জাগো ডেস্ক – প্রায় দশ বছর আগে আরাকানের (রাখাইন) আদিবাসী বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী ২৬ তরুণকে নিয়ে গঠিত হয়েছিল বিচ্ছিন্নতাবাদী বিদ্রোহী গোষ্ঠী ‘আরাকান আর্মি’। বর্তমানে এই গোষ্ঠীর সদস্য সংখ্যা সাত হাজারেরও বেশি। রাখাইনের স্বাধীনতার দাবিতে দীর্ঘদিন ধরে সশস্ত্র আন্দোলন করে আসা আরাকান আর্মি (এএ) রাখাইন রাজ্যে অনেকাংশে কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করতে সক্ষমও হয়েছে।
সম্প্রতি রাখাইনের বুথিডংয়ে পুলিশের চারটি তল্লাশি চৌকিতে হামলা চালায় আরাকান আর্মির কয়েকশ’ সদস্য। ওই অঞ্চলে সেনা মোতায়েন বৃদ্ধি এবং আকাশ থেকে আরাকান আর্মিকে লক্ষ্য করে হামলা চালানোর প্রেক্ষিতে পাল্টা আক্রমণ করা হয়েছে বলে দাবি আরাকান আর্মির। হামলায় পুলিশের ১৩ সদস্য নিহত হন। এছাড়া আরাকান আর্মি ১৮ পুলিশ সদস্য ও তাদের পরিবারকে অপহরণ করে। পরে অবশ্য পরিবারসহ ওই পুলিশ সদস্যদের ছেড়েও দেয় তারা।
২০১৭ সালের আগস্টে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে সেনাবাহিনীর কঠোর অভিযান শুরু হলে জীবন বাঁচাতে বাংলাদেশে পালিয়ে আসতে বাধ্য হয় সাড়ে সাত লাখেরও বেশি সংখ্যালঘু রোহিঙ্গা মুসলিম। দেশটির সেনাবাহিনীর এমন বর্বরোচিত অভিযানের নিন্দা জানায় জাতিসংঘ, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্যসহ আন্তর্জাতিক বেশ কিছু সংগঠন। জাতিসংঘের পাশাপাশি বিভিন্ন আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা মিয়ানমার সেনাবাহিনীর অভিযানকে ‘জাতিগত নিধনযজ্ঞ’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছে।
রোহিঙ্গাদের ওপর সেনাবাহিনীর হত্যা-ধর্ষণ-নির্যাতনের কারণে বিশ্বব্যাপী সমালোচিত হয় মিয়ানমার ও দেশটির নোবেলজয়ী নেত্রী অং সান সু চি। অবশ্য মিয়ানমারের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়, আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মি (আরসা) নিরাপত্তা বাহিনীর বেশ কয়েকটি তল্লাসী চৌকিতে হামলার পর ওই অভিযান শুরু করে সেনাবাহিনী।
২০০৮ সালে মিয়ানমারের কাচিন রাজ্যের লাইজাতে অপর বিদ্রোহীগোষ্ঠী কাচিন ইন্ডিপেনডেন্স আর্মির (কেআইএ) সহায়তায় আরাকান আর্মি প্রতিষ্ঠিত হয়। ২০১৪ সালে প্রকাশ্যে আরাকান আর্মি জানায়, রাখাইন রাজ্যকে মাতৃভূমি হিসেবে ফেরত পাওয়াই তাদের লক্ষ্য। ২০১৬ সালের শেষের দিক থেকে শান রাজ্যে উত্তরাঞ্চলীয় জোটের অংশ হিসেবে সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে কাচিনদের পাশাপাশি লড়াইয়ে নামে আরাকান আর্মির সদস্যরা। এখন মনে হচ্ছে, পৃথক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে সশস্ত্র এই গোষ্ঠীটি তাদের স্বপ্ন পূরণের পথে অনেকদূর এগিয়েছে।
