ডেস্ক রিপোর্ট – সরকারের মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী ও উপমন্ত্রীদের ৯০ দিনের কাজের হিসাব নেবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এটাই স্বাভাবিক। এজন্যে সচিবালয়ের কর্মসংস্কৃতিতে বিরাট পরিবর্তন আনতে হবে। এ পরিবর্তন কিভাবে আসবে তা নিয়ে মন্ত্রীরা কর্মকৌশল নির্ধারণ করছেন। কারণ তাদের এ কর্মকৌশল কতটা সঠিকভাবে বাস্তবায়ন হয়েছে, মন্ত্রণালয়ে কাজের অগ্রগতি, কর্মপরিকল্পনা, কে কোথায় কী নিয়ে ব্যস্ত ছিলেন তার চুলচেরা বিশ্লেষণ করে মূল্যায়নের ভিত্তিতে প্রধানমন্ত্রী তাদের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা বন্টর করে দেবেন। এতে বিন্দুমাত্র ছাড়া দেয়া হবে না। প্রয়োজনে মন্ত্রিসভায় রদবদল হবে বলে সংশ্লিষ্টসূত্রগুলো জানিয়েছে।
প্রথম ৯০ দিনের ৩০ দিন শেষ হয়ে গেছে। যে চ্যালেঞ্জ নিয়েই নতুন মন্ত্রিসভা যাত্রা শুরু করেছে তার তিনভাগের একভাগ সময় চলে গেলেও লক্ষ্যমাত্রার কতটা অর্জন হয়েছে বা এক্ষেত্রে ভুলত্রুটি সংশোধন করে বাকি ৬০ দিনে পিছিয়ে থাকা আরো কিভাবে এগিয়ে নেয়া যায় এবং লক্ষ্যমাত্রা অর্জন পুরোপুরি সম্ভব করে তোলা যায় সে বিষয়টি নিয়ে চিন্তাভাবনা করছে মন্ত্রণালয়ের শীর্ষ কর্মকর্তারাও।
গত ৭ জানুয়ারি নতুন সরকারের মন্ত্রীরা শপথ নেন। শুরুতেই বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের কর্মপন্থা নির্ধারণ করে কোন মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী বা উপমন্ত্রী। এসব বিষয়ে খোঁজ নিচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী। সবাই তার কঠোর তদারকি ও পর্যবেক্ষণে। মন্ত্রীদের কেউ কেউ কতটা সময় দিয়েছেন সংবর্ধনায়, সংবাদমাধ্যম, টকশো আর সভা-সমাবেশে তার হিসেব হচ্ছে। অতিকথনে কেউ সরকারের ভাবমূর্তি বিনষ্ট করছেন কি না তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। কোনো কোনো মন্ত্রীর বাড়িতে গানের জলসা জমে উঠেছে। সরকারের মন্ত্রী-প্র্রতিমন্ত্রী ও উপমন্ত্রীদের বেশির ভাগই মন্ত্রণালয়ের কাজের গতি বাড়াতে সচেষ্ট ছিলেন। গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রীরা নীরবে কাজ করে চলেছেন। আমলতন্ত্র তাতে কতটা সাড়া ও সহযোগিতা করেছে তাও বিচার্য বিষয়। তাদের অনেকের কাজ প্রশংসা পাচ্ছে। কোনো কোনো মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীর কাজে কিছুটা ছন্দপতন দেখা গেছে।
এবারের মন্ত্রিসভায় অনেকে নতুন। প্রশাসনে নতুন উদ্যম নিয়ে এসে তা আরো গতিশীল করে তুলতেই এধরনের পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। এজন্যে টানা তৃতীয়বার ও চতুর্থ মেয়াদে সরকার গঠনের এ মেয়াদে আগের মন্ত্রিসভায় থাকা অনেক প্রভাবশালী ও অভিজ্ঞ মন্ত্রী বাদ পড়েছেন। ২৪ জন পূর্ণমন্ত্রী, ১৯ জন প্রতিমন্ত্রী ও তিনজন উপমন্ত্রী এবার এ নতুন চ্যালেঞ্জ নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছেন। মন্ত্রীদের বেশির ভাগ প্রথমবারের মতো মন্ত্রী হয়েছেন। বিষয়টি মিশ্র প্রতিক্রিয়া রয়েছে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মূলত নতুনদের নিয়ে আগামী দিনের নেতৃত্ব তৈরির পাশাপাশি একটি পরিচ্ছন্ন মন্ত্রিসভা দিতে চেয়েছেন। লক্ষ্য করার মত বিষয় হচ্ছে কোনো রকম প্রচারণায় ডুবে না যেয়ে কর্মকর্তাদের কাছ থেকে কাজ আদায় করে নিচ্ছেন অনেক মন্ত্রী। দুর্নীতির বিরুদ্ধে নিজ মন্ত্রণালয় ও দফতরগুলোকে কড়া বার্তা দিয়েছেন। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে কাজ শেষ করার নির্দেশনা দিচ্ছেন।
গত ২১ জানুয়ারি নতুন মন্ত্রিসভার প্রথম বৈঠকেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দুর্নীতির বিরুদ্ধে কড়া ভাষায় হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, অর্থ, বিত্তবৈভব সবই করতে পারবেন। কিন্তু পচে যাবেন।
এরপাশাপাশি প্রধানমন্ত্রী মন্ত্রণালয়গুলো পরিদর্শন শুরু করেছেন। গত এক মাসে তিনি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় এবং স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয় পরিদর্শন করেন। এসময় তিনি মন্ত্রী, সচিবসহ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা দিয়েছেন।
প্রতিদিনের খবরগুলো আপনার ফেসবুক টাইমলাইনে পেতে নিচের লাইক অপশনে ক্লিক করুন-