লামায় তালাবদ্ধ করে এসএসসি পরীক্ষা গ্রহণ

মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম, লামা (বান্দরবান)

লামা (বান্দরবান) লামা আদর্শ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের তালাবদ্ধ প্রধান ফটক। ছবিটি শনিবার (২ জানুয়ারী) বেলা সাড়ে ১০টায় পরীক্ষা চলাকালীন সময়ে তোলা।

বান্দরবানের লামায় এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা গ্রহণে কেন্দ্রের প্রধান ফটকে তালা দিয়ে পরীক্ষা নেয়ার অভিযোগ উঠেছে। এছাড়া পরীক্ষা চলাকালীন সময়ে কেন্দ্রে গণমাধ্যমের কর্মীদের প্রবেশ করতে দেয়া হয়নি বলেও জানান একাধিক সাংবাদিকরা। সরেজমিনে লামা উপজেলা সদরের “লামা আদর্শ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ও চাম্বী উচ্চ বিদ্যালয়” কেন্দ্রে গিয়ে এই চিত্রের দেখা মিলে। বান্দরবান জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ দাউদুল ইসলাম বলেন, বিষয়টি আমি দেখছি।

কেন্দ্রে সাংবাদিকদের প্রবেশে কোন বাধা নেই বলে জানান, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড চট্টগ্রাম এর পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক মোহাম্মদ মাহাবুব হাসান। এদিকে লামা উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও কেন্দ্র কমিটির সভাপতি কর্তৃক কেন্দ্রে গণমাধ্যম কর্মীদের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞার বিষয়টি নিয়ে এলাকায় নিন্দার ঝড় উঠে।

সূত্র মতে, এসএসসি ও সমমান পরীক্ষা ২০১৯ এ এবার লামা উপজেলার ১৫টি মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও মাদ্রাসা হতে মোট ১৪২৩ জন পরীক্ষার্থী ৫টি কেন্দ্রে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে। শনিবার ১ম দিনের বাংলা পরীক্ষায় উপজেলায় ৩জন পরীক্ষার্থী অনুপস্থিত ছিল।

জানা যায়, ২০১৮ সালের এসএসসি পরীক্ষায় লামা উপজেলার মোট ১০২৩ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নেয়। এর মধ্যে ৫৩৩ জন কৃতকার্য হয়েছে, বাকী ৪৯০ জন ফেল করে। এসএসসি পরীক্ষায় পাশের হার ৬১.৮০ শতাংশ এবং ফেল ৩৮.২০ শতাংশ ছিল। কোন কোন বিদ্যালয়ে ৭৮ থেকে ৭১ শতাংশ শিক্ষার্থা ফেল করে। এতে করে চরম সমালোচনায় পড়ে মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও সংশ্লিষ্টরা। সেই সমালোচনা গুছিয়ে শতভাগ পাশের হার নিশ্চিত করতে কেন্দ্রে প্রধান ফটকে তালা দেয়া হয়েছে বলে ধারনা করেন কেন্দ্রের বাহিরে অপেক্ষামান অভিভাবকরা। এছাড়া তালাবদ্ধ করে পরীক্ষা নেয়ার আরো অন্য কারণ থাকতে পারে বলে তারা ধারনা করেন।

পরীক্ষা চলাকালীন সময় শনিবার (২ জানুয়ারী) বেলা সাড়ে ১০টায় লামা আদর্শ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে গেলে বাহিরের মূল ফটকে তালাবদ্ধ দেখা যায়। এসময় কেন্দ্রের ভিতরে অবস্থান করছিলেন লামা উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও কেন্দ্র কমিটির সভাপতি নূর-এ জান্নাত রুমি। ফটকে দায়িত্বরত গার্ডকে সাংবাদিকরা ভিতরে প্রবেশ করতে তালা খুলতে বললে তিনি বলেন আপনারা দাঁড়ান, আমি অনুমতি নিয়ে আসি। কিছুক্ষণ পরে গার্ড এসে বলেন, উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও কেন্দ্র সচিব এ.এম ইমতিয়াজ সাংবাদিকদের প্রবেশ করতে নিষেধ করেছেন। তালা খুলা যাবেনা। একই চিত্র ছিল চাম্বী উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে। কেন্দ্রে সাংবাদিকদের প্রবেশে বাধা দেয়া হলেও অনেক জনপ্রতিনিধিদের অবাধে পরীক্ষা কেন্দ্রে প্রবেশ করতে দেখা যায়।

এই বিষয়ে জানতে লামা আদর্শ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রের কেন্দ্র সচিব এ.এম ইমতিয়াজ এর মুঠোফোনে অসংখ্যবার ফোন করলেও তিনি কল রিসিভ না করায় তার বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।
লামা উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মোস্তাফিজুর রহমান ভূইয়া বলেন, সাংবাদিকের কেন্দ্রে প্রবেশের বিষয়টি সিদ্ধান্ত দিবেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার। কেন্দ্রের মূল ফটকে তালা কেন এমন প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, এই বিষয়টি কেন্দ্র সচিব ভাল বলতে পারবেন।

লামা উপজেলা নির্বাহী অফিসার নূর-এ জান্নাত রুমি বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, আমি নিষেধ করিনি।

আরও খবর