ডেস্ক রিপোর্ট – ১০২ জন ইয়াবা পাচারকারীর বিরুদ্ধে যে মামলা দায়ের করা হয়েছে দেশের সংশোধিত মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে ২০০ গ্রাম ইয়াবা বহনের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদ-। ক্ষেত্র বিশেষে তা যাবজ্জীবন কারাদ-। শনিবার ১০২ জন আত্মস্বীকৃত ইয়াবা পাচারকারীকে এখন এই মামলার মুখোমুখি হতে হবে। কারণ তাদের কাছ থেকে সাড়ে ৩ লাখ ইয়াবা উদ্ধার দেখানো হয়েছে।
আত্মসমর্পণকারীরা শনিবার সীমান্ত উপজেলা টেকনাফে আত্মসমর্পণকরা ১০২ জন ইয়াবা কারবারির ২টি মামলার বিষয় এখন টক অব দ্য কক্সবাজার। টেকনাফ থানার পরিদর্শক (অপারেশন) শরীফ ইবনে আলম বাদী হয়ে ১টি অস্ত্র ও অপরটি মাদকদ্রব্য আইনে মামলা দায়ের করেন। মামলার এজাহারে ঘটনাস্থল দেখানো হয়েছে কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ সড়কের বিচ হ্যাচারি এলাকায়। বলা হয়েছে, শতাধিক ইয়াবা কারবারি আত্মসমর্পণের জন্য ওই এলাকায় জড়ো হয়েছিলেন।
টেকনাফ থানা পুলিশ গোপন সূত্রে খবর পেয়ে পরিদর্শক (তদন্ত) এবিএমএস দোহার নেতৃত্বে একদল পুলিশ অভিযান চালায়। এ সময় পুলিশ সদস্যদের দেখে ইয়াবা কারবারিরা ত্রিশটি অস্ত্র এবং সাড়ে ৩ লাখ ইয়াবা ফেলে আত্মসমর্পণ করে। পুলিশ ওই স্থান থেকে ১০২ জন ইয়াবা কারবারিকে আটক করে নিয়ে যায়।
শনিবার সকাল ১০ টায় টেকনাফ পাইলট হাই স্কুল মাঠে অন্তত কয়েক হাজার মানুষের উপস্থিতিতে অনুষ্ঠিত আত্মসমর্পণ অনুষ্ঠানে ইয়াবা কারবারিদের আত্মসমর্পণ নিয়ে এই বিবরণ জানান। পুলিশের অস্ত্র ও মাদক আইনের দায়ের করা মামলা দুটি নিয়ে লোকজন নানা কথা বলাবলি করছেন। বলা হচ্ছে, শনিবারের ইয়াবা কারবারিদের আত্মসমর্পণ অনুষ্ঠানে সীমান্ত এলাকার কারবারিদের আত্মসমর্পণ করার জন্য গত কয়েকদিন ধরে সেখানে পুলিশ মাইকিং করছিল। মাংকিং করেই জনগণকে আত্মসমর্পণে উদ্বুদ্ধ করার চেষ্টা করছিল পুলিশ।
এর আগে গত মধ্য জানুয়ারি থেকে সীমান্তের ইয়াবা কারবারিরা আত্মসমর্পণের জন্য একে একে পুলিশের হেফাজতে যাচ্ছিলেন। এসব কারবারিদের রাখা হয়েছিল জেলা পুলিশ লাইনে। সেখান থেকেই শনিবার ভোরে বাসে করে তাদের নিয়ে যাওয়া হয়েছিল টেকনাফ পাইলট হাইস্কুল মাঠের আত্মসমর্পণ অনুষ্ঠানে। ইয়াবা কারবারিদের বহুল আলোচিত-সমালোচিত আত্মসমর্পণ অনুষ্ঠানের সচিত্র প্রতিবেদন গণমাধ্যমে প্রচারও করা হয়।
শনিবারের আত্মসমর্পণের আগে মাসাধিক সময় ধরে পুলিশের বরাতে গণমাধ্যমে পুলিশ হেফাজতে থাকা আত্মসমর্পণকারী কারবারিদের নিয়ে অসংখ্য সংবাদ প্রচার হয়। এতে করে দেশবিদেশের জনগণ অনেক আগে থেকেই অবহিত ছিলেন যে, পুলিশের সেইফ হোমে আত্মসমর্পণকারী কারবারিদের অবস্থান ছিলো। কিন্তু আকস্মিক শনিবার বিকালে কক্সবাজারের আদালতে টেকনাফ থানা পুলিশের প্রেরিত অস্ত্র ও মাদকের দুটি মামলা নিয়ে মানুষের মধ্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়। গতরাতে কক্সবাজার জেলার একটি সংসদীয় আসনের নির্বাচিত একজন সংসদ-সদস্য দেশবিদেশকে জানান,“ আমি নিজেও শনিবারের আত্মসমর্পণ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলাম। কিন্তু পরে শুনেছি আত্মসমর্পণ করা কারবারিদের নিকট থেকে অস্ত্র ও ইয়াবা উদ্ধারের ঘটনা দেখানো হয়েছে মেরিন ড্রাইভ সড়কে। এটা কি করে হয়। ”
কক্সবাজার জেলা আইনজীবী সমিতির একজন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী গতরাতে দেশবিদেশকে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে বলেন, ১০২ জন আত্মসমর্পণ করা কারবারিদের বিরুদ্ধে যেভাবে মামলা সৃজন করা হয়েছে তাতে আমি শঙ্কিত। এই মামলা থেকে কারবারিরা আইনি সুবিধা ভোগ করবে।
প্রতিদিনের খবরগুলো আপনার ফেসবুক টাইমলাইনে পেতে নিচের লাইক অপশনে ক্লিক করুন-