দেশটির জাতিগত সংঘাতের বিভিন্ন ঘটনা বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, আরাকান আর্মির আনুমানিক তিন হাজার সদস্য দেশটির চিন রাজ্যের পালেতোয়া এবং রাখাইন রাজ্যের কাইয়ুকতা, বুথিডং, রাথেডং ও পনিয়াগুনে তাদের ঘাঁটি করেছে।
তবে প্রশ্ন হচ্ছে আরাকান আর্মির প্রায় সাত হাজার সদস্যের অর্থায়ন আসে কোথায় থেকে? আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন হলো; প্রতিষ্ঠার অল্পদিনের মাথায় সশস্ত্র এ সংগঠনটি কীভাবে তাদের সামরিক অভিযান পরিচালনা করে। কেননা এখনও মিয়ানমারের কোনো অঞ্চল তারা নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নিতে পারেনি।
এসব ঘটনার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র বলছে, আরাকান আর্মির অস্ত্র ও গোলাবারুদের যোগানদাতা হলো তাদের পরামর্শক হিসেবে পরিচিত কাচিন ইন্ডিপেন্ডেন্স আর্মি (কেআইএ) ও তাদের মিত্র ইউনাইটেড ওয়া স্টেট আর্মি (ইউডব্লিউএসএ)। তারা অস্ত্র-গোলাবারুদ কিনছে থাইল্যান্ড-মিয়ানমার সীমান্তের কালোবাজারিদের কাছ থেকে।
এসব অস্ত্র ও গোলাবারুদ কাচিন ইন্ডিপেন্ডেন্স আর্মি (কেআইএ) ও ইউনাইটেড ওয়া স্টেট আর্মি (ইউডব্লিউএসএ) দেশীয়ভাবে তৈরি করে। চীনে তৈরি অস্ত্রও তাদের কাছে আসে। আরাকান আর্মির অস্ত্রভাণ্ডারে যুক্তরাষ্ট্রে তৈরি এম-৬০ মেশিনগানও রয়েছে। দেশটির কালোবাজারে যার মূল্য আনুমানিক দশ হাজার ডলার।
আরাকান আর্মির কাছে রয়েছে ব্যারেট এমআরএডি স্নাইপার রাইফেলস। থাইল্যান্ড-মিয়ানমার সীমান্তের কালো বাজারে যার মূল্য দশ হাজার ডলার। তবে উল্লেখ করার মতো বিষয় হলো, এ ধরনের স্নাইপার রাইফেল ব্যবহার করে ইসরায়েল সীমান্তরক্ষী বাহিনী এবং নরওয়ে ও নেদারল্যান্ডসের সশস্ত্র বাহিনী।
ধারণা করা হয়, ২০১৫ সালে মিয়ানমার সেনাবাহিনী ও আরাকান আর্মির মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হওয়ার পর নিরাপত্তা বাহিনীর উল্লেখযোগ্যসংখ্যক সদস্যের মৃত্যু হয়েছে এই স্নাইপার রাইফেলের গুলিতে। ভারত-মিয়ানমার সীমান্তের কুকি বিদ্রোহীদের কাছ থেকেও এসব অস্ত্র ক্রয় করে আরাকান আর্মি।
আরাকান আর্মির ভান্ডারে উন্নত অস্ত্রশস্ত্র ছাড়াও সদস্যদের জন্য বেশ ভালো পোশাক এবং যথেষ্ট খাবার ও রেশনের ব্যবস্থা রয়েছে। আরাকান আর্মির পরিবারের সদস্যদের জীবন ধারণ ও স্বাস্থ্য সংক্রান্ত ব্যয় নির্বাহ করা হয় সংগঠনটির পক্ষ থেকে। পরিবারের অন্য সদস্যদের শিক্ষার জন্য আর্থিক সাহায্যেরও যোগান দেয় আরাকান আর্মি।
আরাকান আর্মিতে যারা যোগ দিতে চায় তাদের পরিবহন খরচ নির্বাহ করা হয় সংগঠনটির পক্ষ থেকে। যদিও এই বিদ্রোহী গোষ্ঠীর বেশিরভাগ অর্থায়ন আসে তাদের সমর্থকদের কাছ থেকে। কিন্তু মিয়ানমার সেনাবাহিনী অভিযোগ করে আসছে সশস্ত্র এই সংগঠনটি মাদক চোরাচালানের সঙ্গে জড়িত। আর তাদের বেশিরভাগ অর্থের যোগান হয় অবৈধ পথে।
আরকান আর্মির অর্থের উৎস কী?
