কক্সবাজারে বাবার মরদেহ না দেখে পরীক্ষার হলে তাওসিফ

পেকুয়া প্রতিনিধি :

মোঃ তাওসিফ কক্সবাজারের পেকুয়া মডেল সরকারি স্কুল থেকে এসএসসি পরিক্ষা দিচ্ছে। বিজ্ঞান বিভাগের খুব মেধাবী ছাত্র। বৃহস্পতিবার ইংরেজি পরিক্ষার কেন্দ্র ছিল বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়।

সকাল সাড়ে ৮টা যথা সময়ে পরিক্ষার জন্য বের হওয়ার জন্য পুস্তুত। ওই সময় শিক্ষক পিতা নাজেম উদ্দিনের মরদেহ বাড়িতে পৌঁছাল। পিতার মরদেহ দেখে কান্নায় ভেঙ্গে পড়লেও পরিক্ষা দেয়ার মনস্থির থেকে পিছিয়ে যায়নি। অবেশেষ পিতার মরদেহ বাড়িতে রেখে ছেলে পরিক্ষা শেষ করে বাড়িতে ফেরার সাথে সাথেই এলাকায় হৃদয় বিদারক ও কান্নায় পরিবেশ ভারি হয়ে ওঠে।

পেকুয়া গোঁয়াখালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মাওলানা নাজেম উদ্দিন(৪৫)। গতকাল হৃদরোগে অাক্রান্ত হয়ে চমেক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৬টায় মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন।

এদিকে সাড়ে ৮টায় গ্রামের বাড়ি পূর্ব গোঁয়াখালীস্থ পরিবারে মরদেহ চলে অাসলেও পুত্র তাওসিফ এসএসসি পরিক্ষা দেওয়ার জন্য বের হওয়ায় সকলের সহানুভূতি পাচ্ছেন। এলাকাবাসী ছেলের প্রতি দোয়া রেখে বলেন, পিতার শোককে শক্তিতে পরিণত করে ছেলে পরিক্ষা দিচ্ছে এখানকার সময় কল্পনাও করা যায় না। অথচ সেই ঘটনার জন্ম দিল ছাত্র তাওসিফ। তিনি অনেক বড় হবেন এ অাশা করছি।

উপজেলা সেচ্ছাসেবকলীগের সাধারণ সম্পাদক ছেলের চাঁচা নেজাম উদ্দিন বলেন, আমার ভাই অনেক ভাল মানুষ ছিলেন। শিক্ষাকতা পেশায় নিয়োজিত থেকে মৃত্যু বরণ করেছেন। ছেলে মেয়দের তার অাদর্শে মানুষ করেছেন। ছেলে তাওসিফ নিজের ইচ্ছায় পিতার মরদেহ বাড়িতে রেখে পরিক্ষা দিতে গেছে।

পেকুয়া মডেল সরকারি বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জহির উদ্দিন বলেন, তাওসিফ খুব মেধাবী ছাত্র। অষ্টম শ্রেনীর পরিক্ষায় গোল্ডেন এ প্লাস ও বৃত্তি পেয়েছে। এসএসসিতেও ইনশাল্লাহ ভাল করবে। তার পিতা অার নাই একথা জানার পরও পরিক্ষা দেয়ায় অামরা অনেক খুঁশি। দোয়া করি আমার ছাত্র অনেক বড় হবে।

কেন্দ্র সচিব আবদুল কাদের বলেন, পিতার মৃত্যুর সংবাদটি অামরা পাওয়ার সাথে সাথে পরিক্ষার হলে গিয়ে ছেলের সাথে দেখা করি। চেহেরায় কষ্টের ভাব দেখা গেলেও মনসিকভাবে অনেক শক্তিশালী থাকায় খাতার লিখাতে যতেষ্ট মনোযোগ অাছে। ছেলের জন্য অনেক অনেক দোয়া রইল।

আরও খবর