আল্লাহ যে কারণে বান্দাকে দোয়া করার নির্দেশ দিয়েছেন

আল্লাহ তাআলা মানুষকে তার কাছে দোয়া তথা ক্ষমা প্রার্থনার নির্দেশ দিয়েছেন। এ নির্দেশ একবার দু’বার নয়, বার বার তাকে ডাকার, তার কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করার নির্দেশ দিয়েছেন। তার কাছে বার বার দোয়া করার কারণও তিনি বান্দাকে কুরআনে অনেক আয়াতে ও হাদিসে পাকে প্রিয় নবি জানিয়েছেন।

দোয়াকে অন্যতম ইবাদত হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। শুধু তাই নয়, দোয়া বা আল্লাহকে ডাকার অন্যতম উপকার কি তা জানানো হয়েছে। এর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে, দুনিয়াতে যে সব বিপদ এসেছে আর যা এখনো আসেনি তা থেকে মুক্ত থাকার একমাত্র মাধ্যমও আল্লাহকে ডাকা বা দোয়া করা।

আল্লাহ তাআলা কুরআনে পাকের অনেক জায়গায় তাকিদের সঙ্গে তার কাছে দোয়ার করার নির্দেশ দিয়েছেন। যারা তাকে ডাকে বা দোয়া প্রার্থনা করে আল্লাহ তাদের দোয়া শুনেন এবং যথাযথ ব্যবস্থাও গ্রহণ করেন। আল্লাহ বলেন-

‘যখন আমার বান্দাগণ তোমাকে আমার সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করে (তখন তুমি বল) আমি তাদের কাছেই আছি। কোনো প্রার্থনাকারী যখন আমাকে ডাকে, আমি (কোনো মাধ্যম ছাড়াই) তার ডাক শুনি এবং তাতে সাড়া দেই। সুতরাং তারাও যেন আমার ডাকে সাড়া দেয় এবং আমার প্রতি ঈমান রাখে, যাতে করে তারা সঠিক পথে পরিচালিত হয়।’ (সুরা বাকারা : আয়াত ১৮৬)

প্রিয় নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন যারা আল্লাহর কাছে কোনো কিছু চায় আল্লাহ তাদের প্রতি বিশেষ রহমত বর্ষন করেন। তাদের দান করেন সবচেয়ে বেশি প্রিয় জিনিস, শান্তি ও নিরাপত্তা। হাদিসে পাকে এসেছে-

হজরত ইবনে ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, তোমাদের মধ্যে যার জন্য দোয়ার দরজা খোলা হলো, মূলত তার জন্য রহমতের দরজা খোলা হলো। আল্লাহর কাছে যা কিছু চাওয়া হয়, তার মধ্যে শান্তি ও নিরাপত্তা কামনা করা তার কাছে বেশি প্রিয়। অতঃপর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, যে বিপদ-মুসিবত এসেছে আর যা (এখনও) আসেনি তাতে দোয়ায় উপকার হয়। অতএব হে আল্লাহর বান্দাগণ! তোমরা দোয়াকে অপরিহার্য করে নাও।’ (তিরমিজি)

আল্লাহর কাছে দোয়া বা তাকে ডাকার প্রসঙ্গগুলো কুরআনুল কারিমের যেভাবে ওঠে এসেছে, তার কিছু হলো এ রকম-

– ‘তোমরা তোমাদের প্রভুকে বিনয়ের সঙ্গে ডাক আর গোপনে সীমালংঘনকারীদের তিনি পছন্দ করেন না।’ (সুরা আল-আরাফ : আয়াত ৫৫)
– অবশ্য আমার প্রভু অতি কাছে এবং (তোমাদের) ডাকে সাড়া দানকারী।’ (সুরা হুদ : আয়াত ৬১)
– নিশ্চয়ই আমার প্রভু (আমাদের ডাক) দোয়া শুনে থাকেন। হে আমার প্রভু! আমাকে এবং আমার বংশধরদের মধ্য থেকে (শ্রেষ্ঠ দোয়া ও তোমাকে স্মরণের অন্যতম মাধ্যম) নামাজ কায়েমকারী বানাও। হে আমার প্রভু! আমার দোয়া কবুল কর।’ (সুরা ইবরাহিম : আয়াত ৩৯-৪০)

সুতরাং নতুন করে কোনো কিছু পাওয়ার জন্য নয় বরং জীবনে শান্তি ও নিরাপত্তা লাভে, অনাগত বিপদ-আপদ থেকে মুক্ত থাকতে আল্লাহকে ডাকা, আল্লাহর বিধি-বিধান পালন করা মুসলিম উম্মাহর জন্য জরুরি।

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে কুরআন-সুন্নাহর আলোকে তার বিধান পালনের মাধ্যমে তাকে ডাকার তথা তার কাছে সার্বিক বিষয়ে আশ্রয় লাভের তাওফিক দান করুন। আমিন

আরও খবর