জুর করলে হাই কোর্টে আবেদন নিয়ে যান শরিফুল।     
ওই আবেদনের শুনানির পরই আদালত দায়রা ও জেলা জজ আদালতের ১০ বছরের পুরনো মামলা ছয় মাসের মধ্যে নিষ্পত্তির নির্দেশ দেয়।

আরও খবর