জড়িত শীর্ষ গডফাদার ও রোহিঙ্গা নেতারা

মাদকের নিরাপদ স্থান রোহিঙ্গা ক্যাম্প

কক্সবাজার জার্নাল ডটকম :

উখিয়া-টেকনাফের শীর্ষ ইয়াবা ও মাদককারবারীরা নিরাপদ স্থান হিসেবে চিহ্নিত করেছে রোহিঙ্গা ক্যাম্প গুলোকে। প্রশাসনের চোঁখ ফাঁকি দিয়ে সীমান্তের কাটা তারের বেড়া পার করে নিয়ে আসছে প্রতিদিন কোটি কোটি টাকার ইয়াবা ও মাদক। শীর্ষস্থানীয় ইয়াবা ও মাদক পাচারকারী সিন্ডিকেট কৌশল পাল্টিয়ে রোহিঙ্গা নেতাদের ব্যবহার করে চালিয়ে যাচ্ছে তাদের ব্যবসা। মাদকের বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত থাকলেও রোধ হচ্ছেনা ইয়াবা ও মাদক পাচার। যার ফলে দেশের বিভিন্ন স্থানে প্রতিদিন ধরা পড়ছে ইয়াবা ও মাদকসহ পাচারকারী সিন্ডিকেটের সদস্যরা।

জেলা উখিয়া-টেকনাফ রোহিঙ্গা অধ্যুষিত এলাকায় ইয়াবাসহ স্থানীয়দের পাশাপাশি শরণার্থীদের আটকের সংখ্যাও দিন দিন বেড়ে চলেছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সূত্রে জানা গেছে, মিয়ানমার থেকে ইয়াবা এনে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে পৌঁছে দিচ্ছে রোহিঙ্গা নারী, কিশোর ও পুরুষরা। জেলা গোয়েন্দা পুলিশের তৈরি করা ইয়াবা কারবারিদের তালিকায়ও রয়েছে ১৩ জন নেতৃস্থানীয় রোহিঙ্গা শরণার্থীর নাম। তবে এই তালিকায় স্থানীয় মাদক ব্যবসায়ীর সংখ্যাই বেশি। এদিকে রোহিঙ্গা নেতাদের দাবি, ইয়াবা গডফাদারদের অধিকাংশ স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের ঘনিষ্ট বা তাদের স্বজন।
জানা গেছে, উখিয়া-টেকনাফ রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরগুলোতে দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে মাদক বিক্রি ও সেবনের আখড়া। ইয়াবা মজুতের জন্যও ব্যবহৃত হচ্ছে জনবহুল ওই ক্যাম্পগুলো। এমনকি অনেক ইয়াবা কারবারিও সেখানে আশ্রয় নিচ্ছে। এভাবেই উখিয়া ও টেকনাফ রোহিঙ্গা শরণার্থী ক্যাম্পে ইয়াবা ব্যবসা ও পাচার বেড়ে চলছে। উখিয়া-টেকনাফের শতাধিক রোহিঙ্গা ইয়াবা পাচারকারী নাম গোয়েন্দার হাতে রয়েছে বলে রোহিঙ্গা নেতা জানিয়েছেন।

উখিয়া উপজেলার পালংখালী ইউনিয়নের চিহ্নিত কয়েকজন ইয়াবা ব্যবসায়ী নিরাপদ স্থান হিসেবে এখন ব্যবহার করছেন শফিউল্লাহকাটা রোহিঙ্গা ক্যাম্পকে। একই ভাবে থাইংখালী, বালুখালী, কুতুপালং এলাকার বেশ কয়েকজন শীর্ষ গডফাদার অবস্থান করছে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে। প্রশাসনের নজরদারী এড়াতে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে তাদের এই অবস্থান বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
কুতুপালং ক্যাম্পের এক রোহিঙ্গা জানান, রোহিঙ্গাদের অভাব-অনটনের সুযোগকে কাজে লাগিয়ে স্থানীয় শীর্ষ ইয়াবা ও মাদককারবারীরা রোহিঙ্গাদের নারী,পুরুষদের এমন কাজে নিয়োজিত করছে। এমনকি চলতি বছরের এ পর্যন্ত কক্সবাজারে পুলিশ, র‌্যাব ও বিজিবির সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহতের মধ্যে ৪জনই রোহিঙ্গা বলে জানিয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।

থাইংখালী তাজনিমারখোলা রোহিঙ্গা ক্যাম্প নেতা মোঃ আলম ‘এক সময় অভাবে পড়ে রোহিঙ্গারা ইয়াবা পাচারে জড়িয়ে পড়েছিল এই কথা সত্য। বিশেষ করে স্থানীয় প্রভাবশালীরা রোহিঙ্গাদের অসহায়ত্বের সুযোগ নিয়ে এ কাজে তাদের ব্যবহার করেছে। তবে অনেক রোহিঙ্গা এখন খুচরা ইয়াবা ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে এমন অভিযোগ রয়েছে’
উখিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ আবুল খায়ের গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, ‘চলতি মাসে ১৫ জনের মতো রোহিঙ্গা শরণার্থীকে আটক করেছে পুলিশ। রোহিঙ্গারা আসার পর থেকে ইয়াবা পাচার বেড়েছে। কিছু স্থানীয় মাদক ব্যবসায়ী রোহিঙ্গাদের এ কাজে জড়াতে সহায়তা করছে, এমন তথ্য আমরাও পেয়েছি। তবে এখন অনেক রোহিঙ্গা এই ইয়াবা ব্যবসা জড়িয়ে পরেছেন। তাদের ধরতে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।’

আরও খবর