রাখাইনে সেনাবাহিনী ও আরাকান আর্মির বন্দুকযুদ্ধ, রোহিঙ্গাসহ নিহত তিন

ডেস্ক রিপোর্ট – মিয়ানমার সেনাবাহিনী ও আরাকান আর্মির মধ্যে বন্দুকযুদ্ধ চলাকালে তিন ব্যক্তি প্রাণ হারিয়েছে। রবিবার (১৩ জানুয়ারি) রাখাইনের বুথিয়াডং এলাকায় দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। সোমবার (১৪ জানুয়ারি) সকালে তাদের মরদেহ উদ্ধার করা হয়ে।  স্থানীয়রা মিয়ানমারের সংবাদমাধ্যম ইরাবতীকে জানিয়েছে, নিহতদের একজন রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ভুক্ত। বাকী দুইজন আরাকান সম্প্রদায়ের হলেও তিনজনই ছিলেন নিরস্ত্র।

২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট রাখাইনের কয়েকটি নিরাপত্তা চৌকিতে হামলার পর পূর্ব-পরিকল্পিত ও কাঠামোবদ্ধ সহিংসতা জোরালো করে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী। হত্যা-ধর্ষণসহ বিভিন্ন ধারার সহিংসতা ও নিপীড়ন থেকে বাঁচতে বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর প্রায় ৭ লাখ মানুষ। গত ৪ জানুয়ারি রাখাইনে সীমান্ত চৌকিতে আরাকান আর্মির সদস্যদের হামলায় ১৩ পুলিশ কর্মকর্তা নিহত হওয়ার পর থেকে ওই এলাকার পরিস্থিতি নতুন করে উত্তপ্ত রয়েছে। প্রায়শই মিয়ানমার সেনাবাহিনীর সঙ্গে বিদ্রোহীদের সংঘর্ষ চলছে। এরই ধারাবাহিকতায় রবিবার বুথিয়াডং এলাকায় দুই পক্ষের মধ্যে বন্দুকযুদ্ধ হয়।

রাখাইনের বুথিয়াডং গ্রামে প্রায় ৮ হাজার রোহিঙ্গার বসবাস। আরাকান  সম্প্রদায়ভুক্তরাও রয়েছে সেখানে। হোপোন নিয়ো লিক এলাকার বাসিন্দা নুরুল ইসলাম সোমবার দুপুরে ইরাবতীকে জানিয়েছেন, সোমবার (১৪ জানুয়ারি)  সকালে গ্রামবাসী তিন মরদেহ উদ্ধার করে। রবিবার (১৩ জানুয়ারি) যে এলাকায় মিয়ানমার সেনাবাহিনী ও আরাকান আর্মির মধ্যে বন্দুকযুদ্ধ হয়েছিল, মরদেহগুলো সেখানেই পাওয়া গিয়েছিল। নিয়ো লিক জানিয়েছেন, গুলিবিদ্ধ হয়ে ওই তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের ১৯ বছর বয়সী একজন তরুণ রয়েছে। বাকিরা রাখাইন সম্প্রদায়ভুক্ত বলে ধারণা গ্রামবাসীর।

নিহতদের শেষকৃত্যের আয়োজন করতে চেয়েছিল গ্রামের মানুষেরা। তবে সোমবার দুপুরে সেনাবাহিনী মরদেহগুলো তাদের হেফাজতে দেওয়ার নির্দেশ দেয়। পরে রোহিঙ্গা তরুণের মরদেহ ফেরত দেয় সেনাবাহিনী। নুরুল ইসলাম জানান, নিহত দুই আরাকানির প্রত্যেকের কাঁধেই একটি করে ব্যাগ ছিল। তবে তাদের কাছ থেকে কোনও ধরনের গোলাবারুদ পাওয়া যায়নি।

একই গ্রামের রাখাইন সম্প্রদায়ভুক্ত বাসিন্দা নাম প্রকাশ না করে দাবি করেন, কয়েকজন বেসামরিক নিহত হয়েছে। গ্রামবাসী কয়েকটি মরদেহ পেয়েছে। তিনি জানান, রবিবার (১৩ জানুয়ারি) আরাকান আর্মির সঙ্গে সেনাবাহিনীর সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ার পর ওইদিন বিভিন্ন গ্রাম থেকে রাখাইন সম্প্রদায়ভুক্ত ১৫ ব্যক্তিকে আটক করা হয়। এর মধ্যে ১৩ জনকে মঙ্গলবার (১৫ জানুয়ারি) বুথিয়াডং ভিত্তিক সীমান্ত পুলিশ সদর দফতর থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। নিয়ো লিকেরই পার্শ্ববর্তী গ্রাম থা ইয়েত পিয়িন গ্রামের এক বাসিন্দাসহ এক প্রশাসনিক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে বেআইনি সমাবেশের আইনে  মামলা দায়ের করা হয়েছে। 

আরও খবর