মাদকরাজ্য থেকে আতঙ্কের নগরী টেকনাফ

মুহিবুল্লাহ মুহিব :

মাদকরাজ্য হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে কক্সবাজারের সীমান্তবর্তী উপজেলা টেকনাফ। যা পরবর্তীতে মাদক কারবারীদের আস্তানায় পরিণত হয়। তবে সেই নগরী এখন মাদক কারবারীদের কাছে আতঙ্কের নাম।

বিশেষ করে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযান শুরুর পর ইয়াবা কারবারীরা স্বেচ্ছায় আত্মসমর্পণ শুরুর পর থেকে এই আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে। পাশাপাশি অন্যান্য ব্যবসায়ীরাও আতঙ্কে রয়েছে।

এদিকে, ইয়াবা কারবারীদের সম্পদ বাজেয়াপ্ত ও তাদেরকে আইনের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছেন বিশিষ্টজনরা। আত্মসমর্পণ করায় টেকনাফে ইয়াবার বিস্তার কমে আসছে বলে দাবি করছে প্রশাসন।

জানা গেছে, বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্ত রেখা নাফ নদী এখন অনেকটাই অরক্ষিত। কারণ বিজিবি, কোস্টগার্ড দায়িত্বে থাকলেও মিয়ানমার থেকে এই পথেই বাংলাদেশে আসছে ইয়াবা, বিদেশি মদ ও বিয়ার। তবে সরকার মাদকের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি ঘোষণার পর টেকনাফে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।

আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী সূত্রে জানা গেছে, অভিযানে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সাথে ‘বন্দুকযুদ্ধ’ ও নিজেদের মধ্যে গোলাগুলিতে গত তিন মাসে মারা গেছেন ৪৫ জন। এমন পরিস্থিতিতে আলোচনায় আসে ইয়াবা কারবারীদের আত্মসমর্পণ।

বিষয়টিকে ইতিবাচক হিসেবে দেখছেন স্থানীয়রা। চমক লাগানো অভিযানে প্রশংসায় ভাসছেন টেকনাফ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা প্রদীপকুমার দাশ। যোগদানের পাঁচ মাসের মধ্যে ইয়াবার দুর্নাম ঘোচার পথে টেকনাফ।

আরো জানা গেছে, গত এক বছরে কক্সবাজারে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযানে গ্রেফতার হয়েছে দুই হাজার ৩৭১ জন এবং উদ্ধার হয়েছে দেড় কোটিরও বেশি ইয়াবা, অস্ত্র ও গুলি। এসব ঘটনায় মামলা হয়েছে এক হাজার ৮২৪টি।

স্থানীয়রা জানান, কে বা কারা ইয়াবা ব্যবসায়ীদের বাড়িতে হামলা করছেন। তবে ব্যবসায়ীদের সম্পদ বাজেয়াপ্ত করা হলে ইয়াবার পাচার ও যুব সমাজের মধ্যে ইয়াবা সেবনের প্রবণতা কমবে।

পিপলস ফোরামের মুখপাত্র এইচএম নজরুল ইসলাম বলেন, ‘ইয়াবা ব্যবসা করে উপার্জিত সম্পদ বাজেয়াপ্ত করে সরকারি কোষাগারে জমা দেওয়া উচিত।’

কক্সবাজারের পুলিশ সুপার এবিএম মাসুদ হোসেন বলেন, ‘ইয়াবা ব্যবসার গডফাদারসহ জড়িতদের নামের তালিকা করা হয়েছে। আত্মসমর্পণ করার পর যদি তারা ব্যবসা ছেড়ে দেন তাহলেও অনেক অগ্রগতি।’

মাদকদ্রব্য অধিদপ্তর কক্সবাজারের সহকারী পরিচালক সোমেন মণ্ডল বলেন, ‘সীমান্ত এলাকায় অভিযান অব্যাহত রয়েছে। ইয়াবার বিস্তার রোধে টেকনাফে গোয়েন্দা নজরদারিও বাড়ানো হয়েছে।’

র‌্যাব-৭ কক্সবাজার ক্যাম্পের কোম্পানি কমান্ডার মেজর মেহেদী হাসান বলেন, ‘প্রতিদিনই কোনো না কোনো এলাকায় তল্লাশি করে ইয়াবা আটক করা হচ্ছে।

/বার্তা২৪

আরও খবর