গত ৯ বছরে আরাকান আর্মি রাখাইনে বেশ শক্তিশালী হয়ে উঠেছে। তারা বিভিন্ন খাতে প্রচুর অর্থ ব্যয় করে থাকে। কিন্তু এত বছর ধরে আরাকান আর্মি যে টিকে আছে সেই অর্থ আসে কোথায় থেকে এমন প্রশ্ন সবার। রাখাইনের অনেক মানুষ কাজের উদ্দেশে দেশটির বিভিন্ন অঞ্চলে যান; মূলত তারাই আরাকান আর্মির নিয়মিত অর্থের যোগানদাতা।
পাশাপাশি রাখাইনের কিছু স্বচ্ছল মানুষ নির্ধারিত হারে মোটা অংকের চাঁদা দেয় আরাকান আর্মিকে। স্থানীয় সূত্রগুলো বলছে, একজন বিত্তবান দাতা সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে সামরিক অভিযানের জন্য এক কোটিরও বেশি কিয়াট (স্থানীয় মুদ্রা) আরাকান আর্মিকে দেন।
২০১৭ সালে মিয়ানমার সেনাবাহিনী চিন প্রদেশের পেলেতোয়াতে আরাকান আর্মির সদস্যদের লক্ষ্য করে বিমান হামলা চালায়। সেই সময় রাখাইনের কিছু বিত্তবান মানুষ বিমান বিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্র কেনার জন্য অর্থ সহায়তা দেয় আরাকান আর্মিকে। এমন তথ্য জানিয়েছেন আরাকান আর্মির প্রধান মেজর জেনারেল তুন মিয়াত নায়িং।
মিয়ানমারের প্রেসিডেন্টের কার্যালয়ের মুখপাত্র জ্য হতেই বলছেন, আরাকান আর্মির প্রতি মানুষের সমর্থন এতো প্রকট আকার ধারণ করেছে যে, তাদের সমর্থকদের উচিত এসব সশস্ত্র কার্যক্রমে অর্থায়ন বন্ধ করা। তিনি বলেন, ‘আমি আরাকান আর্মির সমর্থকদের বলতে চাই যে আপনাদের ভাবতে হবে, তারা কী সত্যিই রাখাইন রাজ্যকে আরও ভালো অবস্থানে নিয়ে যেতে পারবে। আমি স্পষ্টভাবে বলবো, আপনারা তাদের সমর্থন দেয়া বন্ধ করুন।’
মিয়ানমারের প্রেসিডেন্টের কার্যালয়ের মুখপাত্র জ্য হতেইর মতে, মিয়ানমার সরকার ও সেনাবাহিনী বিশ্বাস করে আরাকান আর্মি মূলত তাদের অর্থ সংগ্রহ করে মাদক চোরাচালানের মাধ্যমে। তবে আরাকান আর্মির তথ্য বিষয়ক কর্মকর্তা খিনে থু খা এই অভিযোগ অস্বীকার করেন।
২০১৭ সালে জাতিসংঘের সাবেক মহাসচিব কফি আনানের নেতৃত্বাধীন রাখাইন স্টেট অ্যাডভাইজরি কমিশনের দেয়া এক প্রতিবেদনেও জানানো হয়, আরাকান আর্মি মাদক চোরাচালানের সঙ্গে জড়িত।
কেন রাখাইনের মানুষের কাছে জনপ্রিয় আরাকান আর্মি?
