ডেস্ক রিপোর্ট – রিয়া-রিফাতের সন্ধান মিলছে না। ঢাকা মেডিকেল কলেজ ফরেনসিক বিভাগ, জেলা প্রশাসন, সিআইডির ডিএনএ প্রোফাইলিং টিম কারও কাছে নেই রিয়া ও রিফাত নামে কোনো দম্পতির মৃত্যুর তথ্য। যে ২০টি লাশ শনাক্ত হয়নি তাদের দাবিদারদের মধ্যেও রিয়া কিংবা রিফাত নামের কারও স্বজনকে পাওয়া যায়নি।
তারা বেঁচে আছেন কিনা তাও জানা যাচ্ছে না। এদিকে শুক্রবার ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে গিয়ে রিয়া ও রিফাতের বন্ধু দাবি করে যে কাহিনী বর্ণনা করেছিলেন সেই আল-আকসার সাজিদকেও পাওয়া যাচ্ছে না। ফলে ঘটনাটি নিয়ে এক ধরনের ধোঁয়াটে পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।
চকবাজারের চুড়িহাট্টায় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় নিহতদের লাশ শনাক্ত করতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে যখন শোকার্ত স্বজনদের ভিড় ঠিক তখন শুক্রবার দুপুরে আল-আকসার সাজিদ নামে এক যুবক এসে জানান রিয়া ও রিফাত নামে এক দম্পতির পুড়ে মারা যাওয়ার মর্মান্তিক কাহিনী।
তিনি বলেন, চুড়িহাট্টায় ওয়াহিদ ম্যানশনের তৃতীয় তলায় থাকতেন তারই বন্ধু রিফাত। রিফাতের স্ত্রী রিয়া অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন। আগুন লাগার পর তৃতীয় তলা থেকে অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীকে নিয়ে নিচে নামাতে পারেননি রিফাত।
যে কারণে রিফাত নিজেও নামেননি। নিশ্চিত মৃত্যু জেনেও স্ত্রীর সঙ্গ ছাড়েননি। বিয়ের দুই বছর পর প্রথম সন্তানের মুখ দেখতে অধীর অপেক্ষায় ছিলেন তারা। কিন্তু আগুন সব শেষ করে দিলো। দু’জনেই একসঙ্গে পুড়ে মরলেন। সঙ্গে অনাগত সন্তানও।
শুক্রবার সাজিদ বলেন, রিয়ার সঙ্গে বন্ধুত্ব থেকে প্রেম, এরপর বিয়ে হয় রিফাতের। ওয়াহিদ ম্যানশনের যে বাসায় রিয়া ও রিফাত থাকতেন তা পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। সেখানে গিয়ে তাদের না পেয়ে সাজিদ ছুটে এসেছেন হাসপাতাল মর্গে।
চেহারা দেখে মরদেহ শনাক্ত করা সম্ভব হচ্ছে না। রিয়া-রিফাতের পুড়ে মারা যাওয়ার খবর শুনে রিয়ার পরিবারের লোকজনও অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। রিফাতের পরিবারের লোকজন এসেছেন। তারা লাশ খুঁজে বেড়াচ্ছেন। তবে এখন পর্যন্ত লাশ শনাক্ত করা যায়নি। সব তথ্যই দেন সাজিদ।
পরে রিয়া ও রিফাতের এ মর্মান্তিক ঘটনাটি বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রচার ও প্রকাশ হয়। তা সোশ্যাল মিডিয়ায়ও ভাইরাল হয়ে যায়।
কিন্তু ঘটনার পর শনিবার পর্যন্ত রিয়া ও রিফাতের কোনো স্বজন মৃতদেহের খোঁজে ঢাকা মেডিকেল কলেজ মর্গে আসেননি। সেখানে স্থাপিত জেলা প্রশাসনের বুথ, বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির বুথে রিয়া বা রিফাত নামে কোনো তথ্য নেই।
তাদের সম্পর্কে কেউ কিছু জানতে চেয়েছেন বা মরদেহ খোঁজ করেছেন এমন কিছুই নেই। সিআইডির ডিএনএ ল্যাবের বুথেও কেউ রিয়া-রিফাতের লাশ দাবি করে ডিএনএ প্রোফাইলিং স্যাম্পল দিতে আসেনি।
এদিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ ফরেনসিক বিভাগের প্রধান ডা. সোহেল মাহমুদ জানিয়েছেন, রিয়া-রিফাত নামে কোনো দম্পতির লাশ তারা পাননি। যে ৬৭ লাশের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন করেছেন, তাদের মধ্যে অন্তঃসত্ত্বা কোনো নারীও ছিল না।
এদিকে যিনি গণমাধ্যমকে রিয়া-রিফাত সম্পর্কে তথ্য দিয়েছিলেন, আল-আকসার সাজিদ নামের ওই যুবককেও পাওয়া যাচ্ছ না। তার দেয়া ফোন নম্বরটিও বন্ধ রয়েছে। ফলে এ ঘটনা রহস্যের সৃষ্টি করেছে।
প্রতিদিনের খবরগুলো আপনার ফেসবুক টাইমলাইনে পেতে নিচের লাইক অপশনে ক্লিক করুন-