১৯৬২ সাল থেকেই রাখাইনে স্থানীয়দের প্রতিনিধিত্বকারী কিছু শক্তিশালী সংগঠন গড়ে উঠতে শুরু করে। অল্প কিছু সদস্য নিয়ে গঠিত আরাকান লিবারেশন পার্টি ও তাদের সশস্ত্র শাখা আরাকান লিবারেশন আর্মি প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল আরাকান আর্মিরও আগে। কিন্তু তারা রাখাইনের মানুষের কাছে যথেষ্ট সমর্থন লাভ করতে ব্যর্থ হয়।
তবে প্রতিষ্ঠার পর রাখাইনের মানুষের কাছে ব্যাপক সমর্থনের মাধ্যমে জনপ্রিয় হয়ে ওঠে আরাকান আর্মি। আর রাখাইনের মানুষের কাছে এমন সমর্থন পেয়ে রাখাইন রাজ্যে তাদের পূর্ববর্তী স্বাধীন রাজত্ব পুনরায় প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন দেখতে শুরু করে।
রাখাইনের প্রভাবশালী রাজনৈতিক নেতা ডা. আয়ে মং বর্তমানে রাজনৈতিক প্রতারণার শিকার হয়ে বিচারাধীন রয়েছেন। ২০১৬ সালে তিনি বলেন, আরাকান আর্মির একজন সক্রিয় সমর্থক তিনি। আয়ে মং আরও বলেন, আরাকান আর্মির প্রধান মেজর জেনারেল তুন মিয়াত নায়িং রাখাইন রাজ্যের ভবিষ্যৎ নির্মাতাদের একজন।
সমস্ত রকম তর্কের ঊর্ধ্বে একটা কথা হলো, আরাকান আর্মি রাখাইনের মানুষের মন ও সমর্থন দুটোই জয় করেছে। এমনও দেখা গেছে যে, রাখাইনে অনেক বাবা-মা তাদের সন্তানদের আরাকান আর্মিতে যোগ দেয়ার ব্যাপারে উৎসাহ প্রদান করছেন। এছাড়া রাখাইনের বেশিরভাগ সাধারণ নাগরিক ও রাজনৈতিক নেতারা আরাকান আর্মিকে মেনে নিয়েছে তাদের নিজেদের অধিকারের কথা চিন্তা করে।
আরাকান আর্মি কেন সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধে লিপ্ত?
কাচিন রাজ্যের লাইজাতে বিদ্রোহী গোষ্ঠী কেআইএর সহায়তায় প্রতিষ্ঠার পর থেকে আরাকান আর্মি তাদের কাছ থেকে শিক্ষা নিয়ে সে অনুযায়ী পরিকল্পনা সাজায়। তারা অন্যান্য সশস্ত্র বাহিনীর মতো বৃহত্তর স্বায়ত্তশাসন ও নিজেদের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য আন্দোলনে নেমেছে।
আরাকান আর্মির নেতারা রাখাইন রাজ্যে পুরোমাত্রায় বিপ্লব শুরু করেনি। তবে ২০১৪ সাল থেকে তারা মাতৃভূমি ফেরত পাওয়ার পরিকল্পনা করছে। যদিও মিয়ানমার সরকার আরাকান আর্মিকে শান্তি আলোচনার আহ্বান জানিয়েছে। কিন্তু মিয়ানমার সেনাবাহিনী দীর্ঘদিন ধরে নানা অজুহাতে তাদের সঙ্গে আলোচনায় বসতে অস্বীকৃতি জানিয়ে আসছে।
২০০৮ সালে প্রতিষ্ঠিত হলেও আরাকান আর্মি তাদের নিজস্ব সংবিধান তৈরি করেছে। অনেক সশস্ত্র গোষ্ঠী দেশটির স্বাধীনতার সময়ে প্রতিষ্ঠিত হলেও তা করতে পারেনি। সেনাবাহিনীর বেশ কিছু কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, আরাকান আর্মির সঙ্গে আলোচনা করার মতো কোনো অবস্থান নেই। কেননা এটি সাম্প্রতিক সময়ে গঠিত হয়েছে।
মিয়ানমার সেনাবাহিনীর এক মুখপাত্র বলেন, তারা আরাকান আর্মির সঙ্গে কোনো ধরনের শান্তি আলোচনায় বসবেন না। কেননা ২০১৫ সালে গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত একটি সরকার গঠনের পরপরই তারা হামলা চালানো শুরু করে।
গত বছরের ২১ ডিসেম্বর সামরিক পাঁচটি অঞ্চলে আগামী চারমাস একপাক্ষিক যুদ্ধবিরতির ঘোষণা দেয় মিয়ানমার সেনাবাহিনী। সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে জানানো হয়, তারা এই যুদ্ধবিরতি চলাকালীন জাতীয় যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে স্বাক্ষর না করাদের সঙ্গে শান্তি আলোচনায় বসবে।
তবে সেনাবাহিনীর এমন ঘোষণায় বাদ থাকে রাখাইন রাজ্য। এজন্য সমালোচিতও হয় সেনাবাহিনী। রাখাইন রাজ্যের দায়িত্বে আছে মিয়ানমার সেনাবহিনীর পশ্চিমাঞ্চলীয় কমান্ড। সেনা কর্মকর্তারা বলছেন, রাখাইন রাজ্যকে যুদ্ধবিরতি ঘোষণার বাইরে রাখায় আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মি (আরসা) হামলার হুমকি দিচ্ছে।
আরাকান আর্মির তথ্য কর্মকর্তা খিন থু খা বলেন, যদি সেনাবাহিনীর সদিচ্ছা থাকতো, তাহলে তারা রাখাইনকেও যুদ্ধবিরতির মধ্যে রাখতেন। কেননা এখানে আরকান আর্মির সঙ্গে সামরিক উত্তেজনা এখন সবচেয়ে বেশি। একইসঙ্গে যেসব অঞ্চলে আরসা সক্রিয় সেসব অঞ্চলকেও যুদ্ধবিরতির বাইরে রাখা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, সেনাবাহিনী রাখাইন রাজ্যকে যুদ্ধবিরতির বাইরে রেখেছে। কারণ এখানে তারা আরাকান আর্মির বিরুদ্ধে বেশ রকমের সামরিক অভিযান ও হামলা চালাতে চায়। ঠিক এই সময়ে তারা উত্তর মিয়ানমারে সামরিক অভিযান বন্ধ রেখেছে।
আরসার চেয়ে শক্তিশালী ও দুর্ধর্ষ হয়ে ওঠা আরাকান আর্মিকে নিয়ে বেশ শঙ্কিত মিয়ানমার সেনাবাহনী। মিয়ানমারের সবচেয়ে বড় হুমকি বিবেচনা করে আরাকান আর্মির বিরুদ্ধে অভিযানে নেমেছে তারা। দেশটির প্রেসিডেন্টের কার্যালয় থেকে আরাকান আর্মির বিরুদ্ধে সামরিক অভিযান চালাতে সেনাবহিনীকে স্পষ্ট নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
তবে সরকারের এমন নীতির কারণে ফের রাখাইনে সংঘর্ষ-সংঘাত বাড়ছে। অনেক মানুষ ঘর ছেড়ে পালিয়েছেন। জাতিসংঘের তথ্য বলছে, সম্প্রতি রাখাইনে শুরু হওয়া সংঘর্ষে বাস্তুহারা হয়েছে পাঁচ হাজারেরও বেশি মানুষ। তবে শেষ পর্যন্ত মিয়ানমার সেনাবাহিনী ও আরাকান আর্মির এই যুদ্ধ কোথায় গিয়ে দাঁড়ায় সেটাই এখন দেখার বিষয়।
##মিয়ানমারের ইংরেজি দৈনিক দ্য ইরাবতির বিশ্লেষণী প্রতিবেদন অবলম্বনে।
প্রতিদিনের খবরগুলো আপনার ফেসবুক টাইমলাইনে পেতে নিচের লাইক অপশনে ক্লিক করুন-